উত্তর-দক্ষিণ, পার্থ থেকে পরেশ! ২২-এর দিনভর ইডি'র তল্লাশিতে নাজেহাল কারা
তখনও ঘুম ভাঙেনি! কেউ হয়তো উঠে চোখ কচলাচ্ছেন। এমন সময়ে বেল বাজল। দরজা খুলতেই 'দুয়ারে' ইডি! হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লেন কয়েকজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ি জুড়ে চলল তল্লাশি। ২১ শের রাত পোহালেই যে এমন ঘটনা ঘটভবে তা বোধহয় প্র
তখনও ঘুম ভাঙেনি! কেউ হয়তো উঠে চোখ কচলাচ্ছেন। এমন সময়ে বেল বাজল। দরজা খুলতেই 'দুয়ারে' ইডি! হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লেন কয়েকজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ি জুড়ে চলল তল্লাশি। ২১ শের রাত পোহালেই যে এমন ঘটনা ঘটভবে তা বোধহয় প্রত্যাশিত ছিল না অনেকের কাছেই। দক্ষিণে পার্থ থেকে উত্তরে পরেশ!
বাগদার চন্দন থেকে কল্যাণময়, শান্তিপ্রসাদ। বাদ পড়লেন না কেউই।
সকাল থেকে শাসক শিবিরের নেতারা যখন প্রতিহংসার তত্ত্ব দিতে ব্যস্ত, জিজ্ঞাসাবাদের ঠেলায় তখন প্রভাবশালীদের নাস্তানাবুদ অবস্থা। একেবারে চারপাশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপ। তল্লাশির স্থানগুলিতে কার্যত দুর্গে পরিণত করে ফেলা হয়। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভিতরে ঠিক কি ঘটে চলেছে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা তাক করা থাকলেও চোখে পড়ছে না কিছুই। শুধু দুপুর গড়াতেই পার্থবাবুর বাড়িতে ঢুকতে দেখা গেল একে একে তিন চিকিৎসককে।
মন্ত্রী কতটা অসুথ সেই খবর বাইরে না এলেও কি কারণে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর এই অসুস্থতা তার ব্যাখ্যা দিয়ে দিলেন বিরোধীরা। তবে ইডির নাগালে এদিন পাওয়া যায়নি আরেক মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। একুশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। সাতসকালে ইডি'র অভিযানের কথা শুনে ''মুড়ি খাওয়াতাম'' বলে মস্করা করলেও বেলা বাড়তেই বোঝা গেল অধিকারী পরের সদস্যরাও ছাড় পাননি।
পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা, যার নিয়োগ এসএসসি মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে, এদিন মুখোমুখি হতে হল তাঁকেও। শোনা যাচ্ছে পরেশের বাড়ির সদস্যদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ইডির তদন্তকারী রা।
এসএসসি'র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা'র ফ্ল্যাটেও এদিন হানা দেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। অভিযোগ, এই শান্তিপ্রসাদের হাত ধরেই নাকি তৈরি হত ভুয়ো প্যানেল। বেয়াইনি নিয়োগের মামলায় যার ভূমিকা সামনে এসেছে, বাদ গেলেন না মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সেই প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও। এদের দুজনেরই গোটা বাড়ি ঘিরে চলে তল্লাশি। মূলত কোথাও টাকা লুকানো আছে কিনা সে বিষয়েই তদন্ত চালান ইডি আধিকারিকরা।
তবে এদিনে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি যার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে তিনি হলেন বাগদার চন্দন মন্ডল। তিনি নাকি টাকা নিয়ে চাকরি দিতেন। আবার চাকরি না হলে সে টাকা ফেরতও দিয়ে দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এদিন বাগদার বাড়িতে তল্লাশি চলছে সেই সময়ে কলকাতা হাইকোর্টে এজলাসে হাজির ছিলেন চন্দন।
তবে সন্ধ্যায় সবথেক্লে বড় চমকটা দিল ইডি। যার নাম কেউ শোনেনি এমন এক মহিলার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ২০ কোটি টাকা। আলিশান ফ্ল্যাটের ঘরে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে এল বস্তা বস্তা নোট। কে এই মহিলা? ইডি বলছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় নামে ওই মহিলা নাকি পার্থ ঘনিষ্ঠ। কি সম্পরক-কতটা ঘনিষ্ঠ সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল সেই নোটের ছবি। যা গুনতে ব্যাঙ্ক থেকে লোক ডেকে আনতে হয়।
সবই হল, কিন্তু ১৪ ঘন্টা পরেই স্বস্তি পাচ্ছেন না পার্থ।