সুচিত্রা সেনের পৈতৃক ভিটে দখলমুক্ত করতে নির্দেশ আদালতের
পাবনার গোপালপুরের এই বাড়িটি ১৯৮৭ সাল থেকে জামায়াত-ই-ইসলামির অনুগামী সংগঠন ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটের দখলে ছিল। তখন প্রশাসন বাৎসরিক চুক্তির ভিত্তিতে তা ইজারা দিয়েছিল ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটকে। ১৯৯১ সালে বাড়িটির মালিকানা হাতে পাওয়ার জন্য আবেদন করে তারা। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়। বাৎসরিক ইজারার ভিত্তিতে বাড়িটি ভোগদখলের সুযোগ পায় তারা। ১৯৯৫ সালে পরপর কয়েক মাস ভাড়া বাকি পড়ায় ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটের ইজারা বাতিল করা হয়। তখন জামায়ত-ই-ইসলামি এগিয়ে এসে টাকা দিয়ে দেয়। ইতিমধ্যে এই বাড়িটি দখলমুক্ত করে একটি সংগ্রহালয় বানাতে আন্দোলন শুরু করে সুচিত্রা সেন স্মৃতিরক্ষা পরিষদ। এর জেরে ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তাদের আইনি টানাপোড়েন শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট বাড়িটি ছেড়ে দিতে নির্দেশ দিল ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটকে।
সুচিত্রা সেন স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি সাইদুল হক বলেন, "দীর্ঘদিন আন্দোলন চালানোর পর আদালতের এই রায়ে আমরা ভীষণ খুশি। আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। পাবনার সাধারণ মানুষও আনন্দিত। সুচিত্রা সেনের জীবনের নানা কীর্তিকাহিনী নিয়ে এখানে একটি মিউজিয়াম গড়ে তোলা হবে।"
এদিকে, আদালত রায় দিলেও কত দিনের মধ্যে এই বাড়ি দখলমুক্ত হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইনজীবীদের একাংশ। কারণ, স্বেচ্ছায় বাড়িটি না ছাড়লে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা রায়ে স্পষ্ট করেনি আদালত। যদিও ইমাম গজ্জালি ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পরিষদের সেক্রেটারি আবিদ হাসান জানান, "আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আইনের নির্দেশ মেনে চলব।"
এপার বাংলার মতো ওপার বাংলাতেও দারুণ জনপ্রিয় সুচিত্রা সেন। তিনি যখন মারা যান, তখন পাবনাও বেদনাবিধুর হয়ে পড়েছিল। মহানায়িকাকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে অসীম শ্রদ্ধা ও কৌতূহল। ফলে পাবনায় তাঁর পৈতৃক ভিটেতে মিউজিয়াম তৈরির সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।