বামফ্রন্ট ভাঙন, ফ্রন্ট ছাড়ল ডিএসপি, হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত প্রবোধ সিনহাদের
ক্ষমতার অলিন্দ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই বামফ্রন্টের ঐক্য খর্ব হতে শুরু করে। এতদিন ক্ষমতা বলে সবাইকে একই বৃত্তের মধ্যে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছিল। কিন্তু ক্ষমতা হারাতেই ফাটল স্পষ্ট।
ফের বামফ্রন্টে ভাঙন। এবার ফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে গেল ডিএসপি। সিপিএমের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগে ফ্রন্ট ত্যাগের সিদ্ধান্ত বলে ডিএসপি-র তরফে জানানো হয়েছে। রবিবার ডিএসপি রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ সিনহা জানান, 'তাঁরা বামফ্রন্ট ত্যাগ করে বেরিয়ে আসছেন। রাজ্যসভার ভোটে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে সিপিএম দ্বিচারিতা করেছে। তাই সিপিএমের দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদেই এই ফ্রন্ট ছাড়ার সিদ্ধান্ত।
এদিন রাজ্য কমিটির মিটিংয়ে ডিএসপি-র তরফে ফ্রন্ট ত্যাগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে বামফ্রন্টে প্রধান রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ৩৪ বছর ধরে ঐক্যবদ্ধ বামফ্রন্ট রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতার অলিন্দে থাকাকালীন কোনও দল ফ্রন্ট ছেড়ে বোরিয়ে আসেনি। নানা মতবিরোধ দেখা দিয়েছে, তবু ভাঙন ধরেনি বামফ্রন্টে। এমনকী সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নিয়ে চূড়ান্ত মতানৈক্য হওয়া সত্ত্বেও কেউ ফ্রন্ট ত্যাগ করেনি।
ক্ষমতার অলিন্দ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই বামফ্রন্টের ঐক্য খর্ব হতে শুরু করে। এতদিন ক্ষমতা বলে সবাইকে একই বৃত্তের মধ্যে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছিল। কিন্তু ক্ষমতা হারাতেই বামফ্রন্টের ফাটল যে ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে, তা বোঝা যায় সমাজবাদী পার্টি বামসঙ্গ ত্যাগে। এবার ডিএসপিও বামফ্রন্ট ত্যাগ করে বেরিয়ে এল। ফলে বামফ্রন্টের ঐক্য বজায় রইল না আর।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এতদিন মন্ত্রিত্ব রক্ষার প্রশ্নেই ছোট শরিকদলগুলো নীরব ছিল। তাছাড়া বড় শরিক সিপিএমের সাহায্য ছাড়া ভোটে জেতা যাবে না, সেটাও একটা কারণ ছিল। কিন্তু ২০১১-র নির্বাচনের হার ও বামফ্রন্টের ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই ছোট শরিকরা সিপিএমের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকে। বামফ্রন্ট ক্ষমতা হারানোর পরই সমাজবাদী পার্টি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেই দিয়েছিল। এবার ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট পার্টি অর্থাৎ ডিএসপি-ও বামসঙ্গ ত্যাগ করল।
বামপন্থী মতবাদে বিশ্বাসী ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই রাজনৈতিক জোট। পশ্চিমবঙ্গ এই জোট ৩৪ বছর শাসন করেছে। বর্তমানে এ রাজ্যে তারা বিরোধী আসনে। মোট ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি পার্টি এই ফ্রন্টের শরিক ছিল। আগে সমাজবাদী পার্টি ও এখন ডিএসপি ফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসায় বামেদের শরিক সংখ্যা দাঁড়াল ৯-এ।