মত-পথ পাল্টালেও আজও অনেকের মনের মণিকোঠায় প্রিয়-দা’র স্থান, স্মৃতিমেদুর দীপা
আজ অনেক কথাই মনের কোণে উঁকি দিচ্ছে তাঁর। তাঁর স্মৃতি-তর্পণে সবথেকে অবাক করা কথাটা ছিল, ‘রাজনীতির কথা শুনলেই অসুস্থ প্রিয়রঞ্জন মাথা নাড়তেন।’
'দীর্ঘ ন-বছর একটা বিশ্বাসেই আটকে ছিলাম, এবার বোধহয় অলৌকিক কিছু ঘটবে! লড়াকু নেতা প্রিয়দা আবার জীবন-যুদ্ধে জয়ী হবেন। ফিরে আসবেন স্বমহিমায়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অবশেষে জীবনযুদ্ধে হেরেই গেলেন প্রিয়দা।' স্বামীকে হারিয়ে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে যাচ্ছিলেন দীপা দাশমুন্সি।
[আরও পড়ুন:শেষযাত্রায় প্রিয়রঞ্জন, শোকাচ্ছন্ন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা, বিকেলে রায়গঞ্জে শেষকৃত্য]
আজ অনেক কথাই মনের কোণে উঁকি দিচ্ছে তাঁর। তাঁর স্মৃতি-তর্পণে সবথেকে অবাক করা কথাটা ছিল, 'রাজনীতির কথা শুনলেই অসুস্থ প্রিয়রঞ্জন মাথা নাড়তেন।' এ প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, 'এই ন-বছরে অনেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন, অনেকে দেখা করতে আসেননি। কেউ খোঁজ নিতেন, কেউ নিতেন না।'
দীপা বলেন, 'তবু আজ এটা ভেবেই ভালো লাগছে যে, যাঁরা তাঁর হাত ধরে রাজনীতির আঙিনায় প্রবেশ করেছিলেন, আজ তাঁদের মত ও পথ বদলে গেলেও, তাঁদের মনের মণিকোঠায় এখনও রয়ে গিয়েছেন প্রিয়-দা। আজ প্রিয়-দা নেই, এটাই আমার চলার পথের এক মাত্র পাথেয় হয়ে রয়ে যাবে।'
এদিন
প্রিয়রঞ্জনের
দেহ
নিয়ে
কলকাতায়
ফেরেন
স্ত্রী
দীপা।
সঙ্গে
ছেলে
মিছিল।
আরও
অনেক
তাবড়
নেতা-নেত্রীরা।
প্রিয়রঞ্জনের
মরদেহে
শেষ
শ্রদ্ধা
জানাতে
পৌঁছে
যান
রাজ্যের
অনেক
নেতা-নেত্রীরা।
দলমত
নির্বিশেষে
সবাই
আসেন
বিধানভভনে
কিংবা
তাঁর
রানি
ভবানি
রোডের
বাড়িতে।
এখানে
সজল
চোখে
দীপা
জানালেন,
তাঁর
ন-বছরের
লড়াইয়ের
কথা।
দুঃখ-যন্ত্রণার
কথা।
২০০৮-এ
হৃদরোগে
আক্রান্ত
হওয়ার
পর
হাসপাতালে
ভর্তি
হয়েছিলেন
প্রিয়রঞ্জন।
যত
দিন
গিয়েছে
জীবনের
লড়াইয়ে
ক্রমশ
পিছিয়ে
পড়েছে
লড়াকু
প্রিয়-দা।
শরীরে
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
আসতে
আসতে
বিকল
হয়েছে,
জীবনমৃত
অবস্থায়
কেটেছে
ন-বছর।
কাউকে
চিনতে
পারতেন
না।
তবু
হাল
ছাড়েননি
দীপা।
মনের
কোণে
এক
চিলতে
আশা
নিয়েই
একাকী
লড়াই
করে
গিয়েছেন
প্রিয়-ঘরণী।
ডাক্তাররা বলেছিলেন, চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী কোনও উপায় নেই। এবার যদি মিরাক্যাল ঘটে। কিন্তু মিরাক্যাল ঘটল না। তাই স্বমহিমায় তাঁর আর ফেরা হল না। রায়গঞ্জের মাটিতে তিনি ফের ফিরলেন ন-বছর পরে। শকটে চড়ে, কফিনবন্দি হয়ে। এতদিন যে চোখ অপলক দৃষ্টিতে চেয়েছিল, সেই চোখ আজ বন্ধ। চিরনিদ্রায় শায়িত সকলের প্রিয় প্রিয়রঞ্জন।