মুকুলের বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন বিজেপির প্রাক্তনী, বিদ্রোহের আঁচেও মুখে কুলুপ নেতৃত্বের
রাজনীতির আড়ালে তোলাবাজি করতেন মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে ছেলে শুভ্রাংশুও এই তোলাবাজি শিল্পের দোসর। চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বিজেপির প্রাক্তন নেত্রী আলোরানি সরকারের।
দল সমস্ত পদ থেকে অব্যহতি নেওয়ার পরই মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী আলোরানি সরকার। তাঁর পরিচ্ছন্ন অভিযোগ, রাজনীতির আড়ালে তোলাবাজি করতেন মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে ছেলে শুভ্রাংশুও এই তোলাবাজি শিল্পের দোসর। চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বিজেপির প্রাক্তন নেত্রী আলোরানি সরকারের দাবি, তিনি নিজে ভুক্তভোগী হয়েছিলেন এই তোলাবাজির।
[আরও পড়ুন:সুন্দরবনে সি প্লেন! বিশ্ব-বাণিজ্যের মঞ্চে পর্যটনে নয়া দিগন্তের সূচনায় স্পাইস জেট]
উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরের আলোরানি সরকার এখন আর বিজেপির নেত্রী নন। তিনি এখন নিজেকে একজন বিজেপির সাধারণ সদস্য হিসেবেই দাবি করেন। সেই সদস্যপদও তিনি যে কোনও দিন ছেড়ে দিতে পারেন। তবে এখনও তিনি দেশের ১১ কোটি বিজেপি সদস্যের মধ্যে একজন। সেখানে দাঁড়িয়ে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছাড়ার পর এদিন একেবারে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আলোদেবী।
তাঁর দাবি, 'তখনও আমি রাজনীতিতে আসিনি। আমি একজন সাধারণ তৃণমূল সমর্থক ছিলাম। সেই আমি বাদ যায়নি মুকুল রায়ের তোলাবাজির কবল থেকে। আমার কাছে ১৮ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। তারপরই আমি সিদ্ধান্ত নিই- এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া দরকার। রাজনীতির আঙিনায় আসা সেই লক্ষ্যেই।'
তিনি বলেন, 'বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তারপরই নিই। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে লড়াই করি সেই অন্যায়ের জবাব দিতেই। কিন্তু এখন আবার সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট উল্টে গিয়েছে। যাঁর বিরুদ্ধে লড়াই, যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই, তাঁদের সঙ্গে একাসনে বসে রাজনীতি করব কী করে! তাই পুরনো দলে থাকা আর আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখনও স্থির করিনি।'
[আরও পড়ুন:শিল্প ও কৃষি দুই বোনের মতো বাড়বে বাংলায়, বাণিজ্য সম্মেলনে বার্তা মমতার]
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, 'অনেক দলেরই প্রস্তাব রয়েছে। ভেবে দেখি কী করা যায়।' তবে তিনি আভাস দিয়েছেন, 'বীজপুরের রাজনৈতিক ছবিটাই আমূল বদলে যেতে পারে ভবিষ্যতে। আলোদেবী জানিয়েছেন, সাধারণ বীজপুরবাসীর পাশে থাকতে তিনি অন্য রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় আসতেই পারেন। তবে সেখানে আত্ম মর্যাদা অবশ্যই থাকতে হবে।'
এদিকে প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী আলোরানি সরকারের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পর অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপি শিবিরে। মুকুল রায় যেমন এ ব্যাপারে স্পিকটি নট, বিজেপি নেতৃত্বও মুখে কুলুপ এঁটেছে। দিনের পর দিন মুকুলের বিরুদ্ধে একটার পর একটা তোপ দেগে কার্যত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে লড়াই করা এই বিজেপি প্রার্থী।
বিজেপি মহিলা মোর্চার সহ সভাপতি ছিলেন। দলের সমস্ত পদ থেকে অব্যহতি দেওয়ার আগে ছিলেন নবদ্বীপের পর্যবেক্ষক। এখন সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিয়ে তিনি স্রেফ দলের সদস্য। সেই সদস্যপদ ত্যাগ করে এখন মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অন্য কোনও দলের ছত্রছায়ায় বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখান কি না আলোদেবী, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।