সালকিয়ার 'প্রতিবাদী' অরূপ ভাণ্ডারি! প্রতিবাদ? ধুর এতো 'দুটো গ্রুপের মধ্যে গণ্ডগোল'!
কলকাতা, ৪ ফেব্রুয়ারি : ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ৫ দুষ্কৃতীর বেধড়ক মারের শিকার হয়েছিলেন অরূপ ভাণ্ডারী আর তারই পরিণতিতে পাঁচদিন কোমায় থাকার পর মৃত্য়ু হয় প্রতিবাদী অরূপের।
সালকিয়ায় প্রতিবাদী তরুণের মৃত্যু, অধরা অপরাধীরা
শেক্সপিয়ার-রবি ঠাকুরে একটু নয় গুলিয়ে গেল, ক্ষতি কী? উনি তো মুখ্যমন্ত্রী!
'যে হারে সবাইকে জেলে পাঠানো হচ্ছে,তাতে আমিও প্রস্তুত হচ্ছি', একথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখে?
ধুর মশাই কে বলেছে এই কথা। যত সব বাজে কথা! মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তো 'দুটো গ্রুপের মধ্যে গণ্ডগোল। কোন মেয়েদের ইভটিজিং করা হচ্ছিল তাও তো দেখতে হবে।'
সালকিয়ায়
'গোষ্ঠীদ্বন্ধে'
মৃত
অরূর
ভাণ্ডারির
পরিবারের
সঙ্গে
আজ
দেখা
করতে
গিয়েছিলেন
মুখ্যমন্ত্রী
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেখানে
গিয়ে
পরিবারকে
অনেক
আশ্বাস
প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন।
তারপর
বাইরে
বেরিয়ে
সাংবাদিকদের
জানিয়েছেন
'দুটো
গ্রুপের
মধ্যে
গণ্ডগোল
হয়েছিল
আপনারা
সবাই
জানেন।'
যদিও
এক্ষেত্রে
বিষয়ই
তখনই
প্রথম
জানলাম
আমরা
কারণ,
আমরা
জানতাম
সরস্বতী
পুজোর
দিন
একদল
যুবক
কয়েকজন
মেয়েকে
উত্যক্ত
করছিল
দেখে
অরূপ
প্রতিবাদে
গর্জে
উঠেছিল।
আর
তাই
৫
দুষ্কৃতী
মিলে
বেধড়র
পিটিয়েছিল
তাঁকে।
মাথায়
গুরুতর
চোট
পেয়ে
পাঁচদিন
কোমায়
ছিলেন
অরূপ।
তারপর
অবশেষে
মৃত্যু
হয়
তাঁর।
'কিন্তু কোন মহিলাদের ইভটিজিং হয়েছে তাও তো খুঁজে দেখতে হবে।' না একথাও আমরা বলছি না বলছেন মমতাময়ী মুখ্যমন্ত্রীই।
অরূপের পরিবার ও প্রতিবেশীরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর গোষ্ঠীদ্বন্ধ তত্ত্ব মানতে নারাজ। পরিবার বলছে, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করেছিল বলেই মৃত্যু হয়েছে অরূপের। কোন মেয়েদের বাঁচাতে গিয়ে অরূপের এই হাল তার হদিশ তাদের কাছে সত্য়িই নেই, থাকলে তাঁদের নিয়ে পুলিশের কাছেই পৌছে যেতেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে অরূপের পরিবারের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও বুদ্ধিজীবী মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিজেপি নেতা তথাগত রায় মন্তব্য করেন, "সাজানো ঘটনা, সামান্য ঘটনা, ওর স্বামী সিপিএম করতো-র পর মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় এখন গোষ্ঠীদ্বন্ধ তত্ত্ব। মুখ্যমন্ত্রী নির্জলা মিথ্যাকথা বলছেন। আর কী বলব। আমারই লজ্জা লাগছে।"
এরই সুর সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর কথায়য তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী একশোটার মধ্য ৯৯ টা মিথ্যা কথা বলেন, সত্য়িকথা বলতেই জানেন না উনি। সালকিয়ার ঘটনাকে কোন যুক্তিতে গোষ্ঠীদ্বন্ধ বললেন মুখ্যমন্ত্রী? ছিঃ! এরপর পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ওনাকে ধিক জানাবে।"
কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, "সাহসিকতার জন্য যুবকেপ পরিবারকে পুরস্কার দেওয়া উচিত ছিল ওনার (মুখ্যমন্ত্রীর)। এই মৃত্যুর ঘটনাকে এভাবে টেনে এনে সংকীর্ণ মনের পরিচয় দিয়েছেন মুখমন্ত্রী। এই ধরণের মানসিকতার প্রতিবাদ করছি।"
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য়ের কড়া নিন্দা করেছেন বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশও। নাট্যকার কৌশিক সেনের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তা অসম্মানজনক মন্তব্য। সত্যি মানতে বাধা কোথায়। গোষেঠীদ্বন্ধের তত্ত্ব দিলেও মুখ্যমন্ত্রীর কী লাভ হবে? এতে আরও প্রমাণ হবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গুর। ওনার সত্য স্বীকার করা উচিত।
সমাজকর্মী মীরাতুন নাহারের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রীর একটাই সমস্যাস, রাজ্যে কোনও অন্যায় হলে বিশেষত মহিলাদের উপর আক্রমণ হলে তা কখনওই মানতে চান না তিনি। সে পার্কস্ট্রিট হোক বা কামদুনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই অবস্থান রাজ্যের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক।"