তুমুল হই হট্টগোল সিপিএমের জেলা সম্মেলনে, নতুন সম্পাদক বেছে নিতে হাঁটতে হল যে পথে
তুমুল হই হট্টগোল সিপিএমের জেলা সম্মেলনে, নতুন সম্পাদক বেছে নিতে হাঁটতে হল যে পথে
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির বিক্ষোভ মাথায় নিয়ে শুরু হল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। রাজ্য সম্মেলন শুরুর আগে সিপিএমের জেলা নেতাদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হল। শক্ত হাতে অশান্তি ঠেকাতে হল। সিপিএমের বিক্ষোভ দমন করতে জেলা নেতাদের তলব করতে হল আলিমুদ্দিনে। তারপরই মিলল সমাধান সূত্র।
কে হবেন জেলা সম্পাদক, তা নিয়ে সিপিএমের দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। নেতাদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় আকচাআকচি। এই অবস্থায় জেলার নেতাদের ডেকে পাঠানো হয় আলিমুদ্দিনে। রাজ্য সম্মেলন শুরুর আগে শীর্ষ নেতারা উত্তর ২৪ পরগনার কোন্দল থামাতে বৈঠক করেন। তারপর সম্পাদক করা হয় মৃণাল চক্রবর্তীকে। একইসঙ্গে ভোটাভুটিতে গঠিত হল ৬৬ জনের জেলা কমিটি।
রাজ্য সম্মেলন শুরুর মুখে এই কোন্দল আলিমুদ্দিনের শীর্ষ কর্তাদের অস্বস্তিতে ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। পরিস্থিতিতে এমনই দাঁড়ায় বিনা ভোটাভুটিতে সিপিএমের জেলা কমিটি গঠন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কমিটি হবে ৬৬ জনের, সেখানে নাম পড়ে ৭৮ জনের। রবিবার সকাল থেকে বারাসতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গণনা শেষ হয় মধ্যরাতে।
মোট ৪৭০ জন ভোটাভুটিতে অংশ নিয়েছিলেন। আবার অনেকেই ভোটদানে বিরত থাকেন। গণনা শেষে দেখা যায়, অনেক হেভিওয়েট নেতা পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। এর মধ্যে রয়ছে প্রাক্তনমন্ত্রী গৌতম দেব, তন্ময় ভট্টাচার্য, নেপালদেব ভট্টাচার্য, মৃণাল চক্রবর্তী প্রমুখ। তারপরও অবশ্য নতুন জেলা কমিটিতে চমক দিয়ে উপরের দিকেই রয়েছেন তাঁদের অনেকে।
বঙ্গ সিপিএমে নবীনবরণের অপেক্ষা! বিমান-সূর্যরা কি তবে মার্গ দর্শকের ভূমিকায়
নতুন জেলা কমিটিতে প্রথমেই নাম রয়েছে গৌতম দেবের। তারপরের নাম নেপালদেব ভট্টাচার্যের। এই দুজনেই গুরুতর অসুস্থ। সামনের সারিতে মানস মুখোপাধ্যায়ের নামও ছিল। তিনিও অসুস্থ। এই পরিস্থিতিতে কে হবেন জেলা সম্পাদক, তা নিয়ে জটিল আকার ধারণ করে পরিস্থিতি। বেগতিক বুঝে তাঁদের আলিমুদ্দিনে তলব করা হয়।
আলিমুদ্দিনেত বৈঠকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য সম্পাদকের চেয়ার নিয়ে কোনও ভোটাভুটি করা যাবে না। শীর্ষনেতাদের হুইপের কাছে মাথা নত করে শেষপর্যন্ত ভোটাভুটি হয়নি। প্রবীণ নেতা মৃণাল চক্রবর্তীকেই মেনে নেওয়া হয় জেলা সম্পাদক পদে। তারপর বেছে নেওয়া হয় ৬৬ জনের কমিটি সদস্যকে।
এদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য সম্মেলন। এই জেলা সম্মেলনের অশান্তির পর রাজ্য সম্মেলন নিয়ে সাবধানী সিপিএম। তাঁরা এবার কাকে বেছে নেন রাজ্য সম্পাদক হিসেবে এবং তা নিয়ে যাতে কোনও অশান্তির বাতাবরণ না তৈরি হয়, আগাম চিন্তাভাবনা করে রাখছে সিপিএম। এখন থেকেই নতুন রাজ্য সম্পাদক নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে, তা নিয়ে অশান্তিও বাধতে পারে বলে মনে করছে শীর্ষ নেতৃত্ব।