কুন্তল ঘোষের দুটি অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকার হদিশ, আদালতে বিস্ফোরক দাবি ইডির
তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের জামিনের দাবিতে যখন যুক্তি সাজিয়ে সওয়াল করেছেন আইনজীবী, তখনই ইডির তরফে দাবি করা হল কুন্তলের জোড়া অ্যাকাউন্টে বিপুল টাকার হদিশ মিলেছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের দুটি অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে বলে আদালতে দাবি করল ইডি। সেই টাকা তুলে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে ইডির তরফে। কোথায় পাঠানো হয়েছে তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ইডির আইনজীবীরা।
শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের জামিনের দাবিতে আদালতে যখন যুক্তি সাজান তাঁর আইনজীবী। তিনি সওয়াল করে জানান, আজ পর্যন্ত কোনও টাকা-পয়সা উদ্ধার হয়নি কুন্তল ঘোষের বাড়ি থেকে। শুধু কয়েকটি নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে। এই মর্মে তিনি কুন্তলের জামিনের আবেদন করেন।
কুন্তল ঘোষের আইনজীবীর এহেন আবেদনের পর পাল্টা ইডির তরফে সওয়াল করে দাবি করা হল, কুন্তলের জোড়া অ্যাকাউন্টে বিপুল টাকার হদিশ মিলেছে। দুটি অ্যাকাউন্টে মিলেছে ৬ কোটিরও বেশি টাকা। এই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির বলে দাবি ইডির। নিয়োগ দেওয়ার নাম করে এই টাকা তোলা হয়েছিল এবং তা বিশেষ কোনও জায়গায় পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয় ইডির পক্ষে।
কোথায় পাঠানো হযেছিল টাকা? তবে কি কুন্তলের পাঠানো টাকাই মিলেছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৫০ কোটি টাকার মধ্যেই রয়েছে কুন্তলের পাঠানো ৬ কোটি, তা নিযেও উঠছে প্রশ্ন।
এদিন আদালতে ইডি আরও দাবি করেছে, কুন্তলের বাড়ি থেকে ৩০টি নয়, ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছিল ২৫০টি। এই মর্মে চাঞ্চল্য এখানেই যে, এই ওএমআর শিটগুলি মাত্র দেড় মাস আগে পরীক্ষা হওয়া টেটের। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টেটের ওএমআর শিট উদ্ধার হওয়ায় স্পষ্ট যে, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চললেও থেমে থাকেনি চক্রান্ত।
অভিযোগ, ২০২২ সাল থেকে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে রাজ্যে সক্রিয় রয়েছে সিবিআই ও ইডি। তা সত্ত্বেও বেআইনি নিয়োগের জাল বোনার কাজ চলছিল। আর তার প্রমাণ হল সদ্য ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হওয়ার প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট ধৃত তৃণমূল যুব নেতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া।
একই দিনে কুন্তলের অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকা ও ফ্ল্যাটে ২৫০-রও বেশি ওএমআর শিট পাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন ইডির আইনজীবী। আবার কুন্তল টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়াতেও টাকা ঢেলেছিলেন কুন্তল। তিনি মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন। যদিও কুন্তলের আইনজীবীর দাবি, বাড়ি থেকে কোনও টাকার হদিশ মেলেনি। অ্যাকাউন্টে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তা কুন্তল ঘোষের ব্যাবসার। তার যথাযথ প্রমাণ পেশ করা হবে বলে জানান তিনি। আর ওএমআর শিট উদ্ধার প্রসঙ্গে বলেন, আরটিআই করে ওই ওএমআর শিট পেয়েছিলেন তিনি।