শহরে গোলাপদানে গান্ধিগিরি, জেলায় বিছনো রয়েছে কাঁটা
শহরে গোলাপ দান করে গান্ধিগিরি, আর জেলার কলেজগুলিতে হিংসা আর হিংসা। শহর কলকাতায় যখন গান্ধিগিরি দেখাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা, তখন সঙ্ঘর্ষের ঘটনা উত্তর থেকে দক্ষিণে।
কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি : শহরে গোলাপ দান করে গান্ধিগিরি, আর জেলার কলেজগুলিতে হিংসা আর হিংসা। শহর কলকাতায় যখন গান্ধিগিরি দেখাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা, তখন সঙ্ঘর্ষের ঘটনা উত্তর থেকে দক্ষিণে। শিলিগুড়ি থেকে নকশালবাড়ি, প্রবল সঙ্ঘর্ষ বাধে দু'দল সমর্থকের মধ্যে। সোমবার সকাল থেকেই কলেজ ভোট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে। দফায় দফায় সঙ্ঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তির পরিবেশ বজায় থাকুক। দু-একটি জায়গায় অবাধ্যতা আছে। সেগুলি কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে। তিনি আবেদন জানান, কলেজ নির্বাচন প্রতি বছরই হবে। এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। তাই সমস্ত ছাত্র সংগঠনের কাছে তিনি সাম্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
সকাল থেকেই যখম একটার পর একটা কলেজে অশান্তির খবর আসছে, তখন ভিন্নছবি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস 'বিরোধীরা স্বাগতম' পোস্টারে ছেয়ে দেওয়া হয়। বিরোধীদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিয়ে গান্ধিগিরি প্রদর্শন করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
এসএফআই-এর দাবি এগুলো সব সস্তার রাজনীতি ছাড়া আর কিছু না। প্রচারের জন্যই এই পন্থা নিয়েছে টিএমসিপি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরোধী সংগঠনের সমর্থকদের উপর হামলা চালাচ্ছে রাজ্যের শাসকদলের এই ছাত্র সংগঠন। এসব হচ্ছে, ভালোইষ তবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে, তবেই বুঝব সব ঠিক আছে।
এদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন তোলা ও জমাকে কেন্দ্র করে ফের রণেক্ষেত্র হয়ে উঠল শিক্ষাঙ্গন। এবার অগ্নিগর্ভ শিলিগুড়ি কলেজ। সোমবার সকালে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই সমর্থকদের মধ্যে প্রবল সঙ্ঘর্ষ বাধে। আহত হন সাগর শর্মা নামে এক এসএফআই ছাত্র।
নকশালবাড়ি কলেজেও দু'দলের সঙ্ঘর্ষ বাধে। এখানে গণ্ডগোল থামাতে গিয়ে আহত হন পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর। পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কলেজে মনেনয়ন তোলাকে কেন্দ্র করে হিংসার ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত হয় শিক্ষাঙ্গন।
এসএফআই-এর অভিযোগ, তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে বাধা দেয় টিএমসিপি। তাঁদের সমর্থকদের মারধর করা হয়। শুধু সমর্থক বা এসএফআই নেতা-কর্মীরাই নন, ডিওয়াইএফআই নেতা বিমান চক্রবর্তী জখম হয়েছেন তৃণমূল সমর্থকদের প্রহারে। যদিও এই অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
অভিযোগ, টিএমসিপি-র সদস্যরা গোট আটকে রয়েছে। কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না কলেজে। ফলে তাদের সদস্যদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ায় মনোনয়ন তুলতে পারছেন না তাঁরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য দানিয়েছে পাঁচজন এসএফআই সদস্য মনোনয়ন তুলে সক্ষম হয়েছেন।
কলেজ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই একটার পর একটা কলেজে সঙ্ঘর্ষ বাধছে। প্রতিদিনই নিয়ম করে অশান্তি ছড়াচ্ছে। শিক্ষাঙ্গন রাজনীতিমুক্ত করার প্রয়াস এখনও আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে।