বামেরা এবারে শূন্যতে গিয়ে ঠেকতে পারে, জানাচ্ছে বাংলার এক্সিট পোল
রবিবার, ১৯ মে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে পরেই প্রকাশিত হতে শুরু করে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল।
রবিবার, ১৯ মে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে পরেই প্রকাশিত হতে শুরু করে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল। পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে এবারে উৎসুক সব মহলই, কারণ সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে হানাহানি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্রাজ্যে কি এবারে দাঁত ফোটাতে পারবে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের গেরুয়া বাহিনী? প্রশ্ন ছিল এটাই।
বিভিন্ন সংস্থার এক্সিট পোলের মতে, এবারে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান চোখে পড়ার মতো। তৃণমূল কংগ্রেসকে সমানে সমানে টক্কর দিতে পারে বলে এবারে ভবিষদ্বাণী করা হচ্ছে। এমনকী, এক্সিট পোলের দেওয়া তথ্য দেখে মমতা স্বয়ং টুইট করে নিজের বিরক্তির করা জানিয়েছেন; আশঙ্কা করেছেন ষড়যন্ত্রের।
বামেরা এবারে ফিরতে পারে শূন্য হাতে
তবে তৃণমূল না বিজেপি, সেই বিতর্ক চলতে থাকলেও যেটা সবাইকে অবাক করেছে তা হল রাজ্যে বামপন্থীদের শূন্য হাতে ফেরার সম্ভাবনা, যা বেনজির। গত লোকসভা নির্বাচনেও তাঁরা রাজ্যে দু'টি আসনে জিতেছিলেন; এবারে তাঁরা কোনও আসনেই জয়ের মুখ দেখতে নাও পারেন বলে জানানো হয়েছে।
২০০৪ সালেও পশ্চিমবঙ্গে বামেদের আসন ছিল ৩৫টি
ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসে বামেদের এমন পরাজয় অভূতপূর্ব। ২০০৪ সালের নির্বাচনেও তাঁরা সারা দেশে ৫৯টি আসন জেতার পরে এদেশে বাম রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট আশান্বিত ছিলেন অনেকে। পশ্চিমবঙ্গে ৪২টির মধ্যে ৩৫টিতে জেতেন বামেরা সেবারে। কিন্তু সেই জয়ের পরে মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে রাজ্য থেকে বামেদের মুছে যাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এককালে পশ্চিমবঙ্গের মতো দেশের অন্যতম বড় বাম ঘাঁটিতে আজ দলটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার অর্থ মানুষের মন আজও ফেরেনি তাঁদের দিকে।
সংখ্যালঘু ভোট গিয়েছে তৃণমূলের ফিকে, সংখ্যাগুরু বিজেপির দিকে
বামেদের এই অবিরাম ক্ষয়ের কারণ একদিকে সংখ্যালঘু ভোট যেমন চলে গিয়েছে তৃণমূলের দিকে, অন্যদিকে সংখ্যাগুরু ভোটাররা ঝুঁকেছেন বিজেপির দিকে। দুর্বল নেতৃত্ব এবং সংগঠনের কারণে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ভোটারদের কাছে টানতে ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছেন বামেরা; এখনও দলকে উদ্বুদ্ধ করতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো প্রবীণ অসুস্থ মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ভবিষ্যৎ এখন এতটাই অন্ধকার যে আলোর ঠিকানা কোথায় তা বলতে পারে না কেউই। আর এখন যদি সংসদে রাজ্য থেকে বাম প্রতিনিধিত্ব শূন্যতে গিয়ে ঠেকে, তবে রাজ্যের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপশালীদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা চলে যাবে আরও বিশ বাওঁ জলেই।