সিআইডি দিয়ে তদন্ত করুন, গ্রেফতারি প্রসঙ্গে রাজ্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন দিলীপ
সিআইডি দিয়ে তদন্ত করুন, গ্রেফতারি প্রসঙ্গে রাজ্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন দিলীপ
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল উদ্ধার হয়েছে। তারপরই দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছে তৃণমূল। মঙ্গলবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই আওয়াজ তোলার পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন দিলীপ ঘোষও।
বুধবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, আগে তো তদন্ত শেষ হোক। তারপর তো গ্রেফতারির প্রশ্ন। আমি ওঁদের মতো চোর নাকি? কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ধরা পড়ে গেলেই আমরা বলি না পার্থ আমাদের কেউ না? এটা আমাদের নীতি নয়। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, দম থাকলে সিআইডি দিয়ে তদন্ত করাক।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, আমি তো প্রকাশ্যেই বলেছি, আমি প্রসন্নকে চিনি। একই পাড়ায় থাকি। প্রসন্নর বাড়িতে আমি নিজে দলিলের কপি রেখেছি। ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছি। কারও বাপের টাকায় ফ্ল্যাট কিনিনি। যেখানে ফ্ল্যাট কিনেছি, সেই হাউজিং সোসাইটির প্রধান প্রসন্ন রায়। ইলেকট্রিক মিটারের নাম চেঞ্জ করার জন্য আমি কপি ওকে দিয়েছি। একথা বারবার বলেছি আমি, তারপরও কেন গ্রেফতারির কথা। আমি চ্যালেঞ্জ করছি তদন্ত হোক।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহলে চপ ভাজা নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে ঝুঁকির কাজ করতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কেন যাচ্ছে? এই সরকার কাউকে চাকরি দেয় না, এ রাজ্যে চাকরি লুঠ হয়ে যায়। তাই তাঁরা ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। ভিনরাজ্যে তারা যাচ্ছে পেটের দায়ে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, জঙ্গলমগলের আদিবাসীদের সঙ্গে উনি প্রতারণা করেছেন। ভোটের আগে বলেছিলেন এক হাজার করে টাকা দেব। ভোট মিটতেই বললেন টাকা নেই। আমরা আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করেছি। সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। সেখানে ওনার গায়ের রং নিয়ে জাত নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী কুরুচিকর মন্তব্য করছেন, অপমান করছেন, হাসি-তামাশা করছেন। তাই আদিবাসী সমাজ আজ ওনার দিকে চোখ রেখে কথা বলছে। আবার তৃণমূল বলছে, বীরবাহাকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য বিজেপিকে ক্ষমা চাইতে হবে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, যে মন্ত্রী একথা বলেছেন, তিনি কি ক্ষমা চেয়েছেন? ক্ষমা চাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের মন্ত্রী থেকে রাজ্যপাল সম্পর্কে নানা সময় কটূ মন্তব্য করেছেন। তিনি যেসব কথা বলেছেন, তার জন্য কি ক্ষমা চেয়েছেন? অর্থাৎ উনি ওনার মন্ত্রীর করা মন্তব্যকে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাংলার কালচার উনি নষ্ট করছেন। শুভেন্দু বীরবাহাকে নিয়ে কী বলেছেন আমি জানি না। তা দল দেখবে।
কাঁথির বাড়ির সামনে শুভেন্দুকে না পেয়ে শিশির অধিকারীকে নানা কটূক্তি করা হয়েছে। এর আগেও কুণাল ঘোষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাষায় কথা বলে এসেছেন। শিশিরবাবু শুভেন্দু অধিকারীর বাবা। সেটা অপরাধ? যে পার্টিকে উনি ওখানে দাঁড় করিয়েছেন, শক্তি দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে কী ভাষায় কথা বলেছেন তৃণমূলের নেতারা? আর কারা বলছেন? তাঁর হাঁটুর বয়সি সব ছেলে। শিশিরবাবু এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের। তিনি বিজেপির কেউ নন।
এহেন দলবদল প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, মমতাও তো কংগ্রেসকে ধোঁকা দিয়ে আলাদা দল করেছেন। তাকেও একই ভাষায় বলা উচিত। আসলে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু ওনাকে হারিয়েছে, এটা ওনার হজম হচ্ছে না। তাই তিনি নানা কথা বলছেন। তৃণমূলের নেতারা সরব হচ্ছেন শুভে্ন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে।
রাজ্যের টাকা ফেরাতে মোদির পায়ে ধরার কথা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, পেটে টান পড়েছে, তাই পায়ে ধরার কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধরুন না পায়ে। বাংলার মানুষের জন্য না হয় পায়েই ধরলেন। আসলে উনি যে কিছু করেননি তা জঙ্গলমহলের মানুষ বুঝতে পেরে গিয়েছে। তাই বিগত নির্বাচনগুলিতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন জঙ্গলমহলের মানুষেরা। উত্তরবঙ্গের আদিবাসীরাও বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। উনি মাঝে মাঝে যান। ওদের সঙ্গে নাচেন। কিন্তু কেউ ভোট দেননা ওনাকে। সিবিআইকে বিচারপতির তলব প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, তথ্য চেপে দেওয়া হচ্ছে। প্রযোজনীয় নথি দেওয়া হচ্ছে না। আদালত ছাড়া এর সমাধান হবে না।
শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির সামনে জমায়েত নয়, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের