স্টিফেনকাণ্ডের ছ’বছর পরেও তৈরি হয়নি এসএসকেএমের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা
ছ’বছর আগে অগ্নি নির্বাপণ বিধি চালু হলেও, তার প্রণয়ন হয়নি রাজ্যের সেরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই। সে কারণেই একটা ছোট্ট আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হল দমকলকে।
কলকাতা, ২২ নভেম্বর : দু'দিন ছাড়া আগুন। এবার আগুন ও আতঙ্কের মাত্রা বাড়তেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল এসএসকেএমের অগ্নি নির্বাপণ পরিকাঠামো। ছ'বছর আগে অগ্নি নির্বাপণ বিধি চালু হলেও, তার প্রণয়ন হয়নি রাজ্যের সেরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই। সে কারণেই একটা ছোট্ট আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হল দমকলকে।
অভিযোগ উঠে গেল, নামেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। আগুন নেভানোর আদৌ কোনও পরিকাঠামো নেই। হাসপাতালে সবই থেকেও নেই। তাই পাইপ কাঁধে ছুটতে হল আগুন নেভাতে। যে আগুন নিভিয়ে দেওয়া যেত আধঘণ্টায়, তা নেভাতে সময় লেগে গেল আড়াই ঘণ্টা।
২০১০-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছিল স্টিফেন কোর্ট। কেড়ে নিয়েছিল ৪০টিরও বেশি প্রাণ। তড়িঘড়ি পুলিশ, সিইএসসি, দমকল এবং কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠন করে অগ্নিনির্বাপণ বিধি চালু করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল জি প্লাস ফোর বিল্ডিং হলেই সেই বিল্ডিংয়ে উপযুক্ত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক।
কী সেই ব্যবস্থা? রাখতে হবে ভূ গর্ভস্থ জলাধার, রাইজার, স্প্রিঙ্কলার ও হোস পাইপ। এই বিশেষ ব্যবস্থাগুলি নিশ্চিত রাখা জরুরি দ্রুত আগুন নেভানোর জন্য। এটা এমনই একটা ব্যবস্থা যে, আগুনের তাপ পেলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে স্প্রিঙ্কলার। আগুন নেভানোর প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে যাবে একেবারে শুরুতেই। ফলে দমকল কর্মীদেরও বুঝতে সুবিধা হবে কোন তলায় আগুন লেগেছে। সেইমতো দমকল কর্মীরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে।
ভূ-গর্ভস্থ জলাধারে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল মজুত রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চালিয়ে দেওয়া হবে পাম্প। রাইজারের মাধ্যমে সেই জল পৌঁছে যাবে আগুনের কেন্দ্রে। সেখানে হোস পাইপ লাগিয়ে আগুন নেভাবেন দমকল কর্মীরা।
কিন্তু এত কিছু নিয়ম হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কেন তৈরি হয়নি এই ব্যবস্থা। জানা গেল, সবে মাত্র তৈরি হচ্ছে অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো। নিয়ম হওয়ার পর ছ'বছর কেটে গেছে পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। এসএকেএম ঘুরে দেখা গেল ভূগর্ভস্থ জলাধার তৈরি হচ্ছে। রাইজার বসানোর কাজও শুরু হয়েছে। এই রাইজার বা পাইপের মাধ্যমে ছাদ পর্যন্ত জল নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর বসবে স্প্রিঙ্কলার ও হোসপাইপ।