মুকুলকে ‘শিক্ষা’ দিতেই দিলীপের টার্গেটে সৌমিত্র! শেষে বঙ্গ বিজেপির সমীকরণ যা দাঁড়াল
মধুরেণ সমাপয়েৎ নাকি যুদ্ধের সবে শুরু! তা উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ। আপাতত বিজেপিতে প্রত্যাবর্তনের পর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ঝগড়া মিটিয়ে নিলেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। বিজয়া দশমীতে দিলীপের বাড়িতে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণামের পরই ঘূচল দ্বন্দ্ব। দিলীপবাবু ভাতৃসম সৌমিত্রকে স্নেহের আশিসও দেন। আপাতত কলহের নিবৃত্তি ঘটে।

সৌমিত্রকে টার্গেট করে শিক্ষা মুকুলকে!
রাজ্য রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা কিন্তু মনে করছেন, এখানেই শেষ নয়। আরও অনেক কিছউ বাকি রয়েছে। এটা স্রেফ নাটক মাত্র। যে লড়াই বিজেপিতে শুরু হয়েছিল মুকুল রায় আসার পর, এটা তাঁর একটা অঙ্গ মাত্র। যেখানে দিলীপ ঘোষ মাত দিলেন মুকুলকে। সৌমিত্রকে টার্গেট করে শিক্ষা দিলেন আসলে মুকুল রায়কে।

মুকুল রায়ই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছিলেন বিজেপিতে
সম্প্রতি মুকুল রায়ের গুরুত্ব বেড়েছে বিজেপিতে। তিনি তিন বছর পদহীন থাকার পর ২০২১-এর আগে সর্বভারতীয় সহসভাপতি হয়েছেন। পদাধিকার বলে তিনি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে। আর তার থেকেও বড় কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন বাংলার জন্য মুকুল রায়কেও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তার একটা বড় প্রভাব পড়ছে বঙ্গ বিজেপিতে।

দিলীপ ঘোষ একটু আড়ালে পড়ে গিয়েছিলেন, তাই...
মুকুল রায়-সহ তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতারা বিজেপিতে গুরুত্ব বেশি পাওয়ায় দলের আদি নেতারা উদ্যোগ হারিয়ে ফেলছে। মুকুলরে গুরুত্ব বাড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই দিলীপ ঘোষ একটু আড়ালে পড়ে গিয়েছেন। বিজেপির আর এক মুখ রাহুল সিনহা তো একেবারে বিচ্ছিন্ন বিজেপি থেকে। তার প্রমাণ দেখা গিয়েছে সম্প্রতি নবান্ন অভিযানে।

মুকুল-ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র খাঁয়ের ত্রুটি পেতেই পাল্টা দিলীপের
রাহুল সিনহার না হয় পদ নেই, তঁরা পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদর জন্য। কিন্তু দিলীপ ঘোষ তো এখনও রাজ্য সভাপতি বঙ্গ বিজেপির। তিনি কি মানবেন মুকুলের এই বাড়বাডন্ত! তাই মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র খাঁয়ের একটু ত্রুটি পেতেই তিনি পাল্টা দিয়েছেন। যার ফলে সৌমিত্রকে ছুটে যেতে হয়েছে দিলীপের কাছে।

জেহাদ ঘোষণা করেও সৌমিত্রকে ফিরে আসতে হয়েছে
সৌমিত্র খাঁয়ের ঘোষিত যুব মোর্চার কমিটি ভেঙে দিয়ে দিলীপ ঘোষ বুঝিয়ে দিয়েছে, তিনিই বাংলায় পার্টির সর্বেসর্বা। তাঁর কথাই শেষ কথা। তাই জেহাদ ঘোষণা করেও সৌমিত্রকে ফিরে আসতে হয়েছে। মুকুল রায় বা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ও তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন দেননি। তাই ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশের কয়েকঘণ্টা পরেই তিনি প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিয়েছেন।

ভালবাসার মানুষের সঙ্গে অভিমান হয়েছিল, বার্তা সৌমিত্রর
আর তারপর দিলীপ ঘোষের বাড়িতে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে বিজয়া সারলেন সৌমিত্র খাঁ। দিলীপ ঘোষও সৌমিত্র খাঁ-এর মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিলেন। আপাতত সন্ধি হয় উভয়ের। এবার নতুন কমিটি গঠনের পরই বোঝা যাবে আদতে কী হতে চলেছে পরিস্থিতি। আপাতত সৌমিত্র স্বীকার করে নিয়েছেন ভালবাসার মানুষের সঙ্গে অভিমান হয়েছিল তাঁর।

মা দুর্গার কাছে দিশা দেখানোর জন্য প্রার্থনা সৌমিত্রর
সৌমিত্র খাঁ বলেছিলেন, দল হল তাঁর কাছে পরিবারের মতো। সেখানে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তিনি তাই মা দুর্গার কাছে দিশা দেখানোর জন্য প্রার্থনাও করেছিলেন। সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে নিয়ে দিলীপ ঘোষের বাড়িতে বিজয়ার প্রণাম সারতে যান।

মুকুল রায়ের নির্দেশেই সৌমিত্র খা্ঁ দিলীপ-সকাশে!
সৌমিত্র খাঁ যাবতীয় তিক্ততা ভুলে আগামী নির্বাচনের জন্য আশীর্বাদ চেয়ে নেন দিলীপ ঘোষের কাছে। পাশাপাশি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সুস্থতাও কামনা করেন। দুজনে উপহার বিনিময়ও করেন। এসবই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা মুকুল রায়ের নির্দেশে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাই এর নেপথ্যে অন্য কোনও সমীকরণ আছে কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

বাংলা জয়ে ভূমিকা নেবে সিএএ, কৃষি বিল! গেম চেঞ্জার মুকুল রায়, বললেন রূপা