
অধীর-আব্বাসের পরই আনিসের বাড়িতে ছুটলেন ফিরহাদ, ফিরলেন গো-ব্যাক স্লোগানে
হাওড়ার আমতার ছাত্রনেতা আনিস খান রহস্য মৃত্যুর কিনারা হয়নি এখনও। এখনও বিশেষ কেউ ধরা পড়েনি এই ঘটনায়। বিরোধী নেতারা সিটের তদন্তের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বারবার আমতায় আসছেন। সিপিএম বা কংগ্রেস এই ঘটনাকে ইস্যু করে আন্দোলন তীব্র করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে চটজলদি আনিস খানের বাড়িতে গেলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু বিক্ষোভের জেরে ঢুকতে পারলেন না আনিসের বাড়িতে। বাধ্য হয়েই তাঁকে ফিরতে হল। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আনিসের বাবার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি অসুস্থ তাই ফিরে যাচ্ছি।

শুক্রবার সকালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মিছিলে হাঁটেন আনিস খানের বাবা সালেম খান। তারপর তড়িঘড়ি করে ফিরহাদ হাকিম এদিন বিকেলেই পৌঁছে যান আনিস খানের গ্রামে। কিন্তু সেখানে আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করতে পারলেন না। ফিরহাদের সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়। তাঁরা বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সেইসময় আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকি ও পিরজাদারা আনিসের আত্মার শান্তির জন্য এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে লিপ্ত ছিলেন। সেইসময় ফিরহাদ উপস্থিত হন, উপস্থিত জনতা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। গো-ব্যাক স্লোগান ওঠে। প্রশ্ন ওঠে কেন এসেছিন তিনি। ৪২ দিন কেটে গিয়েছে, কোনও অপরাধী ধরা পড়েনি। তাছাড়া আমরা তো ওনাদের ডাকিনি।
আনিসের বাড়িতে ফিরহাদ ও পুলকের এদিন যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। আনিসের বাবা সালেম খানকে তাঁরা জাননা, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া কথা মতো ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট সিট জমা দিয়েছে হাইকোর্টে। গত ১৬ মার্চ তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি আনিসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সালেম খানকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থ থাকায় যেতে পারেননি সালেম খান। এরই মধ্যে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু হয়। প্রথম তদন্ত অসহযোগিতা করা হলেও আদালতের নির্দেশের পর থকে সিট এই ঘটনার তদন্ত করছে। সিট ইতিমধ্যে এক হোমগার্ড ও এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে।
দ্বিতীয়বার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ যোগী আদিত্যনাথের
সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। কিন্তু তদন্ত এগোয়নি সেভাবে। আনিসের পরিবার থেকেও তদন্তে সহযোগিতা করা হয়নি সিবিআইয়ের দাবিতে। তারপর ৩ মার্চ হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, সিটই তদন্ত করবে। তাদের ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়। সেইমতো ১৬ মার্চ রিপোর্ট জমা পড়ে।
সিটের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্রে পটের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত করা হয়। আনিসের মোবাইল ফোন পাঠানো হয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে। আনিসের মৃত্যুর পর যে মোবাইল থেকে আমতা থানায় ফোন করা হয়েছিল, সেটিও সিট হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এরপর ১৯ মার্ত হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে সিট আরও এক মাস সময় চেয়েছে। হাইকোর্ট তা মঞ্জুর করে এবং ১৮ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
ইতিমধ্যে সিপিএম ও কংগ্রেসের একাধিক নেতা দফায় দফায় আমতায় গিয়েছেন। আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। কেন এখনও প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়ল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ হান্নান মোল্লা। এদিন আবার অধীরের নেতৃত্বে রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির দাবিতে একটি মিছিলে অংশ নেন সালেমের বাবা। এদিন সকালে প্রথমে অধীর যান আনিস খানের বাড়িতে। সেখানে সালেম খানের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর সালেম খানকে নিয়ে মিছিল করেন তিনি। এদিন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকিও যান আনিসের বাড়িতে, কথা বলেন আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গে।
