বিজেপির চরিত্র নিয়ে খোঁটা, রাজ্যপালের টুইটে বিপজ্জনক সংকেত পাচ্ছেন ইয়েচুরি
ক্ষমতায় আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ত্রিপুরায় যে ঘটনা ঘটল তা তথাকথিত অগণতান্ত্রিক রাজনীতির উদাহারণ বলে ব্যাখ্যা সীতারাম ইয়েচুরির।
ক্ষমতায় এসেই রাজ্যে বুলডোজার চালিয়ে লেনিনের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে সরব হলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বিজেপিকে চরম বার্তা দিয়ে তিনি রাজ্যপালের সমালোচনা করলেন। সেইসঙ্গে খোঁটা দিলেন বিজেপি ও আরএসএসের চরিত্র নিয়ে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি বলেন, 'ক্ষমতায় আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ত্রিপুরায় যে ঘটনা ঘটল তা তথাকথিত অগণতান্ত্রিক রাজনীতির উদাহারণ।'
সিপিএম সাধারণ সম্পাদক মূর্তি ভাঙার নিন্দা করে বলেন, ত্রিপুরায় রেজাল্ট বের হওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টায় ১০৫৯টি জায়গায় আক্রমণ চালিয়েছে বিজেপি। দুদিনের ভিতরে বিজেপি ১৩৪টি পার্টি অফিসে হামলা করেছে। ৬৪টি পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে। আর দখল করে নিয়েছে ২০৮টি পার্টি অফিস। এইসব ঘটনায় বিজেপির চরমপন্থাই প্রকট হয়ে গেল।'
সীতারাম ইয়েচুরি জানান, 'আসলে ওই দলের গণতন্ত্রে উপর ভরসা নেই। এটাই বিজেপি বা আরএসএসের চরিত্র। নিজেদের আদর্শের উপর বিশ্বাস থাকলে, ওরা এই কাজ করত না। আসলে কোনও আদর্শই নেই ওদের। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল যে অরাজকতা চালিয়েছিল, তাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।
এদিন সম্মেলন শেষে বঙ্গ সিপিএম নেতৃত্ব প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবন থেকে ধর্মতলার লেনিন মূর্তি পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে। কলকাতার রাজপথে বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে লাল-পার্টি। অস্তিত্বহীনতায় ভুগতে থাকা পার্টির দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়।
এদিকে লেনিনের মূর্তি ভাঙা, পার্টি অফিসে হামলার পাশাপাশি ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের টুইট নিয়েও সমালোচনা করেন সীতারাম ইয়েচুরি। তথাগত টুইট করেছিলেন, 'গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত একটি সরকার যে কাজ করে, তা অনেক সময় পাল্টে দেয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত আর একটি সরকার।' তার পরিপ্রেক্ষিতে সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, 'রাজ্যে সাংবিধানিক অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয়, তা দেখা রাজ্যপালের কর্তব্য। কিন্তু রাজ্যপালের কথায় পরিস্ফুট হচ্ছে তিনি দৃশ্যতই খুশি।'
তাঁর কথায়, 'এটা একটা বিপজ্জনক সংকেত রাজ্যের পক্ষে, দেশের পক্ষেও। এই ঘটনায় আরএসএস ও বিজেপির ফ্যাসিবাদী আচরণই প্রকাশ পেয়েছে। যা চলছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়।' এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় মূর্তি ভাঙার রাজনীতি নতুন নয়, ২০০৮ সালে রাজীব গান্ধীর মূর্তিও ভাঙা হয়েছিল। তখন তখতে ছিল বামফ্রন্ট সরকার।