করোনা ভাইরাসের ভ্রুকুটি ও আম্ফানের দাপটে এ বছর জৌলুশহীন বাঙালির প্রিয় জামাই ষষ্ঠী
করোনা ভাইরাসের ভ্রুকুটি ও আম্ফানের দাপটে এ বছর জৌলুশহীন বাঙালির প্রিয় জামাই ষষ্ঠী
ইস্ত্রি করা পাঞ্জাবি–পায়জামা অথবা ধুতি–পাঞ্জাবি পরে হাতে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে জামাই চলেছে শ্বশুড়বাড়ি, জামাই ষষ্ঠীর ভোজ খেতে। সকাল থেকে উপোস শ্বাশুড়ি মাও জামাই আদরের কোনও ত্রুটি রাখতেন না। জলখাবারে লুচি–বেগুনভাজা, পাঁচ রকমের মিষ্টি থেকে শুরু করে মধ্যাহ্নভোজনে থাকত ভাত, সোনা মুগের ডাল, ইলিশ, পাবদা, মাংস, চিংড়ির নানা পদ। সঙ্গে আম, জাম লিচু সহ ফলমূলের বাহার। ধান–দুর্বা দিয়ে জামাই বাবাজিকে আশীর্বাদের মাধ্যমে শ্বাশুড়িদের অলক্ষ্যে এটাই কামনা ছিল যে তাঁদের বাড়ির মেয়ে যেন সুখে–শান্তিতে থাকতে পারে। গত বছর পর্যন্ত বাঙালির ঘরে ঘরে এই দৃশ্য চোখে পড়েছে। কিন্তু এ বছর বেশিরভাগ জামাই শ্বশুড়বাড়িতে জামাই ষষ্ঠী সারতে যেতে পারেননি। কারণটা হল দেশজুড়ে চলা করোনা ভাইরাসের চোখ রাঙানি ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দাপট।
এ
বছরের
শুরুতেই
রাজ্যের
দরজায়
কড়া
নেড়ে
প্রবেশ
করেছে
করোনা
ভাইরাস,
যার
জেরে
লকডাউন।
অনেক
শ্বাশুড়ি
ও
জামাইরা
ভেবেছিলেন
তৃতীয়
দফার
লকডাউন
উঠে
গেলে
জমিয়ে
জামাই
ষষ্ঠীতে
ভুরিভোজ
করা
হবে।
কিন্তু
সব
ইচ্ছায়
জল
ঢেলে
দিয়ে
মোদী
ঘোষণা
করেন
চতুর্থ
দফার
লকডাউন।
এ
বছর
নমো
নমো
করে
বাঙালিরা
পয়লা
বৈশাখ
সেরেছে,
ইদও
পালন
হয়েছে
বাড়ি
বসেই।
আর
জামাই
ষষ্ঠীতে
অনেক
জামাই
শ্বশুড়বাড়িতে
যেতে
পারেননি।
তাই
চরম
মন্দার
কবলে
পড়েছেন
ব্যবসায়ীরা।
ফল–মিষ্টি–সবজি–মাছ
ও
হাতপাখা
গড়ার
কারিগরদের
মাথায়
হাত
পড়েছে।
এ বছর রীতিমতো জৌলুশহীনভাবেই তাই পালন হয়েছে বাঙালিদের এই অতি পরিচিত উৎসব। লকডাউনের মধ্যে কিছু কিছু বাঙালি বাড়িতে অত্যন্ত সাদামাটা ভাবেই পালন হয়েছে জামাই ষষ্ঠীর রীতি। একে তো করোনা ভাইরাসের জন্য মাছের বাজারেও সেভাবে মাছ পাওয়া যায়নি, তার ওপর আম্ফানের কারণে বহু আমের ক্ষতি হয়েছে। যার জন্য ভালো আমও সেরকমভাবে বাজারে পাওয়া যায়নি। বাঙালি মধ্যবিত্ত তাই কোনওরকমে এ বছর জামাই ষষ্ঠী সেরেছে। আম ছাড়াও লিচু ও কাঁঠালের দামও বেশ আকাশ ছোঁয়া যার জন্য ক্রেতারাও যেমন কিনতে পারছেন না তেমনি লোকসান হচ্ছে বিক্রেতাদেরও।
বাড়িতে ষষ্ঠীর আয়োজনের পাশাপাশি অনেক রেস্তোরাঁও জামাই ষষ্ঠীর জন্য বিশেষ পদের ব্যবস্থা করে। কিন্তু লকডাউনের জন্য সেই বিকল্প রাস্তাও এখন বন্ধ। অনেক শ্বশুড়বাড়িতেই জামাই ষষ্ঠীর অনুষ্ঠান পরে পালন করা হবে বলে এখন স্থগিত রেখেছে। জামাইরাও তাই সেই দিনের অপেক্ষাতেই রয়েছেন যেদিন শাশুড়ির হাতে তৈরি পঞ্চব্যঞ্জন খেয়ে নিজেদের রসনা তৃপ্তি করবেন।
আরও ২ সপ্তাহ লকডাউন বাড়ুক, লোকাল ট্রেন-মেট্রো চলাচলে মত নেই, কেন্দ্রকে জানালেন মুখ্যসচিব