দুর্যোগ কমলেও দুর্ভোগ কমেনি, নদীর রূদ্র-রূপে মালদহ-দিনাজপুরে ভরসা নৌকাই
মহানন্দা, ফুলহার ও গঙ্গার ত্রিমুখী আক্রমণে মালদহের অবস্থা আরও করুণ হয়েছে। মহানন্দার জলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মালদহের চাঁচল ও গাজলের বিস্তীর্ণ এলাকা।
গোটা উত্তরবঙ্গেই জল থইথই অবস্থা। এখনও ফুঁসছে মহানন্দা, ফুলহার, পুনর্ভবা নদী। গঙ্গাও রূদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে একটাই খুশির খবর- বৃষ্টির প্রকোপ একটু হলেও কমেছে। ফলে জলস্তর অপেক্ষাকৃত নিচে নামতে শুরু করেছে। কিন্তু কমছে না দুর্গতি। জলবন্দি দুর্গত মানুষদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় নৌকার অভাব। ত্রাণও মিলছে না পর্যাপ্ত। প্রকৃত দুর্গতদের হাতে খাবার পৌঁছয়নি। দিকে দিকে ত্রাণ শিবির লুঠের ঘটনা ঘটছে।
এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের জল কমেছে। কিন্তু নিচের তিন জেলা দুই দিনাজপুর ও মালদহের বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। শুক্রবার মহানন্দা, ফুলহার ও গঙ্গার ত্রিমুখী আক্রমণে মালদহের অবস্থা আরও করুণ হয়েছে। মহানন্দার জলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মালদহের চাঁচল ও গাজলের বিস্তীর্ণ এলাকা। গাজল থেকে বিহারগামী ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক চলে গিয়েছে জলের তলায়। পুনর্ভবার জলে বামনগোলা প্লাবিত হয়েছে নতুন করে।
প্রশাসন সূত্র জানা গিয়েছে মালদহের চাঁচল মহকুমার ৯৫ শতাংশ এলাকা গ্রাস করে নিয়েছে বন্যা। তবে ফুলহার ও পুনর্ভবা, আত্রেয়ী-সহ বেশ কিছু নদীর জলস্তর শুক্রবার বিকেল থেকে কমতে শুরু করেছে। স্থিতিশীল অবস্থা দুই দিনাজপুর ও মালদহের একাংশের বন্যা পরিস্থিতি। তবে টাঙুন নদীর জল বাড়ায় নতুন করে চিন্তার ভাঁজ মালদহবাসীর।
জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, আমরা বন্যা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কোনও রাস্তারই অস্তিত্ব নেই। তাই ত্রাণ পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। সেই কারণে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। কিন্তু প্রশাসন চেষ্টার কসুর করছে না। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। ৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪০৫টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা দুর্গতের সংখ্যা আট লাখেরও বেশি। প্রায় ৬৮ হাজার মানুষকে ১১৬টি ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, চিড়ে, গুড়, দুধ, জল, কেরোসিন তেল বিলি করা হচ্ছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচল সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই এলাকায় ৯১টি স্পিডবোট নামিয়ে দুর্গতদের উদ্ধারের কাজ করা হচ্ছে।