ফরাক্কায় গঙ্গা ও উলুবেড়িয়ায় রূপনারায়ণে ভাঙন
একদিকের পাড় ভেঙে রূপনারায়ণ নদীর উত্তর দিকে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে চাষের জমি ও গাছ। আমফান ঝড়ের পর থেকে সেই ভাঙ্গন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের তোড়ে নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদীর পাড়ের রিংবাঁধ। নদীর পাড়ে থাকা রিং বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট অংশ জোয়ারের জলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ফলত জোয়ারের সময় জল বাড়লেই জল ঢুকছে এলাকার চাষের জমিতে। তাই হাওড়ার দ্বীপাঞ্চল এলাকার বহু মানুষের আশঙ্কা যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে ভরা বর্ষায় ও বন্যার সময় তাদের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হতে হবে।

হাওড়ার দীপাঞ্চল ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েত। এই দুটি দ্বীপটি রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরী নদী দ্বারা বেষ্টিত। ফলে বিভিন্ন সময় পাড় ভেঙে যাওয়ার ফলে এলাকার লোকজন নদী ভাঙনে জর্জরিত। আমফান ঝড়ের সময় রূপনারায়ণের নদের চিতনান এলাকার বেশ কিছুটা পাড় ও বাঁধে ফাটল ধরেছিল এবং তারপর জোয়ারের তোড়ে ধীরে ধীরে সেই বাঁধ ভেঙে চলেছিল। শুক্রবার রাতের কোটালের চিতনান দক্ষিণ পাড়ার কাছে নদী বাঁধে প্রায় ৪0 ফুট ভেঙে গিয়েছে।
হু হু করে জল ঢুকেছে এলাকার মধ্যে এর ফলে এলাকার বহু ধানের জমি প্লাবিত হয়েছে। যদিও পরে জোয়ারের জল নেমে গিয়েছে। কিন্তু বাঁধ ভাঙা থাকায় সামান্য জোয়ারে ওই এলাকায় জল ঢুকে যাবে এতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হবে। শুধু তাই নয় এর পরেও রয়েছে বর্ষার সময়। সেই সময় নদীর পাড় বিরাট অংশ ধসে যেতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
এলাকার প্রধান সাবিনা বেগম বলেন, আমরা প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধ বেঁধে দিয়েছিলাম। ইঁট বিছানো হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু লক ডাউনের কারণে কাজ বিলম্বিত হয়। সম্প্রতি আমফানের কারণে সেই অসমাপ্ত কাজ নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, এখন বাঁধ যে অবস্থায় রয়েছে আমাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। আমরা এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেচ দফতরের মাধ্যমে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের কাজ করার জন্য।
বর্ষা আসতে না আসতেই ফারাক্কার কুলিদিয়ার চরের গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়ে গেলো। গত বছরের তুলনায় এই বছর অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে গঙ্গা ভাঙন। এর মধ্যেই পোড়া পারা, মেঘনাদ মণ্ডল পারা, নারায়ন মন্ডল পারা ও সাহেদআলি পারার প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুরে শুরু হয় এই ভাঙন। খুব আতঙ্কের মধ্যে দিয়েই দিন যাপন করছেন এলাকা বাসিরা।
তাদের বক্তব্য, গত বছরে তারা হারিয়েছেন নিজেদের চাষবাসের জমিজমা আর এইবার হয়তো নিজেদের বসতবাড়িটাও বাঁচাতে পারবেন না। যদি সময়মত কাজ শুরু না হয় তাহলে গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যেতে পারে প্রায় ৩০০ ঘরবাড়ি সহ দুটি স্কুল, দুটো অঙ্গনওয়াড়ি স্কুল, একটি মাতৃ সদন সহ একটি উপসাস্থ্য কেন্দ্র।

গত শুক্রবার এলাকা পরিদর্শন করে যান মুর্শিদাবাদ সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা এবং তরীঘড়ি এদিন গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করা জন্য যেখান থেকে গঙ্গা ভাঙ্গন শুরু হয়েছে সেই জায়গায় বালির বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু এই বালির বস্তায় কি গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করতে পারবে না। গত বছরের তুলনায় এই বছর বেশি গঙ্গা ভাঙ্গনে তলিয়ে যাবে বাড়ি ঘর, কপালে চিন্তার ভাঁজ এলাকা বাসিন্দাদের।
টাকার প্রয়োজনে সহায় তিনি! 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব' বন্ধ করতে হুঁশিয়ারি অনুব্রতর