‘দিদি কে বলো’ প্রকল্প যেন ত্রাতা হয়ে এল জঙ্গলমহলের ন’জন কিশোরীর কাছে
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তো সবসময় পৌঁছানো যায় না, তাই মানুষের অভাব–অভিযোগ শোনার মতো এতদিন কেউ ছিল না। কিন্তু এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন জনসাধারণের অভাব–অভিযোগ শোনার। কিছুমাস আগেই তিনি শুরু করেছেন 'দিদি কে বলো’ প্রকল্প। যেখানে মানুষ ফোন করে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং তা পৌঁছে যাবে একেবারে দিদির কানে। সেরকমই জঙ্গলমহলের ন’জন কিশোরীর কাছে 'দিদি কে বলো’ প্রকল্প ত্রাতা হয়ে এল।
স্কুলে ভর্তি নিতে অস্বীকার
জানা গিয়েছে, এই ন'জন পড়ুয়াকে জঙ্গলমহলের একটি স্কুল ভর্তি নিতে অস্বীকার করছিল। শালবনি নিচুমানজারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল ওই কিশোরীরা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তি নেয় না। এরপর স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষকের মাধ্যমে ‘দিদি কে বলো' হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে ওই ন'জন কিশোরী এই অভিযোগ করে। এর পাশাপাশি তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সেলেও জানায়। বিষয়টি জানার পরই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এবং ওই ন'জন কিশোরীর স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য জেলা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়।
আসন ফাঁকা নেই, তাই ন’জনকে ফেরানো হয়
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের নবম শ্রেণীতে আর কোনও পড়ুয়ার জন্য আসন ফাঁকাম ছিল না। কারণ প্রত্যেক ক্লাসে ১০০ জন করে পড়ুয়া ভর্তির নিয়ম রয়েছে। ওই ন'জন কিশোরী ওই এলাকারই বিভিন্ন জুনিয়র স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর শালবনির এই স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করে। বিষয়টি জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেও, তারা এ বিষয়ে কোনও সাহায্য করতে পারে না। তাই বাধ্য হয়েই ন'জন পড়ুয়া ‘দিদি কে বলো' হেল্পলাইনে গোটা ব্যাপারটি জানায়। এ বিষয়ে তাদের সাহায্য করে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তন্ময় সিংঘ।
স্কুলে ভর্তি হল ন’জন কিশোরী
বৃহস্পতিবারই জেলা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই স্কুলটিতে নির্দেশ আসে যে ওই ন'জন কিশোরীকে স্কুলে ভর্তি করতে হবে যাতে তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। এই নির্দেশ পাওয়ার পরই স্কুল কর্তৃপক্ষ শনিবার ওই ন'জনকে ভর্তি হওয়ার জন্য ডেকে পাঠায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তারা। স্কুলে না আসার হার ক্রমশই বাড়ছে, ঠিক সেই সময়ই মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ অবশ্যই সাড়া ফেলবে।