বানের জলে বাড়ছে নদীভাঙন, বাঁধ ভাঙা বন্যায় শিরে সংক্রান্তি অবস্থা উত্তরবঙ্গের
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের জল নামতে শুরু করায় খানিক স্বস্তি মিলেছে। তিন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভালো হলেও ঘোরালো দুই দিনাজপুর ও মালদহের পরিস্থিতি।
প্রবল বৃষ্টি তো চলছেই, তার উপর ধস নামছে একের পর এক বাঁধে। উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হয়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। শুধু একদিনেই উত্তরবঙ্গের দুই জেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোচবিহারে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের আর দক্ষিণ দিনাজপুরে বানের জলের ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের।
দুই দিনাজপুর ও মালদহের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। উপরের জল নামছে, বৃষ্টি চলছে, আর বাঁধ ভাঙছে। তিন ফলায় নাজেহাল অবস্থা উত্তরবঙ্গবাসীর। ফুলহার, মহানন্দা ও গঙ্গার জলে বিপদ বাড়ছে মালদহের। জলের তোড়ে নতুন নতুন জায়গায় বাঁধ ভাঙছে। আবার বন্যাদুর্গতরা নিজেরা বাঁচতে বাঁধ কেটে দিচ্ছে। ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে অনেক গ্রাম। এমনকী ইংরেজবাজারেরও একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে এদিন।
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের জল নামতে শুরু করায় খানিক স্বস্তি মিলেছে এদিন। এই তিন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আগের তুলনায় এখন অনেকটাই ভালো। কিন্তু খারাপ খবর এদিনই জেলায় পাঁচ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তুফানগঞ্জের বলরামপুর ও মারুগঞ্জে কালজানি নদী থেকে তিন যুবকের দেহ উদ্ধার হয় এদিন। তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর পূর্ণিমা বারিকের মৃতদেহও উদ্ধার হয়েছে কালজানি নদী থেকে। নদীর জলে ভেসে আসা আরও এক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এদিন।
জল নামলেও নদীভাঙন সাঙ্ঘাতিক রূপ নিয়েছে এ জেলাতেও। তোর্সা, ধরলা নদী বাঁধের ভাঙন বাড়ছে। এদিকে আত্রেয়ী, পুনর্ভবা ও টাঙ্গন নদীও ফুঁসতে শুরু করেছে। তিনটি নদীর জলই বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। আপাত শান্ত এই নদীতেই বানের টানে ভেসে যান চকভৃগুর মংলু সিং। আভারানি সরকার নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। বংশীহারিতে গণেন্দ্র মাহাতো জলের তোড়ে ভেসে যান। বুনিয়াদপুরে সুফল মুর্মুর মৃত্যু হয় জলে ডুবে।
এছাড়া কুলিক, নাগর, গামারি নদীর জলও বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। ফলে উত্তর দিনাজপুরের বন্যার অবস্থাও খুব খারাপ। আর মালদহের অবস্থাও খারাপ হচ্ছে ক্রমশ। তিনটি নদীর সাঁড়াশি আক্রমণে ডুবছে একের পর এক এলাকা।