মুকুল রায়কে থোড়াই কেয়ার! দিলীপ ঘোষ বোঝালেন তিনিই অধিনায়ক, মুকুল দ্বাদশ ব্যক্তি
বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই ব্যাখ্যা প্রকারান্তের মুকুল রায়কেই বার্তা দেওয়া। কেননা, মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েই পরিবর্তনের আওয়াজ তুলেছিলেন।
মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিতেই সুর বদলে গিয়েছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। এখন আর মুকুল রায়কে 'তোয়াক্কা' করছেন না তিনি। রবিবার ঝাড়গ্রামের এক অনুষ্ঠানে মুকুল রায়কে তিনি অতিরিক্তের তালিকায় ফেলে দিলেন। তিনি সাফ জানান, 'বিজেপিতে ভাত-ডাল-সবজির ব্যবস্থা রয়েছে। যা খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি। আর চাটনি হলে আমরা খুশি হই।'
মুকুল রায়কে দলে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের ব্যাখ্যায় অন্যরকম গন্ধ পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। মুকুল রায়কে তিনি এদিন চাটনির সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, 'বাড়িতে ভাত, ডাল ও সবজি খেয়েই আমরা সুস্থ থাকি। যদি চাটনি হয় আমরা খুশি হই। কিন্তু মনে রাখতে হবে চাটনি কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। ওটা খেয়ে কেউ বাঁচেও না।'
দিলীপ ঘোষের কথায়, 'মুকুল রায়-রা দলে আসার অর্থ চাটনি-পায়েস হওয়া। জাস্ট অ্যাডিশন, আর কিছু না।' তিনি বলেন, 'বিজেপির কর্মীদের উপর আমাদের ভরসা আছে। বিজেপির কার্য পদ্ধতির উপর বিশ্বাস আছে। তাতেই আমরা রাজ্যে পরিবর্তন আনতে পারি। আমাদের শক্তির জোরে সারা ভারতে আমরা পরিবর্তন করেছি। এবার পশ্চিমবঙ্গেও সেই পরিবর্তন আনব।'
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই ব্যাখ্যা প্রকারান্তের মুকুল রায়কেই বার্তা দেওয়া। কেননা, মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েই পরিবর্তনের আওয়াজ তুলেছিলেন। সেই পরিবর্তন আনতে তিনি নেতৃত্ব দেবেন এমনই আভাস ছিল তাঁর কথায়। দিলীপ ঘোষ তাই এদিন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, মুকুল রায় ছাড়াই বিজেপি পরিবর্তন আনতে পারে। মুকুল রায়-রা কোনও ফ্যাক্টর নন।
শনিবার মেদিনীপুরের সভায় দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, মুকুল রায় নন, তিনিই ভাঙবেন তৃণমূলকে। তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে বিজেপিতে যোগ দেবেন। তাঁর কথায় ফুটে উঠেছিল, মুকুল রায় দলে যোগ দিতে পারে, কিন্তু তিনিই বস। এদিনও তিনি সেই বার্তাই দিলেন। মুকুল রায় শুধু দল ভারী করতে এসেছেন। বিজেপির যা শক্তি, তাতে তৃণমূলকে হারানোর পক্ষে যথেষ্ট।
এদিন ঝাড়গ্রামে জেলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মানুষ যাঁদের হাতে টিভির পর্দায় টাকার বাণ্ডিল দেখেছেন, তাঁদের কখনও বিশ্বাস করবে না। শাসক দলের নেতাদের নাম উঠে এসেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আমাদের দলের লোকও যদি জড়িয়ে যায় সেই ঘটনায়, তাঁকে ছেড়ে দেবে না দল। তাঁর কথায়, রাজ্যে পরিবর্তনের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তাই দলবদলের প্রবণতা বেড়েছে।' রাজ্যের সব জেলা থেকেই তৃণমূলের বিধায়ক-সাংসদরা যোগাযোগ করছেন বলে তিনি জানান।