২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভোলবদল দিলীপের, বিজেপিতে যোগ দিয়েই কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে মুকুল
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিলেন, ‘মুকুল রায় নন, তৃণমূল ভাঙবে আমার হাত ধরেই।’
বিজেপিতে নাম লেখানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন মুকুল রায়। শুক্রবার বয়ান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিলেন, 'মুকুল রায় নন, তৃণমূল ভাঙবে আমার হাত ধরেই।' শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায় একটি অনুষ্ঠানে দিলীপবাবু সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মুকুল রায়ের উদ্দেশ্যে।
শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দিয়েই মুকুল রায় রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন ২০২১-এর মধ্যেই রাজ্যে আবার পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। এদিন তিনি স্থির করে দেন পঞ্চায়েতই তাঁর পাখির চোখ। নাম না করে মমতাকে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন মুকুল রায়। তারপরই বেলদার সভা থেকে দিলীপ ঘোষ হুঙ্কার ছাড়েন, 'তৃণমূল ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। তবে মুকুল রায়ের হাত ধরে নয়, আমার হাত ধরেই ভাঙবে তৃণমূল। আমার হাত ধরেই তৃণমূল নেতারা বিজেপিতে আসবে।'
এদিন তৃণমূলকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'সিভিক পুলিশ আদতে তৃণমূলের ক্যাডার। গোটা রাজ্যে তৃণমূলের আমলে তোলাবাজিতে ভরে গিয়েছে। রাজ্যজুড়ে তৃণমূল নেতারা তোলাবাজি চালাচ্ছেন। রাজ্যে অরাজকতা চলছে। এ থেকে মুক্তি দিতেই হবে রাজ্যকে। আর তা দেবে বিজেপিই।'
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্য নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়েই মুকুল রায়কে দলে বরণ করে নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিল্লিতে সদর দফতরে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরই তাঁর গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে দলে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এরপর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও মুকুল রায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ভোলবদলে মুকুল রায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি সাফ জানালেন তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল ভাঙবে। এদিন দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মুকুলের হাত ধরে আর কে কে আসছেন বিজেপিতে। তাঁর উত্তরেই দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দেন, 'মুকুল রায় নন, তৃণমূলকে ভাঙবেন তিনিই।'
মুকুল রায় বিজেপিতে গেলে, তাঁর হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ভিড় জমবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখনও পরিষ্কার নন মুকুল রায়ের পরে এখনই আর কেউ বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না। মুকুল রায় আদৌ তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে কাউকে আনতে পারবেন কি না, তা নিয়েই এখন প্রশ্নচিহ্ন।
বিজেপিও মনে করেছিল মুকুলের সঙ্গে অনেকেই আসবেন। কিন্তু আদতে তৃণমূল ছেড়ে কেউ আসেননি গেরুয়া শিবিরে। তাই এখন থেকেই যে মুকুলকে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে তাঁর নয়া দলে, তা পরিষ্কার। বিজেপি রাজ্য সভাপতিও সুর বদলে বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও দলে গুরুত্ব হারানোর পাত্র নন। ছড়ি তিনিও ঘোরাতে জানেন।