আনিসের মৃত্যু হত্যাকাণ্ডই! সিটের তদন্তে রাজনৈতিক বাধার অভিযোগ ডিজির, কে খুন করাল প্রশ্ন বাবার
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) ঘোষণা করেছিলেন আনিস খানের (anish khan) খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কিছুক্ষণের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের ডিজিপি মনোজ মালব্য (manoj
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) ঘোষণা করেছিলেন আনিস খানের (anish khan) খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কিছুক্ষণের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের ডিজিপি মনোজ মালব্য (manoj malviya) গ্রেফতার হওয়া দুজনের পরিচয় প্রকাশ করলেন। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করলেন আনিসের পরিবারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সিটের (sit) তদন্ত বাধা তৈরি করছে। তবে তারা ১৫ দিনের মধ্যে এব্যাপারে তদন্ত শেষ করতে বদ্ধ পরিকর বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আনিস খুনে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার ২ পুলিশ
রাজ্য পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত মিলছিল দিন দুয়েক আগে থেকেই। শুক্রবার গভীর রাতে আনিস খানের বাড়িতে পুলিশের যাওয়ার সূত্রে পেয়েছিলের পুলিশের শীর্ষকর্তারাই। শুধু ঘোষণা টুকু বাকি ছিল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন এই ঘটনায় দুই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে রাজ্যের ডিজিপি ফের জানান দুজনের গ্রেফতার কথা। তিনি জানান, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা এবং সিভিক ভলান্টিয়ার প্রীতম ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার কথা হয়েছে। প্রসঙ্গত আনিসকে খুন করা হয় শুক্রবার গভীর রাতে। শনিবার সকাল থেকে আনিসের বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা বারবার অভিযোগ করে আসছিলেন পুলিশই খুন করেছে তাঁদের আনিসকে। এক্ষেত্রে একজন পুলিশের খাঁকি পোশাকে এসে, তাঁর দিকে বন্দুক তাক করে ছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন আনিসের বাবা সালেম খান। আর তিনজন সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাকে ওপরে উঠেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
আরও বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ
মঙ্গলবার সকালে জানা গিয়েছিল তিনজন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এসএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম এবং হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। এঁরা তিনজনই রাতের আরটি ভ্যানে ছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আনিসের বাবা ফোনে থানায় অভিযোগ জানানোর পরে থানা থেকে আরটি ভ্যানকে যেতে বলা হলেও তা যায়নি আনিসের বাড়িতে। আমতা থানায় শুক্রবার রাতে দুটি আরটি ভ্যান কাজ করছিল বলে জানা গিয়েছে। এদিন একটি আরটি ভ্যানের চার পুলিশ কর্মীকে ভবানীভবনে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করা হয়।
সিটের তদন্তে বাধার অভিযোগ
এদিন ডিজিপি মনোজ মালব্য কার্যত স্বীকার করে নেন শুক্রবার গভীর রাতে আনিস খানের বাড়িতে পুলিশই গিয়েছিল। আর এদিন তিনি আনিসের মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলেও বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তদন্তের কাজ শুরু হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে দোষীদের খুঁজে বের করার যে কথা বলা হয়েছিল, তা তাঁরা পালন করবেন। তবে এদিন তিনি অভিযোগ করেন, সিটের কাজে বাধা তৈরি করা হচ্ছে। একদিকে যেমন তা আনিসের পরিবারের তরফে করা হচ্ছে সেই কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন মঙ্গলবার সারাদিন তদন্তকারীরা আনিসের বাড়িতে ছিলেন। এদিন সেখানেই রয়েছে। প্রসঙ্গত মঙ্গলবার আনিসের পরিবারের তরফে মোবাইল তুলে দিতে অস্বীকার করা হয়। আর বুধবার ফের ময়নাতদন্তের আর্জি পরিবার খারিজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সিটের তদন্তে বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
কে খুন করাল, প্রশ্ন আনিসের বাবার
এদিকে মঙ্গলবার তিন পুলিশকর্মী সাসপেন্ড হওয়ার পরে আনিসের পরিবারের যে সুর ছিল এদিন দুই পুলিশকর্মী গ্রেফতারের পরে সেই একই সুর বজায় রয়েছে। তাঁরা বলছেন, আনিসের খুনের ঘটনায় পুলিশ যে জড়িত তা তাঁরা প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছেন। এখন পুলিশ পুলিশকে গ্রেফতার করেছে। তবে কে আনিসকে খুন করতে পাঠিয়েছিল তা এই সিটের তদন্তে উঠে আসবে না বলেও মন্তব্য করেছেন আনিসের বাবা সালেম থান। সেই কারণে তিনি আদালতের পর্যবেক্ষণে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।