সতেজ আয়লার স্মৃতি, ফণীর আতঙ্কে ভুগছে সুন্দরবন
২০০৯-এর ২৫ মে। বিধ্বংসী আয়লার তাণ্ডবে তছনছ হয়েছিল সুন্দরবন।
২০০৯-এর ২৫ মে। বিধ্বংসী আয়লার তাণ্ডবে তছনছ হয়েছিল সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য লণ্ডভণ্ড হয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। গৃহহীন হয়েছিলেন অগণিত। সমুদ্রের নোনা জল পুকুর, ক্ষেতে ঢুকে পড়ায় সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। ১০ বছর আগের সেই স্মৃতি উস্কে দিতেই কী ধেয়ে আসছে ফণী, সেই আতঙ্কে শিঁটিয়ে আছেন সুন্দরবনবাসী।
সেই বিধ্বংসী দিনের বিবরণও দিয়েছেন কেউ কেউ। জানিয়েছেন, ২০০৯-র মে মাসের সেই দিনে সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওয়ার গতি বাড়তে থাকে। সঙ্গে মুশল ধারায় বৃষ্টি ও শোঁ-শোঁ আওয়াজ। মুহূর্তে চারিদিক অন্ধকার হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন সেই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী। প্রাণ বাঁচাতে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন উঁচু বাঁধের উপর। ভেঙে গিয়েছিল সেই বাঁধও। এর পরের বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁর চোখেমুখে আতঙ্কের ছবি ধরা পড়ে।
আয়লার তাণ্ডবে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে জলের তলায় চলে গিয়েছিল শতাধিক গ্রাম। ক্যানিং মহকুমার গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া, সোনাগাঁ, লাহিড়িপুর, মোল্লাখালি, কুমিরমারি, আমলামেথি, রাঙাবেলিয়া, বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, জ্যোতিষপুর, ভরতগড়-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় নিশ্চিহ্ন হয়েছিল বহু কাঁচা ও পাকা বাড়ি। জয়নগরের একাধিক ব্লকও আয়লার হাত থেকে রেহাই পায়নি।
[আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ফণী, দিঘায় চূড়ান্ত সতর্কতা]
ফণীর প্রভাবে সেদিনের মতোই ঝোড়ো হাওয়া ও টিপটিপ বৃষ্টি সুন্দরবনে চলছে গত দুই দিন ধরে। যদিও ফণীর সঙ্গে মোকাবিলায় আগে থেকেই আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ সন্দেশ খালি, হাসনাবাদ সহ সুন্দরবন লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় ফণীর মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন। মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে স্থানীয়দের। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জঙ্গলে মধু আনতে যেতেও বারণ করেছে প্রশাসন। সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য তৈরি রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
[আরও পড়ুন: কলকাতার দিকে ধেয়ে আসছে ফণী, কন্ট্রোল রুম খুলে তৈরি কলকাতা পুলিশ ]