২০১৫-র সঙ্গে ২০২২-এর তেমন ফারাক রইল না, হিংসাশ্রয়ী ভোটের নিদর্শনই রাখল বাংলা
২০১৫-র সঙ্গে ২০২২-এর তেমন ফারাক রইল না। সেই একই চিত্র দেখা গেল এবার পুরভোটেও। চার পুর নিগমের ভোট ছিল শনিবার। সকাল থেকেই দেখা গেল বিক্ষিপ্ত অশান্তি। দুপুর গড়াতেই সেই হিংসা, ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠল।
২০১৫-র সঙ্গে ২০২২-এর তেমন ফারাক রইল না। সেই একই চিত্র দেখা গেল এবার পুরভোটেও। চার পুর নিগমের ভোট ছিল শনিবার। সকাল থেকেই দেখা গেল বিক্ষিপ্ত অশান্তি। দুপুর গড়াতেই সেই হিংসা, ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠল। এই ভোট থেকেই আভাস মিলল ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি পুরসভার ভোট কীরূপ হতে পারে!
শনিবার চার পুরনিগমের ভোটে যত সময় গড়িয়েছে, ততই হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বাংলার ভোটে সেই গুলির শব্দ, বোমাবাজি। চিরচারিত সেই ঘটনাবলী থেকে বেরোতে পারল না বাংলা। বাংলার ভোটে ফের রক্ত ঝরল। মাথা ফাটল প্রার্থীর। তারপর ভুয়ো ভোটার, মারামারি, প্রার্থীদের হাতাহাতি-সেই এক রোগ ধরা পড়ল এবারও।
বাংলার ভোট চিত্রে কোনও বদল নেই। বারবার একই চিত্র প্রতিটি ভোটে। বিশেষ করে পুরভোট বা পঞ্চায়েতে বাংলার ভোট মানেই হিংসা। বাংলা এই কাজে আবারও বিহার-উত্তরপ্রদেশকেও হার মানাল। তা থেকেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শনিবারের ভোটপর্ব যদি ট্রেলার হয় তাহলে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮ পুরসভার ভোটে কী কী হবে তা এখনই আন্দাজ করা যায়।
রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোটে সবথেকে বেশি হিংসা দেখা গেল আসানসোলে। করোনার জেরে বিলম্বে হচ্ছে পুরনিগমের ভোট। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও যত সময় গড়িয়েছে, ততই হিংসাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে নির্বাচন। তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি তো ছিলই। দুই প্রার্থীকেও দেখা গেল পরস্পরের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে। কৈখালী এলাকায় তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ হয়। বহিরাগত এনে ভোট করানোর অভিযোগ ওঠে। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থী হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
আসানসোলের জামুড়িয়ায় গুলি চলে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি বুথ দখল করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় সিপিএমের প্রার্থী অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের দিকে। আবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী আদর্শ শর্মাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বার্নপুরে ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতে সিপিএমের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আসানসোলের ৮৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভুয়ো ভোটার ধরা পড়েন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। জিতেন্দ্রকে ঘিরে গো-ব্যাক স্লোগান ওঠে একটি বুথে।
প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসকদলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ বাংলার ভোটে ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় নির্বাচন মানেই সন্ত্রাস, ভোটলুঠ। সেই ছবি এবারও দেখা গেল। নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি যে ফসকে গেরো তা যত সময় গেল, ততই স্পষ্ট হয়ে যাবে।