যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে অক্সিজেন না পেয়ে মমতার বাংলায় ছুটে এলেন দম্পতি, অযোধ্যা থেকে চুঁচুড়ায় আসতেই যা ঘটল
যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে অক্সিজেন না পেয়ে মমতার বাংলায় ছুটে এলেন দম্পতি, অযোধ্যা থেকে চুঁচুড়ায় আসতেই যা ঘটল
উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা থেকে হুগলির চুঁচুড়া পর্যন্ত রাস্তার দূরত্ব ৮৪৮.৬ কিলোমিটার। ১৮ ঘণ্টার এই পথ পেরিয়ে এক দম্পতি শুধুমাত্র বাংলায় এসেছেন 'শ্বাসবায়ু' ফিরে পেতে! করোনার করুণ পরিস্থিতিতে যেখানে দেশের অক্সিজেনের তুমুল আকাল, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই বিশাল দূরত্বকে জয় করে কোভিডকে হারানোর লক্ষ্যে অসহায় দম্পতি এলের মমতার বাংলায়। ঘটনা, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা লালজি যাদব ও রেখা যাদবের। যে ঘটনার কথা উঠে এসেছে এক জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমে।
অযোধ্যা থেকে চুঁচুড়ার রাস্তা ও এক করুণ কাহিনী
১৮ ঘণ্টার লম্বা সফর সামনে নিয়ে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা থেকে অ্যাম্বুলেন্স রওনা হয়েছিল। গাড়িতে তখন লালজি ও রেখা যাদব। দুজনেই করোনা আক্রান্ত। প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। এর আগে উত্তরপ্রদেশের বুকে করোনা আক্রান্ত এই দুই রোগীকে কোনও হাসপাতাল ভর্তি নিতে চায়নি, কারণ সেখানে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে বলে দাবি করা হয় হাসপাতালের তরফে। কোনও উপায় না পেয়ে রেখার ভাই রবিশঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবার। যে রবিশঙ্কর যাদব হুগলির মগরার বাসিন্দা। তরপরই ঠাওরানো হয় উপায়।
চুঁচুড়ার হাসপাতালে এসে থামল অ্যাম্বুলেন্স
যোগীরাজ্য থেকে এসে অ্যাম্বুলেন্স সোজা চলে গেল হুগলির চুঁচুড়ার অজন্তা সেবা সদন হাসপাতালে। ততক্ষণে শ্বাসকষ্ট বেশ প্রবল লালজি ও রেখার। মুহূর্তে ভর্তি করা হল রোগীকে। শুরু হয়ে গেল সুশ্রুষা। আর হাসপাতাল সূত্রের খবর, লালজি যাদবের অবস্থা সংকটজনক ছিল , তবে রেখা যাদব সুস্থ হচ্ছিলেন। সেই পরিস্থিতি থেকে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা শুরু হয়।
'দিদিকে ধন্যবাদ'
এদিকে, এই লম্বা রাস্তা পেরিয়ে, প্রবল ঝুঁকি নিয়ে নিজের দিদি, জামাইবাবুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পেরে খুশি রেখার ভাই রবিশঙ্কর। রবিশঙ্কর বলছেন,'আমি যদি পশ্চিমবঙ্গে না থাকতাম তাহলে আমার দিদি জামাইবাবুকে বাঁচাতে পারতাম না। এজন্য আমি পশ্চিমবঙ্গকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই দিদিকে।'
বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণা! তিন কোটি প্রতিষেধক জোগাড় করতে পরিকল্পনা মমতা সরকারের
আদিত্যনাথের বার্তা ও ' বাংলার ভাগের অক্সিজেন উত্তর প্রদেশে'
কয়েকদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের বুকে অক্সিজেনের কমতির প্রসঙ্গ উঠতেই যোগী আদিত্যনাথ বলেন, সেরাজ্যে মেডিক্যাল অক্সিজেন যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক সভায় অভিযোগ করেন, বাংলার ভাগের অক্সিজেন উত্তরপ্রদেশে চলে যাচ্ছে। আর একদিকে এই রাজনৈতিক তোপ পাল্টা তোপ, অন্যদিকে বহু করোনা রোগী, তাঁদের পরিবার বহুভাবে নানান হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই দুই পটচিত্রকে সঙ্গে নিয়ে ভারত লড়ছে করোনার বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে।
প্রতীকী ছবি