মুকুলের দিকে চলে গেল সবাই, দিলীপ রইলেন ‘একা’! এই হল বিজেপির হালহকিকৎ
মুকুলের দিকে চলে গেল সবাই, দিলীপ রইলেন ‘একা’! এই হল বিজেপির হালহকিকৎ
বিজেপিতে আমূল বদল এসেছে। ক্রমেই মুকুল রায়ের হাতে চলে এসেছে বঙ্গ বিজেপির রাশ। স্থানীয় নেতৃত্ব তাই মুকুল পানেই ধেয়ে চলেছে সবাই। তাঁদের 'নেতা' যে একা পড়ে, তা কেউ দেখলেনই না! মুকুল দল ভারী করলেন বিজেপিতে, আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি পড়ে রইলেন একা। এটাই হল বর্তমানে বঙ্গ বিজেপির চালচিত্র!
মুকুল এগিয়ে চলেছেন, পিছনে পড়ে দিলীপ
সম্প্রতি মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি নিযুক্ত হয়েছেন। পদাধিকারী হিসেবে তিনি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে। আর বাংলায় তৃণমূলকে মাত দিতে কেন্দ্রীয় বিজেপি ভরসা করছেন মুকুলের উপর। এই দুই শক্তি জমি পেয়ে মুকুল রায় তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছেন বাংলার মাটিতে। দিলীপ ঘোষ অনেকটাই পিছনে পড়ে থাকছেন।
মুকুল আর মুকুলের অনুগামীরাই চতুর্দিকে
বৃহস্পতিবারের নবান্ন অভিযান তেমনই কিছু ছবি দেখিয়ে দিয়ে গেল। এটা যেন বিজেপির নবান্ন অভিযান নয়, আদতে মুকুল রায়ের শক্তি প্রদর্শনে পরিণত হয়েছিল। কলকাতা বা হাওড়া বিজেপির বিক্ষোভ মিছিল শুধু মুকুলময়, মুকুলের অনুগামীরাই রয়েছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। দিলীপ ঘোষ থেকেও নেই। আর রাহুল তো নেই-ই!
দিলীপকে ছেড়ে মুকুলের পাশে অর্জুন
প্রথমে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দলের সদর দফতর থেকে বিক্ষোভ মিছিলে যাবেন। দেখা যায় অর্জুন সিং তাঁর সমর্থকদের নিয়ে বড়বাজারের পরিবর্তে হেস্টিংসে পৌঁছে যান। সেখানে বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের আরেক প্রাক্তন নেতা মুকুল রায়। সম্প্রতি তাঁকে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
শঙ্কু-সব্যসাচী মেনন-কৈলাশের পাশে
বিজেপি ঠিক করেছিল বড়বাজার, হেস্টিংস, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং সাঁতরাগাছি- এই চারটি স্থান থেকে রাজ্যের সচিবালয়ের নবান্নের দিকে প্রতিবাদ মিছিল আছড়ে পড়বে। এরই মধ্যে দেখা যায়, তৃণমূলের দুই প্রাক্তন নেতা- শঙ্কুদেব পান্ডা ও সব্যসাচী দত্ত মুকুল রায়ের সঙ্গে দিল্লি থেকে আসা দুই কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন এবং বঙ্গ বিজেপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পাশে এসে উপস্থিত হন।
তৈজস্বী সূর্যের পাশে মুকুল-ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র
বিজেপির সর্বভারতীয় যুব মোর্চার সদ্য নিযুক্ত প্রধান এবং কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য হাওড়া ময়দানে ছিলেন। সেখানে সমাবেশের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাংসদ তথা বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভপতি তথা প্রাক্তন তৃণমলূ নেতা সৌমিত্র খান। ফলস্বরূপ দেখা যায় মুকুল রায় এবং তাঁর অনুগামীরাই তিনটি মিছিলেন অগ্রভাগে।
অর্জুন এলেন না, দিলীপ তাই ‘একা’!
আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ একমাত্র সিনিয়র নেতা, তিনি হাওড়া ব্রিজের নিকটবর্তী দলের সদর দফতর থেকে প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এককভাবে। তাঁর সঙ্গে অন্য কোনও সিনিয়র নেতা ছিলেন না। মুকুলপন্থী কোনও নেতা তো নয়ই। অর্জুন সিংয়ের থাকার কথা থাকলেও তিনি মুকুলের পাশেই চলে যান।
রাহুল সিনহা অনুপস্থিত পদচ্যুত হওয়ার পর
উল্লেখ্য, দলের সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহাকে দেখাই যায়নি মিছিলে। সম্প্রতি দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। বিগত এক বছরের মধ্যে পার্টির সবথেকে বৃহত্তম প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তিনি নেই। এই প্রথম তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় কোনও কর্মসূচিতে অনুপস্থিত হলেন।
প্রাক্তন সভাপতি টুইট করেছেন বাড়ি থেকে
রাহুল সিনহা এই প্রথমবারের মতো দলের রাজ্য-স্তরের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে সরে এসে তাঁর অনুপস্থিতিতে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেবল তিনি বলেছিলেন যে, তিনি বাড়িতে ছিলেন। তিনি অবশ্য বিজেপি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের জন্য তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে কয়েকটি টুইট পোস্ট করেন।
যোগী সরকার মুসলমান-দলিত-আদিবাসীদের মানুষ বলে গণ্য করে না, তোপ রাহুলের