বিজেপিতে এবার দিলীপ বনাম সুকান্ত, অভিজ্ঞতা-প্রশ্নে দ্বন্দ্ব চরমে প্রাক্তন ও বর্তমানের
একজন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, অন্যজন বর্তমান রাজ্য সভাপতি। অভিজ্ঞ দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে তারুণ্যের মুখ সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির রাজ্য সভপাতি করা হয়েছে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পরে।
একজন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, অন্যজন বর্তমান রাজ্য সভাপতি। অভিজ্ঞ দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে তারুণ্যের মুখ সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির রাজ্য সভপাতি করা হয়েছে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পরে। এবার অভিজ্ঞতার দ্বন্দ্ব শুরু হল বিজেপিতে। কার কত অভিজ্ঞতা, তা নিয়ে তরজায় জড়াল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন বনাম বর্তমান সভাপতি।
বিজেপির নেতৃত্বে থেকে দিলীপের অপসারণ, সুকান্তের আগমন
২০২১-এর বিধনাসভা নির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ে। তৃণমূলকে হারিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসার যে জাল বুনেছিল, তা ব্যর্থ হয়। ২০০ আসনের টার্গেট নিয়ে এগোলেও বিজেপি থমকে যায় শুধু ৭৭-এই। অর্থাৎ ১০০-র গণ্ডিও টপকাতে পারেনি তারা। এরপরই বিজেপিতে রদবদল হয়। বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বে থেকে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে বসানো হয় তারুণ্যে ভরা মুখ সুকান্ত মজুমদারকে। অর্থাৎ অভিজ্ঞতার পরিবর্তে বিজেপি কামব্যাকের লক্ষ্যে বরণ করে নেয় তারুণ্যকে।
বিজেপির অন্তর্কোন্দল চরম আকার নেয় সুকান্তের আমলে
কিন্তু সুকান্ত মজুমদার বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়ে আসার পর থেকেই বিজেপির অন্তর্কোন্দল চরম আকার নেয়। সবথেকে বড় কথা ২০২১-এর নির্বাচনের পর উপনির্বাচন ও পুরনির্বাচনে ভরাডুবির পর 'অনভিজ্ঞ' সুকান্ত ঘরে-বাইরে সমালোচিত হন। তিনি দলকে সামলাতে পারছেন না বলেও অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন ওঠে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়েও। আনকোরা হাতে পড়ে বিজেপি বাংলায় খেই হারিয়ে ফেলছে বলে বিজেপিতে বাড়তে থাকে বিদ্রোহীর সংখ্যা।
অভিজ্ঞতা প্রশ্নে সুকান্তকে নিয়ে বার্তা দিলীপের
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এতদিন সুকান্ত মজুমদারের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি এখনও সুকান্ত মজুমদারের পাশে আছেন বলে জানিয়েই তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা ৪২ বছরের এক তরুণকে রাজ্য সভাপতি করেছি। এই সাহস একমাত্র বিজেপিই দেখাতে পারি। আমরা তারুণ্যের উপর ভরসা রাখি তাই ৪২ বছরের তরুণের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়েছি।
দিলীপ ঘোষকে জবাব দিলেন অনভিজ্ঞ সুকান্ত মজুমদারের
দিলীপকে এই অভিজ্ঞতার প্রশ্নে ছেড়ে কথা বলেননি বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, রাজনীতির শুরুতে সবাই অনভিজ্ঞ থাকে। আমি সভাপতি হওয়ার সময় সাংসদ হিসেবে আড়াই বছরের অভিজ্ঞতা ছিল আমার। আর দিলীপ ঘোষ যখন রাজ্য সভাপতি হন, তখন সাংসদ হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা ৬ মাস থেকে ১ বছরের। অভিজ্ঞতা প্রশ্নে এইভাবেই দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করলেন সুকান্ত মজুমদার।
এক বছরের মধ্যেই দিলীপ বনাম সুকান্ত কোন্দল চরমে
উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বাংলায় বিজেপির উত্থান হয়েছিল। ২০১৫ সালে দায়িত্ব নিয়ে আসার পর দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বাধীন বিজেপি তৃণমূলের চ্যালেঞ্জার রূপে আবির্ভূত হয়েছিল বাংলায়। ২০১৯-এ তৃণমূলকে ধাক্কা দিয়ে বিজেপি ১৮টি লোকসভা আসন দখল করে। তারপর থেকেই বাংলায় পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বিজেপি। কিন্ত বিজেপি একুশের নির্বাচনে ব্যর্ত হওয়ায় নেতৃত্বে বদল আসেষ। তখন সুকান্ত দায়িত্বভার নিয়ে দিলীপ ঘোষকে নিয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর আমলে বিজেপি সর্বোচ্চ এগিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। এক বছরের মধ্যেই উভয়ের মধ্যে শুরু হয়ে গেল কোন্দল।