বিজেপি ছেড়েও ঠাঁই হল না তৃণমূলে, কে বাধা লক্ষ্মণ স্পষ্ট করলেন চূড়ান্ত হতাশায়
পদ্ম-সংসারে বিচ্ছেদের পর হলদিয়ার বেতাজ বাদশা এখন দলহীন। এক হাজারেরও বেশি কর্মীকে নিয়ে বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেও নতুন দল পাননি।
পদ্ম-সংসারে বিচ্ছেদের পর হলদিয়ার বেতাজ বাদশা এখন দলহীন। এক হাজারেরও বেশি কর্মীকে নিয়ে বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেও নতুন দল পাননি। নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শাসকদলে যোগদানের। কিন্তু এবার তিনি স্পষ্ট করে দিলেন কেন বিজেপি ছাড়ার দু'মাস পরও তিনি দল পেতে ব্যর্থ। এ জন্য কে দায়ী তাও স্পষ্ট করে দিলেন তিনি।
শুভেন্দুই বাধা
শুভেন্দু নন্দীগ্রাম গণহত্যার খলনায়ক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন লক্ষ্মণ শেঠকে। তাঁকে কখনই শুভেন্দু এন্ট্রি দেবেন না দলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য দেখালেও শুভেন্দু যে কোনওভাবেই আমল দেবেন লক্ষ্মণ শেঠকে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নিজেই। শুভেন্দু জানিয়েছেন, উনি বলছেন নন্দীগ্রামের ঘটনায় বুদ্ধবাবুর সরকার দায়ী, কিন্তু মানুষ তো তাঁকেই সামনে দেখেছেন।
নন্দীগ্রামবাসীর সঙ্গে গদ্দারি নয়
শুভেন্দু সাফ জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে কোনওমতেই গদ্দারি করতে পারবেন না। নন্দীগ্রামের মানুষ যে আস্থা প্রদর্শন করেছেন, যে সংগ্রাম চালিয়েছেন, তাকে স্যালুট করতেই হবে। নন্দীগ্রামের মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে আমি কোনওদিন বিচ্যুত হব না। তাই লক্ষ্মণ শেঠ চাইলেও শুভেন্দু দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
কুল হারিয়ে প্রাসঙ্গিকতার খোঁজ
প্রাসঙ্গিকতা খুঁজছেন লক্ষ্মণ শেঠ। তাই হাত ধরার কথা বললেও পরে তিনি তৃণমূলকেই অগ্রাধিকার দেন। কিন্তু তাঁর সেই পথ নিষ্কণ্টক হচ্ছে না শুভেন্দু অধিকারীর জন্যই। তিনি তৃণমূলে আসতে পারছেন না শুভেন্দুর জন্যই তা ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েও দিয়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারী আমার ফোনই ধরে না।
শুভেন্দু রাজি না হলে সুযোগ নেই
লক্ষ্মণ শেঠ বুঝে গিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী না চাইলে তৃণমূলে তাঁর এন্ট্রি মিলবে না। আর শুভেন্দু যখন অনড়, তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়াও হবে না। তাই এখন মহাফাঁপরে পড়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। তিনি এখনও কুল হারিয়ে মাঝ দরিয়ায় পড়েছেন। তাই কী করবেন নিজেই বুঝতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত তাঁর ঠিকানা কোথায়, তা খুঁজতেই দিশাহারা এককালের বেতাজ বাদশা।
গর্জনই সার, ডাকল না কেউ
হলদিয়ার বেতাজ বাদশা লক্ষ্মণ শেঠ ক্ষমতা হস্তান্তরের পরই গুরুত্ব হারিয়েছিলেন সিপিএমে। দুর্নীতির কড়চায় বহিষ্কারও হতে হয়েছিল তাঁকে। সিপিএমের ডাক সাইটে নেতা কালের নিয়মে ক্ষমতা হারিয়ে হয়ে গিয়েছিলেন বোতলবন্দি। সেই অবস্থা থেকে বিজেপিতে গিয়ে নতুন করে গুরুত্ব ফেরাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দুবছরেই মোহভঙ্গ হল তাঁর। বিজেপি ছেড়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন। কিন্তু সেই গর্জন শুনেই কেউই তাঁকে ডাকল না।
মানুষের পাশে থাকতে চান
এদিন বিজেপি ছেড়ে তিনি বলেন, নতুন-পুরনো লড়াই তাঁকে দলে কাজ করতে দেয়নি। এই দুই বছরে আমার মনে হয়েছে, বিজেপি মানুষের কথা ভাবে না। বিজেপিতে থেকে আমি রাম-রহিমের মধ্যে বিভেদ বাঁধাতে পারব না। তাই দল ছাড়ছি। ফের নতুন করে শুরু করতে চাই। পাশে থাকতে চাই মানুষের।