রাজনীতিতে আসলেও রজনীর মতো এই পদক্ষেপটি নেননি এই উজ্জ্বল বাঙালী সিনে তারকারা
বহু বাঙালী অভিনেতাই রাজনীতিতে এসেছেন তবে কেউই গড়েননি নিজের রাজনৈতিক দল। দক্ষিণভারতে চিরঞ্জিবী থেকে রাজনীকান্ত সকলেই নিজের জনপ্রিয়তাকে ভর করে আলাদা রাজনৈতিক দল গড়বার দিকে এগিয়েছেন।
বাংলার রাজনীতি বহু রকমের উত্থান পতন দেখেছে। বহু রাজনীতিক ব্যাক্তিত্বের উত্থানপতন দেখেছে। একটা সময়ে , রাজনীতির আঙিনায় অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে প্রবেশ করেন চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্ররাও। তবে দক্ষিণের রাজনীতিতে যেমন প্রায়ই দেখা যায়, চলচ্চিত্র অভিনেতাদের রাজনীতিতে প্রবেশ তথা নতুন দল গড়ার পদক্ষেপ, বাংলার রাজনীতি এখনও তা দেখেনি। চলচ্চিত্র অভিনেতাদের নিয়ে দক্ষিণেরে রাজনীতির চেনা ট্রেন্ড, ধীরকে ধীরে রপ্ত করেছে বাংলা।
দক্ষিণের সিনেমা জগতে কামাল হাসানই হোক বা রজনীকান্ত, তাঁদের খ্যাতি দেশ জোড়া। তাই রজনীকান্তের রাজনীতিতে প্রবেশ জাতীয় ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে। বহু বাঙালী অভিনেতাই রাজনীতিতে এসেছেন তবে কেউই গড়েননি নিজের রাজনৈতিক দল। দক্ষিণভারতে চিরঞ্জিবী থেকে রাজনীকান্ত সকলেই নিজের জনপ্রিয়তাকে ভর করে আলাদা রাজনৈতিক দল গড়বার দিকে এগিয়েছেন। তবে বাংলায় এ ছবি দেখা যায়নি কোনও অভিনেতার মধ্যেই। কিন্তু কেন? প্রশ্নটা বোধ হয় তোলা রয়েছে সময়ের কাছেই।
দেখে নেওয়া যাক, বাংলার কিছু উজ্জ্বল তারকাদের রাজনৈতিক সফর। তাঁরা নতুন দল না গড়লেও , তাঁদের রাজনৈতিক উত্থান পতন দখল করেছে শিরোনাম।
মিঠুন চক্রবর্তী
বলিউড তাঁর নাচের তালে মাতোয়ারা। এরাজ্যের দর্শকের কআছে তিনি 'মহাগুরু'। এই জনপ্রিয়তাকে সঙ্গে নিয়ে চলা মিঠুন চক্রবর্তী রাজনৈতিক আঙিনায় পা রাখলেও , খুব কমদিনই সেখানে নিজেকে রাখতে পেরেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে তিনি রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হলেও , পরে তিনি সেই পদ থেকে ইস্তফা দেন। পাশাপাশি দূরত্ব কমাতে থাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের থেকে। যদিও এক সময়ে এই সম্পর্ক বেশ ইতিবাচক ছিল।
দেব
বাংলায় বর্তমানে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়ের পরেই দেবের জনপ্রিয়তা। টলিউডের অন্যতম সুপারস্টার দেব ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে ঘাটাল কেন্দ্র থেকে লড়াই করে জিতে যান। বর্তমানে তিনি ঘাটালের সাংসদ। দেবের জনপ্রিয়তা এরাজ্যে চোখ পড়ার মতো হলেও, আলাদাভাবে রাজনৈতিক দল গড়ার কোনও ভাবনাই যে তাঁর নেই, তা প্রায় স্পষ্ট বুঝিয়েছেন দেব।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায়
শুধু বাংলা নয় ভারতীয় চলচ্চিত্রের সমান্তরাল সিনেমার একজন নামী অভিনেতরা রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। হিন্দি টিভি সিরিয়াল 'মহাভারত'দ্রৌপদীর চরিত্র তাঁকে দর্শককূলের কাছে আরও জনপ্রিয় করে তোল। পরবর্তীকালে তিনি যোগ দেন বিজেপি-তে। বর্তমানে তিনি বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ।
জয়া বচ্চন
টলিউডের ছাড়াও এই বাঙালির অভিনেত্রীর জয়জয়কার বলিউডেও । অমিতাভ বচ্চনের ঘরনী জয়া বচ্চনও রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন। তবে কোনও দিনই ভোট যুদ্ধে নয়, বরং সাংসদ হিসাবে সমাজবাদী পার্টির হয়ে সংসদে লড়াই করেছেন নিজের মতবাদের সপক্ষে।
দেবশ্রী রায়
বিখ্যাত অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী দেবশ্রী রায়ও যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন তাঁর অভিনয় দক্ষতায়। বাণিজ্যিক বাংলা ছবি থেকে সমান্তরলা ছবি, সর্বত্রই সাবলীল তিনি। জনপ্রিয় হিন্দি সিরিয়াল 'মহাভারত'-এ সত্যবতীর চরিত্রে অভিনয় করে দেশের চলচ্চিত্র মহলেও তিনি পরিচিতি পান। এরপর একটা সময়ে , তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদেন তিনি। ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে রায়দিঘী কেন্দ্র থেকে জয়ী হন , পরে ২০১৬ সালের নির্বাচনেও জয়লাভ করে তিনি রায়দিঘির বিধায়ক হয়ে সমাজ সেবায় ব্যস্ত থাকেন।
মাধবী মুখোপাধ্যায়
সত্যজিতের ভাবনায় 'চারুলতা' তিনি। তাঁর রূপ ও অভিনয়দক্ষতা তাঁকে জনপ্রিয়তা তথা সম্মানের এক চরম জায়গায় পৌঁছে দেয়। কিন্তু পরবর্তীকালে মাধাবী মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হলেও, হেরে যান সিপিএম-এর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে। তারপর থেকে সেভাবে আর সক্রিয় রাজনীতি তাঁর মনকে আকর্ষণ করেত পারেনি।