বাদ পড়ে সিপিএমের ‘হেভিওয়েট’ নেতার ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে
রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়ে দলে কার্যত ‘ফ্রি’ হয়ে দীর্ঘদিনের সঙ্গী ‘বাহন’কে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকার।
সম্প্রতি পার্টির রাজ্য সম্মেলনে তিনি বাদ পড়েছেন সম্পাদকমণ্ডলী থেকে। জেলা সম্পাদকের ব্যাটন আগেই তুলে দিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের হাতে। তাই দলে কার্যত 'ফ্রি' হয়ে তিনি এবার এতদিনের সঙ্গী 'বাহন'কে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের গাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্তে সিপিএমেই এখন গুঞ্জন উঠেছে। তবে কি সম্পাদকমণ্ডলীর থেকে বাদ পড়া তিনি স্বাভাবিকভাবে মানতে পারছে না!
[আরও পড়ুন:বিজেপির মিশন বাংলা, পঞ্চায়েতকেই পাখির চোখ করতে প্রস্তুত অমিত-পরিকল্পনা]
এমনকী জেলা সম্পাদকের পদ ছাড়ার পরও তিনি তাঁর প্রিয় গাড়ি ছাড়েননি। বিরোধীরা তাঁর দামি গাড়ি চড়া নিয়ে বারবার কটাক্ষ করেছেন, তবু তিনি সেসব কেয়ারও করেননি। এবার এমন কী হল, তিনি রাজ্য সম্মেলন থেকে ফিরেই গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন? জবাব দিলেন নিজেই।
জেলা সম্পাদক পদ ছাড়ার পর তিনি গাড়ি না দেওয়ায় নতুন করে গাড়ি কিনতে হয়েছিল নয়া সম্পাদক তরুণ রায়ের জন্য। এবার দীপকবাবু গাড়ি ছেড়ে বার্তা দিলেন দলকে। সিপিএমে তা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে, তাহলে কি দলের কাজে তাঁকে আর আগের মতো পাওয়া যাবে না। দলের এই দুর্দিনে তিনি কি তবে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে চলেছেন?
নিজেই অবশ্য তা পরিষ্কার করে দিলেন। দীপকবাবু বলেন, 'এখন তো আর আগের মতো নিয়মিত বের হতে হবে না। দল যখন ডাকবে, তখনই ঠিক হাজির হয়ে যাব। মিটিং থাকলে আগে থেকে অফিসে বলব, গাড়ি পাঠিয়ে দেবে। কোনও অসুবিধাই হবে না। বরং যাঁরা এখন নিয়মিত কাজের মধ্যে থাকবেন, তাঁদের গাড়ি দরকার বেশি। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম।'
তিনি বলেন, 'পার্টি যেমন দায়িত্ব দেবে, তা রূপায়ণ করব। একইরকমভাবে সময় দেব পার্টির কাজে। পার্টি কংগ্রেসের পরই তাঁর দায়িত্বও স্থির হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই আর আগের মতো সময় দিতে হবে না।' অর্থাৎ একপ্রকার অবসরের বার্তা দিয়ে দিলেন দীপকবাবু।
উল্লেখ্য ১৯৬৩ সাল থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে। তারপর ১৯৯৩ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন ২০১০-এ। সম্প্রতি ৭৫ অধিক বয়স হয়ে যাওয়াতেই তাঁর ছুটি হয়ে যায় সম্পাদকমণ্ডলী থেকে।