বিশ্বভারতীতে জাল মার্কশিট কাণ্ডে জেলের সাজা প্রাক্তন উপাচার্যের! সাজা আরও ২ জনেরও
বিশ্বভারতীতে জাল মার্কশিট কাণ্ডে জেলের সাজা প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ সিংহের। একইসঙ্গে প্রাক্তন রেজিস্ট্রার দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন অধ্যাপিকা মুক্তি দেবের জেলের সাজা হয়েছে।
বিশ্বভারতীতে জাল মার্কশিট কাণ্ডে জেলের সাজা প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ সিংহের। একইসঙ্গে প্রাক্তন রেজিস্ট্রার দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন অধ্যাপিকা মুক্তি দেবের জেলের সাজা হয়েছে। তিনজনেরই পাঁচ বছরের কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে বোলপুর আদালত। একইসঙ্গে ১ হাজার টাকা করে জরিমানাও ধার্ষ করা হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত এই মুক্তি দেবের নিয়োগকে ঘিরে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের অধ্যাপিকা ছিলেন মুক্তি দেব।
নিয়োগের সময় থেকেই জালিয়াতি করেছিলেন মুক্তি দেব। তিনি জানিয়েছিলেন, যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ। অধ্যাপিকা হিসেবে নিয়োগের পর বিশ্বভারতীতেই পিএইচডি করার জন্য আবেদন করেন মুক্তি দেব। সেই সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার আসল নথি তলব করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মুক্তি দেব সেই সময় যাদবপুর থানায় দায়ের করা একটি জিডির কপি পেশ করেন। যাতে অভিযোগ করা হয়েছে, বাড়ি থেকে সব নথি চুরি হয়ে গিয়েছে। সেই সময় সন্দেহ বাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
ইতিমধ্যেই উপাচার্য বদল হয়ে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই সময়ে উপাচার্য ছিলেন সুজিত কুমার বসু। যাদবপুরের পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তথ্য তলব করা হয়। যাদবপুরের তরফে জানানো হয়, যেই সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় মুক্তি দেব নামে কোনও ছাত্রী তাদের ওখানে ছিলেন না। অন্যদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জানায় পার্ট ওয়ানে মুক্তি দেবের নাম পাওয়া গেলেও, অন্য কোনও রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
১৫ বছর ধরে মামলা চলার পর বুধবার বোলপুর আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার সাজা শোনানো হয়। অভিযুক্ত তিনজনই আপাতত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
১৯৯৬-এ বিশ্বভারতীতে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। অন্য অনেকের মতো মুক্তি দেব আবেদন করেছিলেন। তাঁর জমা দেওয়া মার্কশিটের অ্যাটাস্টেড করা ছিল দিলীপ সিনহার। ১৯৯৭ সালের ২৭ জানুয়ারি নিযুক্ত হয়েছিলেন মুক্তি দেব। ২০০২ সালে পিএইডি-র জন্য আবেদন করতে গিয়েই গোলযোগ বাধে। ২০০৪ সালে অধ্যাপিকার পদ থেকে সাসপেন্ড হন মুক্তি দেব। ওই বছরের মে মাসে তৎকালীন কর্মসচিবের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। একমাসের মধ্যেই গ্রেফতার হন মুক্তি দেব এবং দিলীপ সিনহা। যদিও পরে তাঁরা জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। প্রায় একবছরের মধ্যে ২০০৫-এর মার্চে সিআইডি চার্জশিট জমা দেয়।