শুধু চোখই রাঙাল না, ‘তিতলি’র ঘূর্ণি ঝাপটাও দিল পুজোর বাংলায়, লন্ডভন্ড রেলশহর
'তিতলি' এল বাংলাতেও। 'তিতলি'র ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর। খড়গপুরে শুধু বৃষ্টি নয়, দাপট দেখিয়েছে ঝড়ও। প্রচুর ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এমনকী 'তিতলি' প্রাণও কেড়েছে। একজনের মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। জখম হয়েছেন সাতজন। 'তিতলি'র প্রভাবে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে টানা বৃষ্টি চলছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে বৃষ্টি চলবে রাতভর। শনিবার পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে। ঘূর্ণিঝড় থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ‘তিতলি'। ফলে দুর্যোগের মেয়াদ বৃদ্ধি হবে কি না, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে পুজো উদ্যোক্তাদের। শনিবার ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। এই ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।

বাংলার জেলায় তিতলির হানা
হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে বৃষ্টি চলবে। এদিন সকাল থেকে ‘তিতলি'র দাপটে বৃষ্টি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ‘তিতলি'র ঘূর্ণিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর।

লন্ডভন্ড ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূল
উল্লেখ্য, তিতলির প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ওড়িশার গোপালপুর। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগর। বৃহস্পতিবার ভোরে ‘তিতলি' আছড়ে পড়ার পর কার্যত তছনছ হয়ে যায় ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশের ওই এলাকাগুলি। মৃত্যু হয় আটজনের। নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন।

‘তিতলি’র ঘূর্ণি খড়গপুর-ঝাড়গ্রামে
এদিন সকালে ‘তিতলি'র ঘূর্ণির মুখে পড়ে বাংলার ঝাড়গ্রাম ও খড়গপুর। একজনের মৃত্যু হয়। জখম সাতজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সকাল থেকেই বৃষ্টি চলছিল, ঘূর্ণির দাপদ দেখানো শুরু হয় বেলা ১২টা নাগাদ। বুড়িশোল, আমলাশোল, পোলগোড়া-সহ সংলগ্ন বেশ কিছু গ্রামের জনজীবন ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।

ঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতি
প্রায় ২৫০টি মাটির ঘর ভেঙে পড়ে। এছাড়া অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়। গাছ উপড়ে পড়ে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিপত্তি ঘটে। এর ফলে বহু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সকাল থেকেই। অনেক পুজো মণ্ডপেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃষ্টি কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে
দুপুরের পর থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় টানা বৃষ্টি চলছে। এই বৃষ্টি আরও একদিন চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ভিজে কলকাতায় পুজো উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত। পুজোর দুদিন আগে আনন্দটাই মাটি হয়ে গিয়েছে উৎসবপ্রেমীদেরও।