পাশ থেকে সরে যাচ্ছে সহযোগী দলগুলিও, তবু পাহাড় বনধ নিয়ে অনড় মোর্চা
মোর্চা নেতৃত্ব বুঝতে পারছে ক্রমশই তাঁরা প্যাঁচে পড়ে যাচ্ছে। তবু তারা মাথা নোয়াতে রাজি নয়। ভাঙলেও মোর্চা মচকাতে চায় না। এই মনোভাবেই ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ছেন বিমল গুরুংরা।
এখনও পাহাড় ইস্যুতে এককাট্টা মোর্চা। সহযোগী দলগুলি পাশ থেকে সরে যাচ্ছে, তবু থোড়াই কেয়ার। পাহাড়ে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রবল চাপে পড়েও বিমল গুরুংয়ের দল অনড় থাকল বনধের সিদ্ধান্তে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রবল বাকবিতণ্ডা চললেও শিথিল হল না পাহাড় বনধ। চাপ উপেক্ষা করেই অনির্দিষ্টকালীন বনধ জারি রইল পাহাড়ে।
এদিন মোট ১৩টি দল যোগ দিয়েছিল মোর্চার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে। বিজেপি ও কংগ্রেস ছাড়া অধিকাংশই পাহাড়ের রাজনৈতিক দল। এবং তাদের মধ্যেই বেশিরভাগই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সহযোগী দল বলে পরিচিত। তারাই প্রবল আপত্তি তোলে বনধ নিয়ে। আর বনধ নয়, এবার বনধ শিথিল করার দাবি জোরালো করে তারা। কিন্তু অনড় মোর্চা। মোর্চার দাবি, আগে রাজ্য প্রশাসন সেনা ও পুলিশ অভিযান বন্ধ করুক, তারপর বনধ প্রত্যাহারের প্রশ্ন।
মোর্চা নেতা বিনয় তামাং স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন, মোর্চাও চায় আলোচনায় বসতে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও একই দাবি। রাজ্য প্রশাসনের তরফে পুলিশ-সেনা অভিযান তুলে নিতে হবে। বিশেষ করে জিএনএলএফ ও জন আন্দোলন পার্টির তরফে এদিন বনধ প্রত্যাহারের দাবি জোরালো করা হয়। যুক্তি দেখানো হয়, বনধের জেরে পাহাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত। ভেঙে পড়েছে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো। পর্যটন শিল্পে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। এমতাবস্থায় বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়াই শ্রেয়। জাপ নেতা হরকা বাহাদুর বলেন, অন্তত ৫-৭ দিনের জন্য বনধ তুলে নেওয়া হোক। কিন্তু তাও মানতে রাজি নয় মোর্চা।
মোর্চা নেতৃত্ব বুঝতে পারছে ক্রমশই তাঁরা প্যাঁচে পড়ে যাচ্ছে। তবু তারা মাথা নোয়াতে রাজি নয়। ভাঙলেও মোর্চা মচকাতে চায় না। এই মনোভাবেই ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ছেন বিমল গুরুংরা। এদিন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং আসেননি বৈঠকে। তা নিয়েও অন্যান্য দলগুলি প্রবল সমালোচনা করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার।
মোর্চার প্রতিনিধিত্ব করেন বিনয় তামাং। সহযোগী দলগুলির সম্মিলিত অবস্থানের সামনে অসহায় লাগছিল তাঁকে। তা সত্ত্বেও তিনি অনড় থাকলেন সিদ্ধান্তে। আসলে বিমল গুরুং যতক্ষণ না বলছেন, পাহাড়ে বনধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া বিনয় তামাংয়ের পক্ষে সম্ভব ছিল না।