বাংলার জন্য ভাবনা মিজোরামে বসেও, দিলীপের নয়া চালে শোরগোল বিজেপির অন্দরেও
বাংলার জন্য ভাবনা মিজোরামে বসেও, দিলীপের নয়া চালে শোরগোল বিজেপির অন্দরেও
মিজোরামে বসেও বাংলার জন্য চিন্তা করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যার ফলে তুমুল শোরগোল পড়েছে বিজেপির অন্দরেই। কেন্দ্রের নির্দেশে তাঁকে যেতে হয়েছে ভিনরাজ্যে। এখন তিনি মিজোরামে বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচির কাজ করছেন। তবু কাজের ফাঁকে তিনি বাংলার জন্য ভাবছেন। বাংলার জন্য তিনি পৃথক কর্মসূচি নিয়েছেন।
ভিন রাজ্যে থেকে বাংলার জন্য আন্দোলন ভাবনা দিলীপের
২০২৪-এর ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের পুনরায় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বুথ সশক্তিকরণ অভিযান শুরু করেছে। দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থেকে কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি হওয়ার পর সাত রাজ্যের দায়িত্ব পেয়েছেন। অসম, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড ও আন্দামানের মতো রাজ্যের দায়িত্বে থেকেও বাংলা নিয়ে তিনি পৃথক কর্মসূচি নিয়েছে।
দিলীপ ঘোষকে দূরে সরিয়ে দিতে চাইলেও তিনি আছেন বাংলাতেই
দিলীপ ঘোষকে সাত রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়ার পর জল্পান শুরু হয়েছিল, তবে কি বাংলা থেকে বিজেপি নেতৃত্ব দিলীপ ঘোষকে দূরে সরিয়ে দিতে চাইছে। দিলীপ ঘোষকেও এই বিতর্কিত প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তাঁর পক্ষ থেকে যুক্তি সাজিয়ে জানানো হয়েছিল, দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুরের সাংসদ, তিনি এ রাজ্যের প্রতিনিধি, তাই বাংলা নিয়ে তাঁর মতামত থাকবেই। আর বাইরের রাজ্যের কাজ করলেও তা বেশিরভাগই হবে ভার্চুয়ালি, তাই বাংলাতেই তিনি থাকবেন বাংলার ব্যাপারে তিনি যে মতামত দেবেন তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মিজোরাম থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার বার্তা
যদিও তার লপরে তাঁকে সেন্সর করা হয়। সংবাদমাধ্যমের সামনে বা প্রকাশ্যে তিনি কোনও মত ব্যক্ত করতে পারবেন না জানিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তারপর সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বাংলায় আসেন। তারপরই তাঁর নির্দেশে দিলীপ ঘোষকে যেতে হয়েছে মিজোরামে। মিজারামের বুথকে মজবুত করার দায়িত্ব সামলেও তিনি বাংলার জয় ভেবেছেন। মিজোরাম থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার বার্তা দিয়েছেন।
দিলীপ ঘোষকে ই-মেল করে জানান তৃণমূলের দুর্নীতির অভিযোগ
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ টুইট বার্তায় জানান, 'দিলীপকে বলো' অভিযানের কথা। মিজোরামেও বসে রাজ্য রাজনীতির সলতে পাকানোর কাজ করছেন তিনি। বাংলার জন্য দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করলেন, রাজ্যের শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তিনি তা যেন দিলীপ ঘোষকে ই-মেল করে জানান। অভিযোগের সঙ্গে উপযুক্ত প্রমাণাদি পাঠানে নিজের ই-মেল আইডিও উল্লেখ করেছেন তিনি।
কেন বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে একসঙ্গে আন্দোলনে নেই দিলীপ
দিলীপ ঘোষের এই ঘোষণার পর প্রশ্ন উঠেছে তিনি কেন আবার এমন পৃথক উদ্যোগ নিলেন। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ধরনের এক উদ্যোগ নিয়েছেন সম্প্রতি। দিলীপ ঘোষ এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় নেতা হলেও তিনি যেহেতু বাংলার প্রতিনিধি সেহেতু এ রাজ্যের শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতেই পারেন। কিন্তু কেন পৃথকভাবে, কেন বঙ্গ বিজেপির সঙ্গে একসঙ্গে তিনি আন্দোলনে থাকছেন না, কেন বিজেপির অফিসিয়াল ই-মেল আইডি দেওয়া সত্ত্বেও নিজের পার্সোলান ই-মেল আইডি দিলেন? তা নিয়েই প্রশ্ন।
‘দিদিকে বলো’র পাল্টা ‘দাদাকে বলো’ স্লোগান আগেও উঠেছিল
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, লীপ ঘোষ বিজেপির থেকে বিচ্ছিন্ন অভিযানে নামতে চাইছেন। দেখাতে চাইছেন বিজেপির বাইরেও দিলীপ ঘোষের আলাদা একটা অস্তিত্ব রয়েছে। তিনি নিজেও দেখতে চাইছেন তাঁর আলাদা কতটা গুরুত্ব রয়েছে। তবে দিলীপ ঘোষ এবারই প্রথম নয়, আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'দিদিকে বলো'র পাল্টা 'দাদাকে বলো' স্লোগান তুলেছিলেন। আম্ফানের ত্রাণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে দিলীপ ঘোষ পাল্টা ব্র্যান্ড ক্যাম্পেন শুরু করেছিলেন।
'দিদিকে বলো’র ধাঁচে 'দিলীপকে বলো’ অভিযান! বাংলায় প্রাসঙ্গিক থাকার প্রয়াসে নয়া বিতর্ক