আবারও কন্যাসন্তান, 'অভাব' দূর করতে যমজ দুই মেয়েকে বিক্রি! শ্রীঘরে স্থান বাবার
অভাবের সংসার। তার উপর চেপেছিল দেনার বোঝা। এই অবস্থায় এক কন্যা সন্তানের পর ফের জন্ম নেয় দুই যমজ কন্যা সন্তান। তাতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে বাবার।
অভাবের সংসার। তার উপর চেপেছিল দেনার বোঝা। এই অবস্থায় এক কন্যা সন্তানের পর ফের জন্ম নেয় দুই যমজ কন্যা সন্তান। তাতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে বাবার। এরপরই দুই সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়। বাবা নিজের দুই যমজ সন্তানকে বিক্রি করে দিল। শিশু বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত রতন ব্রহ্মকে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে দুই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করেছে। মহিষাকাঠি ও শিমুলপুর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। মাত্র এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় যমজ কন্যা সন্তানদের বিক্রি করা হয়েছিল বলে তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ। কাপড়ের ব্যবসায় নেমে মোটা টাকা দেনার ভার চেপেছিল। তা থেকে মুক্ত হতেই সে এই কাজ করে বলে জানিয়েছে পুলিশকে।
গাইঘাটা থানা এলাকার ভাদুরিয়া গ্রামে বাড়ি রতনের। পেশায় দিনমজুর রতনের অভাবের সংসার। সংসারের হাল ফেরাতে সম্প্রতি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেছিল সে। কিন্তু তা করতে গিয়ে বাড়তি বোঝা চাপে। একে অভাব, তার উপর চাপে দেনার দায়। ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে নেওয়ার পর শুরু হয় প্রতিনিয়ত তাগাদা।
পাওনাদার থেকে বাঁচার কোনও উপায় না পেয়ে শেষপর্যন্ত যমজ শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। এক শিশুকন্যাকে মহিষকাঠির বাসিন্দা অমল ঘোষকে বিক্রি করে। আর এক শিশুকন্যাকে বিক্রি করে শিমুলপুরের কৃষ্ণকান্ত দাসের কাছে। দুই মেয়েকে বিক্রি করে হাতে আসে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। তা দিয়ে দেনা মিটিয়ে দেয় রতন।
[আরও পড়ুন: খুনের সুপারি নিয়েছি, ৬০ লক্ষ চাই, নইলে...! এক মেসেজেই 'ত্রাহি ত্রাহি' ২৮ বিধায়ক]
একমাস কেটে গেলেও গুণধর বাবার এই কীর্তি কেউ টের পায়নি। রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই পুলিস হাজির হয় রতনের বাড়ি। রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ক্রমেই ফাঁস হয়ে যায় শিশু বিক্রির পরিকল্পনা। রতনের বাড়ি থেকে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। রতন জানায়, অভাবের সংসারে কী করে তিন মেয়েকে বড় করব, তাদের পাত্রস্থ করব। এসব ভেবেই বিক্রি করে দিয়েছি।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলকর্মীকে লক্ষ্য করে ছুটল গুলি, হেঁটে পগার পার ২ দুষ্কৃতী, ফের দিনদুপুরে শুটআউট]
তার উপর মাথায় চেপেছে দেনার বোঝা, সেখান থেকে বাঁচার কোনও উপায়ও পাচ্ছিলাম না। তাই দুই আর্থিক সংস্থান থাকা গৃহস্থ পরিবারকে পেয়ে মেয়েদের বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিই। রতন জানায়, যে দুই বাড়িতে সন্তানদের দিয়ে আসি, তাদের সন্তান নেই। আমার মেয়েরা সেখানে থাকলে ভালো থাকবে, ভালোভাবে মানুষ হবে ভেবেই দিয়ে আসি। তার বিনিময়ে আমাকে টাকা দেয়। তাতে আমার দেনাও মিটিয়েও উদ্বৃত্ত হয়। এই ঘটনায় কৃষ্ণকান্ত দাস ও অমল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত সত্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ভারতের জনতাই হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে দিচ্ছে চিনের হাতে, দেখুন চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট ]