দিনাজপুরের বনেদি বাড়ির পুজোয় লুকিয়ে নানা অজানা ইতিহাস
দুর্গাপুজোর ইতিহাস শুরু হয় বিভিন্ন জমিদার বাড়ি বা বনেদি বাড়ি দিয়ে। দক্ষিন দিনাজপুর জেলাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু বনেদি বাড়ির ইতিহাস।
দুর্গাপুজোর ইতিহাস শুরু হয় বিভিন্ন জমিদার বাড়ি বা বনেদি বাড়ি দিয়ে। দক্ষিন দিনাজপুর জেলাতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু বনেদি বাড়ির ইতিহাস। আর বনেদি বাড়ির পুজোর কথা উঠলেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যে এক বাক্যে উঠে আসে তাহল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মনোহলীর জমিদার বাড়ির দুর্গোৎসব। মনোহলীর এই জমিদার পরিবারের জমিদারীর পত্তন করেছিল জমিদার তারাচাঁদ বন্দোপাধ্যায়।
এবং এই জমিদার পরিবারের প্রথম দুর্গাপূজার উদ্যোগ নিয়েছিলেন রমেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কালের নিষ্ঠুরতায় জমিদারও নেই তার পুজোর সেই ঘটি বাটও নেই। বর্তমানে এই জমিদার বাড়ির ঠাকুর দালানের ভগ্নপ্রায় অবস্থা আছে। ঠাকুর দালানটি এখন কয়েকশো পায়রার আস্থানা হয়ে আছে। সেইসব পায়রার ডিম ও পালকে ঠাকুর দালান এখন পরিপূর্ণ। খসে পড়ছে এই বাড়ির দেওয়ালগুলি।
ধংসের মুখে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাসের একটি অধ্যায়। জানা যায় আনুমানিক একশ সাতাশ বছর পূর্বে তপনের মনোহলীর জমিদার বাড়িতে রমেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও যোগেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে প্রথম দুর্গোৎসব হয়। বর্তমানে এই জমিদার পরিবারের সকল শরিকেরা বাইরে চলে যাওয়াতে এখন আর এই পরিবারের কাউকে পুজোতে সেভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় না।
মনোহলী গ্রামের বাসিন্দারা এখন এই জমিদার বাড়ির পুজোকে সার্বজনীন বারোয়ারি পুজো কমিটি তৈরি করে সার্বজনীন রুপ দিয়েছে। তারাই জমিদার বাড়ির চিরাচরিত রীতি ও প্রথা মেনে দুর্গা পুজোটি করে থাকেন। এখনো শতবর্ষর প্রাচীন এই পূজো সেই শতাব্দী প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই হয়ে থাকে বলে গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
দুর্গাপুজো ২০১৯ : বাকিংহ্যাম প্যালেস দেখতে হলে লন্ডন নয়, চলে আসুন বারাসতের রথতলায়
জানা যায় জমিদার ঘরানা থাকাকালীন তপন এলাকার আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ এই পুজো দেখতে আসতেন । এবং পুজোতে অংশগ্রহণ করতেন সেই সময় পুজোর কটাদিন এলাকার কারো বাড়িতেই রান্না হত না সকলেই জমিদারের অতিথি হিসেবে জমিদার বাড়িতে অন্ন গ্রহন করতেন। এছারাও জমিদার বাড়ি থেকে তৎকালীন সময়ে গ্রামের মানুষজনদের পরবি দেওয়া হতো পূজোর দিনগুলিতে সকলেকে সমান ভাগে ভাগ করে। উৎসবমুখর হয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালন করার জন্য। বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে জমিদার বাড়ির যেমন ভগ্নপ্রায় দশা, জমিদার বাড়ির ঠাকুর দালানের অবস্থাও তথৈবচ। তবুও এই জমিদার বাড়ির দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মানুষজনের উৎসাহ ও উন্মাদনার বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি