মদের নেশায় বেপরোয়া গতি, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের ছেলের গাড়ি পিষে দিল ৪ জনকে, জখম ৫
রাজ্যের বুকে ফের সলমন খানের হিট অ্যান্ড রান মামলার ছায়া। ঘটনাটি বর্ধমানের মন্তেশ্বরে। ঘটনায় ছেলের জড়িত থাকার কথা কার্যত অস্বীকার করেছেন সিপিএম-এর প্রাক্তন বিধায়ক হেদায়াতুল্লা চৌধুরী।
প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের ছেলের গাড়ি পিষে দিল চার শ্রমিককে। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন আরও পাঁচজন। শুক্রবার রাতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে মেমারি-কাটোয়া রোডে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ২ মহিলা। পাঁচ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শুক্রবার রাতে গাড়িটি নবদ্বীপের দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসছিল। মেমারি-কাটোয়া রোডের উপরে গাড়িটা প্রবল গতিতে এসে রাস্তার ধারে থাকা একটি হ্যান্ড ট্রাক্টরে ধাক্কা মারে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক হেদায়েতুল্লা চৌধুরীর ছেলের গাড়িটি। হ্যান্ড ট্রাক্টরে ধান বোঝাই করে তা নিয়ে যাচ্ছিলেন ৮ শ্রমিক। বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় তাঁরা ছিটকে পড়েন। ৪ জনের উপরে গাড়ির চাকা উঠে যায়। এঁদের বেশকিছু দূর পর্যন্ত ছেঁচড়েও নিয়ে যায় গাড়িটি।ট্রাক্টরটি ছিটকে পাশের ধান ক্ষেতে গিয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা মানুষজন ছুটে আসেন এবং গাড়ির তলা থেকে ৪ জনকে বের করা হয়। এরমধ্যে ২ মহিলা শ্রমিকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। মন্তেশ্বর হাসপাতালে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। জখম ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।
জখমদের মধ্যে একজন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক হেদায়াতুল্লা চৌধুরীর ছেলে হামিদুল্লা চৌধুরীর বন্ধু মহম্মদ শাহিদ। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, নবদ্বীপ থেকে ফেরার পথে তাঁরা রাস্তার ধারে একটি ধাবায় মদ্যপান করেছিলেন। গাড়ি হামিদুল্লাই চালাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন শাহিদ। পরে অবশ্য এই শাহিদকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সামনের আসনে হামিদুল্লার পাশেই বসেছিলেন। এমনকী, ধাবায় মদ্যপানের পর কুসুমগড় বাজারে একটি মোটরবাইকে ধাক্কা মেরেছিলেন হামিদুল্লা। পুলিশকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন শাহিদ। সেই মোটরবাইকের চালক তাঁদের ধাওয়াও করেছিলেন। নাগালের বাইরে থাকতে হামিদুল্লা গাড়ির গতি ভয়ঙ্করভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এর জেরে একটা সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি হ্যান্ড ট্রাক্টর ও তার পাশে থাকা লোকজনকে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারে হামিদুল্লা। বয়ানে এই কথাগুলোও জানিয়েছেন শাহিদ।
এদিকে, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক হেদায়েতুল্লা চৌধুরীর দাবি, ছেলের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ হয়নি। বহুবার চেষ্টা করলেও ছেলেকে মোবাইলে পাচ্ছেন না। প্রতিবেশীদের কাছে তাঁর গাড়ির দুর্ঘটনাগ্রস্থ হওয়ার খবরও পেয়েছেন বলে জানান তিনি। ঘটনাকে দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন হেদায়েতুল্লা। তাঁর দাবি, গাড়ি তাঁদের বাড়ির চালকেরই চালানোর কথা। ছেলের হাতে কীভাবে স্টিয়ারিং গেল তা তিনি জানেন না।
{promotion-urls}