
অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকলেও ‘বিপজ্জনক’, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে রাখার পক্ষেও সওয়াল করলেন দিলীপ ঘোষ। তবে তিনি বলেন জেলে থাকলেও বীরভূমের বেতাজ বাদশা বিপজ্জনক বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমনে বেরিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

অনুব্রতকে জেলে রাখার সওয়াল দিলীপের
দিলীপ ঘোষ বলেন, অনুব্রত মণ্ডল যদি জামিন পান, তবে বীরভূমের ভোট শান্তিপূর্ণ হবে না। পঞ্চায়েত ভোট সেক্ষেত্রে রক্তাক্ত হতে পারে। তাই অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে রাখাই শ্রেয়। তবে জেলে থাকলেও বিপজ্জনক অনুব্রত মণ্ডল। গতবার বীরভূমে সাদা থান আর নকুলদানার দাওয়াই দিয়েছিলেন তিনি। তাই জেলে থাকলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করতে হবে।

অনুব্রতকে জামিনে ভোট শান্তিপূর্ণ হবে না
দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, বীরভূমের ব্যাপার তো আপনারা সবাই জানেন। খুব চেষ্টা চলছে, অনুব্রতকে জামিন করিয়ে নেওয়ার। উনি যদি জামিনে বেরিয়ে আসেন, তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে না। কারণ, এবার ওরা আরও দুর্বল। গতবারের চেয়ে ওদের অবস্থা খারাপ। তাই জয়ের জন্য হিংসাকেই আশ্রয় করবে শাসকদল তৃণমূল।

বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি কতটা তৈরি?
দিলীপ ঘোষের কথায়, শান্তিতে পঞ্চায়েত ভোট করতে গেলে অনুব্রতকে ভিতরে রাখার দরকার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। কিন্তু বিজেপি কতটা তৈরি? সেই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা তৈরি। জেলায় জেলায় বৈঠক চলছে। ৬ নভেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা আসবেন। সাংগঠনিক বৈঠকও শুরু হয়ে যাবে। এবার ৫০ শতাংশ তৃণমূল নির্দল হয়ে যাবে। যা গতবারের থেকেও বেশি। নিজেরাই প্রার্থী দেওয়া নিয়ে মারামারি করবে।

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা আগেরবারও চেয়েছিলাম, কিন্তু পাইনি। কারণ রাজ্য সরকার চায়নি। আগের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই এ রাজ্যে বিজেপি নজর কাড়তে শুরু করে। এবার আমরা অনেক বেশি প্রস্তুত। সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করব তৃণমূলের ভোট-সন্ত্রাসের। এ রাজ্যে ভোট শান্তিপুর্ণ হয় না। তৃণমূল রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করতে চাইছে। আমরাও মোকাবিলা করব। গত পঞ্চায়েতে ওরা এত শক্তি লাগিয়েও আটকাতে পারেনি। এবার আরও বেশি লড়াই হবে।

কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী, যুক্তি দিলীপের
দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই যাতে মানুষ সাহস করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভোট দিতে পারেন। আমাদের সাহায্য লাগবে না। আমাদের কর্মীরা যথেষ্ট। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই যেভাবে গ্রামে-গঞ্জে খুনোখুনি শুরু হয়ে গিয়েছে, তাতে শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়া নিয়ে সংশয় আছে। তাই এই বিষয়টি ভাবা দরকার নির্বাচন কমিশনের।

মমতার চেন্নাই সফর প্রসঙ্গে দিলীপ
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেন্নাই সফর নিয়েও মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, উনি প্রতি ভোটের আগে পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট হয়ে রাজ্যে রাজ্যে ঘোরেন। দুর্ভাগ্য ওনার যে, যাঁদের সঙ্গে উনি বৈঠক করেছেন, তাঁরা প্রায় কেউই ক্ষমতায় নেই। স্ট্যালিন আছেন, একমাত্র টিমটিম করে আছেন। অখিলেশ ডুবেছেন, লালু ডুবেছেন, শিবসেনাকে আশীর্বাদ করেছিলেন,ওরাও ডুবেছে। উনি এবার স্ট্যালিনকে ডুবিয়ে আসবেন।

পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বে কুণাল প্রসঙ্গে
গতকালই শুভেন্দু অধিকারীর গড় পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল দায়িত্ব দিয়েছে কুণাল ঘোষকে। সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, আজ পর্যন্ত কোনও নির্বাচন জিতেছেন বা জিতিয়েছেন কুণাল ঘোষ? ট্র্যাক রেকর্ডটা একবার দেখে নিন। তারপর ওনার কথা বলবেন। কোনও ফায়দা হবে না। পঞ্চায়েতই হোক বা লোকসভা বিজেপিই এবার জিতবে। তৃণমূলকে ছুড়ে ফেলে দেবে পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ।

পঞ্চায়েতের আগেই কি সিএএ, জবাব দিলীপের
পঞ্চায়েতের আগেই কি সিএএ বাস্তবায়িত হবে, এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, যেকোন সময়ে হতে পারে। রাজস্থান এবং গুজরাতে আগেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে এই সরকার থাকলে সিএএ লাগুর সম্ভাবনা কম। এরা উদ্বাস্তুদের ভোট নেবে। তাদের জন্য কিছু করবে না। সরকার বদল হলে দেখা যাবে। তিনি বলেন, গুজরাতে বিজেপিই জিতবে।
বিজেপিকে হোয়াইট ওয়াশ করাই লক্ষ্য শুভেন্দু-দিলীপের গড়ে, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কৌশলী তৃণমূল