মোর্চার ‘জঙ্গি’-হামলায় অগ্নিগর্ভ পাহাড়, মার খাচ্ছে সেনা-পুলিশ
২৪ ঘণ্টার মধ্যে পর পর চার সমর্থকের মৃত্যুতে ফের রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে পাহাড়। সেই মৃত্যুকে ঢাল করেই এবার সেনা-পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়ল মোর্চা-বাহিনী।
এবার একেবারে জঙ্গি কায়দায় পাহাড়ে আক্রমণে নামল মোর্চা। মোর্চার সফট টার্গেট রাজ্যের পুলিশ বাহিনী। পর পর চার সমর্থকের মৃত্যুতে ফের রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে পাহাড়। সেই মৃত্যুকে ঢাল করেই এবার সেনা-পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়ল মোর্চা-বাহিনী। রবিবারই মোর্চার আক্রমণের মুখে ৮ পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ ক্যাম্প থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত অফিস, ফরেস্ট কোয়ার্টার কিছুই বাদ নেই। একের পর এক আগুন জ্বলছে পাহাড়।[আরও পড়ুন: সিকিমকে দেওয়া রাজনাথের আশ্বাসে আদৌ কি চাপ বাড়ল মমতার]
এই 'যুদ্ধ' পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে পুলিশ না পারছে আক্রমণাত্মক হতে, না পারছে পাহাড় ছেড়ে ফিরে আসতে। 'ধৈর্যে'র পরীক্ষা দিয়েই চলেছে পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনারও ঝড় উঠেছে। সমালোচিত রাজ্য প্রশাসনও। কেন একমাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পাহাড়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে পারল না রাজ্য? কেন সেনা-পুলিশ মোতায়েন সত্ত্বেও পাহাড়ে এখনও আগুন জ্বলছে?
পাহাড়ে প্রতিদিন নিয়ম করে পুড়ছে সরকারি দফতর। নথিপত্র জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মোর্চার তাণ্ডবের জবাব নেই প্রশাসনের কাছে। জুন মাসের ৯ তারিখে যে তাণ্ডব শুরু হয়েছিল, জুলাই ৯ তারিখে এসেও তার শেষ হয় না। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মোর্চা দফায় দফায় হামলা করেই চলেছে। শুক্রবার রাত থেকেই ফের অগ্নিগর্ভ অবস্থা পাহাড়ের। শনিবার পর্যন্ত চারজন সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। আর তাতেই ঘি পড়েছে আগুনে।
রবিবার সকাল থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ চলছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও জিএনএলএফ সমর্থকদের। এদিন সকালে পোখরিবং পুলিশ ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভের সূত্রপাত। কার্শিয়াংয়ে পঞ্চায়েত অফিসেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাধা দিতে গেলে খণ্ডযুদ্ধ বাধে দু'পক্ষের। এই সংঘর্ষের ঘটনায় মোর্চার জঙ্গি আন্দোলনে জখম হন আট পুলিশকর্মী।
শনিবারই দার্জিলিংয়ের সোনাদা থানা ও সোনাদা স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল মোর্চা ও জিএনএলএফ সমর্থকরা। দার্জিলিংয়ে তাণ্ডব চালানোর পর এবার মোর্চার হামলার মুখ থেকে বাদ যায়নি কালিম্পংও। গরুবাথানের ফরেস্ট কোয়ার্টারে শনিবার রাতে আগুন লাগানো হয়। কার্শিয়াং মহকুমা দফতরেও অগ্নিসংযোগ করে মোর্চা।
মাসাবধি কাল হয়ে গেল পাহাড়ে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও সেনা। পাহাড় শান্ত করতে তাঁদের ভূমিকা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠে পড়েছে। পাহাড়জুড়ে অশান্তি চলছে, পুলিশ ও সেনা তাহলে কী করছে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে? কবে শান্তি ফিরবে পাহাড়ে? পাহাড়ের পরিবেশ ফের সুস্থ-স্বাভাবিক করতে রাজ্য সরকারের আলোচনার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রের সঙ্গেই তারা আলোচনায় বসতে চায় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের পক্ষে।