শোভনকে পেতে দিলীপ খাটো হতেও পিছপা নন, অবশেষে মাস্টারস্ট্রোক নয়া সিদ্ধান্তে
এখন পর্যন্ত তৃণমূল ভেঙে যে ক-জন হেভিওয়েট নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবথেকে বড় দুই নাম অবশ্যই মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। মুকুল রায়কে সক্রিয় করা গিয়েছে কৈলাশ স্পর্শে।
এখন পর্যন্ত তৃণমূল ভেঙে যে ক-জন হেভিওয়েট নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবথেকে বড় দুই নাম অবশ্যই মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। মুকুল রায়কে সক্রিয় করা গিয়েছে কৈলাশ স্পর্শে। এবার শোভনকে সক্রিয় করার পালা বিজেপিতে। সেজন্য মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করতে
দিলীপ ঘোষ একান্তভাবেই চাইছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতা পুরসভা ও ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে সক্রিয় হয়ে উঠন বি্জেপিতে। শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তাদের দরকার। সেই কারণেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করতে তিনি আসল কাজটা করে দিয়েছেন। এবার শোভনের সক্রিয় হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
বৈশাখী যেন অনুকম্পার পাত্রী না হন
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে নিষ্ক্রিয় হওয়ার মূলে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াও বৈশাখীর জন্য। তিনি সর্বদা চেয়েছেন বৈশাখী যেন তাঁর অনুকম্পার পাত্রী না হন। শোভন আছে বলে বৈশাখীর কদর, তা যেন না হয়। বৈশাখীর আলাদা রাজনৈতির পরিচিতি ঘটাতে চেয়েছেন শোভন।
শোভনের সঙ্গে ‘ফ্রি' নন বৈশাখী
কিন্তু বিজেপিতে গিয়েও সেই ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। বিজেপি নেতৃত্বও বৈশাখীকে শোভনের সঙ্গে ‘ফ্রি' নেত্রী হিসেবে ভেবেছিল। এমনকী দিলীপ ঘোষ ‘ডাল-ভাত' মন্তব্যও করে বসেছিলেন। তাঁর ওই ‘ডাল-ভাত' মন্ত্যবই জল ঢেলে দিয়েছিল শোভন-বৈশাখীর উৎসাহে। তারপর বিজেপিতেও তাঁরা অজ্ঞাতবাসে চলে গিয়েছিলেন!
তাই শোভন রয়ে গিয়েছিলেন অন্তরালেই
এরপরও শোভনকে বিজেপির কর্মসূচিতে চেয়ে বারবার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে বিজেপি। কিন্তু শোভন আসেননি। শোভন রয়ে গিয়েছেন অন্তরালেই। এর মধ্যে তৃণমূলও বহুবার চেষ্টা করেছে শোভকে ঘরে ফেরানোর। কিন্তু তিনি ফেরেননি। দিদির বাড়িতে গিয়ে ভাইফোঁটা নিয়ে আসার পরও তাঁর ফেরা হয়নি। ফেরা হয়নি বৈশাখী মমতা সকাশে বৈঠক করে আসার পরও।
বৈশাখী-প্রশ্নে এককাট্টা থেকেছেন শোভন
বিশেষজ্ঞমহল মনে করছে, এসবের পিছনে রয়েছে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব না পাওয়া। বিজেপি বা তৃণমূল- উভয়েই বৈশাখীকে শোভনের সঙ্গে ভেবেছে, আলাদা করে ভাবেনি। তাই শোভনেরও ফেরা হয়নি, না বিজেপিতে, না তৃণমূলে। বারবার তাঁকে নিয়ে জল্পনা হয়েছে, শোভন রয়ে গিয়েছেন একই জায়গায়! বৈশাখী-প্রশ্নে তিনি এককাট্টা থেকেছেন।
কর্মসমিতিতে স্থান পেয়েও নাখুশ শোভন
অরবিন্দ মেননের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর বরফ গলে খানিকটা। তারপর তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে ইঙ্গিতও দেন সক্রিয় হওয়ার। তা বুঝেই বিজেপি রাজ্য কর্মসমিতিতে তাঁকে স্থান দি্য়েছিল। তারপরও জট পাকিয়ে যায় সবকিছু। শোভন প্রতিবাদ করে বলেন, তাঁকে জানানোই হয়নি এই ব্যাপারে। তিনি যে কর্মসমিতিতে স্থান পেয়ে নাখুশ তাও জানিয়ে দেন শোভন।
শোভনের সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার দরজা খুলে গেল!
এরপরই বিজেপির রাজ্য সভাপতি আসল চালটা দেন। তিনি তাঁর নেতৃত্বাধীন রাজ্য কর্মসমিতিতে ঘোষণা করে দেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, এরপর নি্শ্চয়ই শোভন সক্রিয় হবেন। কেননা শোভন চাইছিলেন শুধু তাঁকে নয়, যেন বৈশাখীকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই বৈশাখী গুরুত্ব পেতে শোভনের সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার দরজা খুলে গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।