ইতিহাস আর আভিজাত্যের মিশেল মুর্শিদাবাদ কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়ির দুর্গাপুজো
মুর্শিদাবাদ জেলার বনেদি বাড়ির পুজোর অন্যতম হল কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়ির পুজো।
মুর্শিদাবাদ জেলার বনেদি বাড়ির পুজোর অন্যতম হল কাশিমবাজারের ছোট রাজবাড়ির পুজো। সেই রাজা ও রাজ্যপাট না থাকলেও রয়ে গিয়েছে ঐতিহ্য ও পরম্পরা। এই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রেখেছে কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ি পুজোকে।
পুজোর ইতিহাস
তখন বাংলায় আলিবর্দি খাঁর আমল। অধুনা বাংলাদেশের ফিরজপুর থেকে বহরমপুরের কাছে কাশিমবাজার চলে আসন অযোধ্যারাম চ্যাটার্জি। সেটা ১৭৪০ সাল। তিনি শুরু করেন রেশমের ব্যবসা। তার ছেলে দীনবন্ধু। এই এলাকায় তখন ব্রিটিশ সরকার রাজত্ব শুরু করেছে। তাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করেন দীনবন্ধু। তাকে রেশম কুটিরের প্রধান হিসাবে ঘোষণা করে ব্রিটিশ সরকার।
রায় পদবী গ্রহণ
তাদের আনুকূল্যে ফুলে ফেঁপে ওঠে ব্যবসা। ১৭৯৯ সালে তাদের দেওয়া হয় জমিদারি স্বত্ব। সেই সঙ্গে রায় উপাধি। সেই থেকে রায় পদবী ব্যবহার করছেন এই পরিবারের সদস্যরা। তৈরি করা হয় বিশাল এলাকা জুড়ে অট্টালিকা।
ছোট রাজবাড়ি
যা পরিচিত কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ি হিসাবে। সেই সময় থেকেই এখানে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এই বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম কলকাতা নিবাসী হলেও পুজো র সময়ে জেগে ওঠে এই বাড়ি। জমিদার বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম, প্রশান্ত রায়, স্ত্রী সুপ্রিয়া ও সন্তানদের সাথে এই রাজবাড়িতে পুজো কাটান।
কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু
রথের দিন কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে এখানে পুজোর সূচনা হয়। ওই দিনই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। চতুর্দশীর দিন প্রতিমার গায়ে রঙ লাগে। মহালয়ার দিন বেদিতে তোলা হয় মাকে। শুক্লা পঞ্চমী থেকে প্রতিপদ পর্যন্ত ছজন পুরোহিত পুজো করেন।
রয়েছে নানা আচার
ষষ্ঠীর দিন আমন্ত্রণ, অধিবাস ও বোধন। সপ্তমীর দিন সকালে নবপত্রিকা গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হয়। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও সন্ধিপুজো হয়। প্রাচীন রীতি মেনেই সপ্তমী থেকে নবমী এই তিন দিন এখানে কুমারী পুজো হয়। যা রাজবাড়ির মহিলারা করেন। দশমীর দিন হয় অপরাজিতা পুজো। আগে বলি হলেও এখন হয় না। এখন মাছ মিষ্টি নিবেদন করা হয় মাকে। কয়েক বছর আগেও নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হতো। তা এখন অতীত। তবে রয়ে গিয়েছে জাঁকজমক ও ঐতিহ্য।
কীভাবে পৌঁছবেন
বহরমপুর শহর থেকে খুব সহজে যাওয়া যায় কাশিমবাজার। আশেপাশে হাজারদুয়ারি সহ অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান আছে। ঘুরে নেওয়া যাবে সেগুলো। আর কাশিমবাজার স্টেশনের কাছেই আছে ডাচ সিমেট্রি। দেখে নেওয়া যায় সেটাও। আর কাশিমবাজারে আছে বহু পুরানো এক শিব মন্দির। তার আকর্ষণ কম নয়।
[২০২০ সালের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট! চোখ বুলিয়ে নিন তারিখ-দিন-ক্ষণে]
[ মহাষষ্ঠীর আমেজে বৃষ্টির 'অনুষ্ঠান সূচি' কী বলছে! জেনে নিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস ]