চাঁদে কলঙ্ক আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলঙ্কিত নন, বললেন ফিরহাদ হাকিম
এদিন দুপুরে সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন গৌতম দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি এঁকে বিভিন্ন সময়ে কত টাকা রোজগার করেছেন, কোথায় তা খরচ করেছেন তার হিসাব দেন। দেখান, তৃণমূল কংগ্রেস যা বলছে, তার থেকেও বেশি টাকা জমা পড়েছে দলীয় তহবিলে। এই টাকা কোথা থেকে এল প্রশ্ন করেন তিনি। বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি পাবলো পিকাসো না মাইকেল এঞ্জেলো যে, এত এক কোটি ছিয়াশি লক্ষ টাকা দিয়ে ছবি বিক্রি হবে?" দাবি করেন, একটা সুদীপ্ত সেন নয়, অনেক 'সুদীপ্ত সেনের' থেকে টাকা নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এর পর তিনি একগুচ্ছ দলিল দেখান সাংবাদিকদের। বলেন, এই দলিলের মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের লোকজন। তাঁর ভাই অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় অধিকাংশ সম্পত্তি কিনেছেন। কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেছেন আর এক ভাই। ৩০ বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ঠিকানায় এঁরা বসবাস করেন। দলিলে তাই লেখা আছে। সব মিলিয়ে সম্পত্তির পরিমাণ ২০ কোটি টাকা বলে দাবি করেন তিনি। এত টাকা কোথা থেকে এল, কে দিল ইত্যাদি প্রশ্ন তোলেন গৌতম দেব। বলেন, মমতাদেবীর এক ভাই পুরীতে একটি বিলাসবহুল হোটেল চালান। এ সব বানাতে টাকা পেলেন কোথায়? কারা রাতের অন্ধকারে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে, এই প্রশ্নও তোলেন।
কিছুক্ষণ পরই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রতিক্রিয়া জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বিপুল উন্নয়ন করেছেন। কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে শুরু করে গরিবদের দু'টাকা কিলো চাল, শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ইত্যাদি এখন বিরোধীদের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ইস্যু পাচ্ছে না সিপিএম। ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইয়েরা ছোটো থেকে প্রচণ্ড কষ্ট করে বড় হয়েছেন। সৎ পথে ব্যবসা করেছেন ভাইয়েরা। সেই ব্যবসার টাকাতেই কিনেছেন সম্পত্তি। এর পিছনে কোনও অবৈধ লেনদেন নেই। চাঁদে কলঙ্ক আছে, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলঙ্কিত নন।"
ফিরহাদ হাকিমের আরও দাবি, গৌতম দেব যখন হিডকোর চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন সেখানে চুক্তির ভিত্তিতে পাবলিক রিলেশন্স অফিসারের কাজ করত জনৈক অঞ্জন ভট্টাচার্য। এই ব্যক্তিই সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে গৌতমবাবুর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। তার পর থেকে সাদা খাম গৌতম দেবের কাছে পাঠাতেন সুদীপ্ত সেন। বলেন, "আন্দাজ করে নিন, একজন ব্যবসায়ী তৎকালীন মন্ত্রী গৌতম দেবকে সাদা খামে কী পাঠাতেন!" ফের তিনি বলেন, সিপিএমই নিয়মিত সারদা গোষ্ঠীর থেকে টাকা নিত। তৃণমূল কংগ্রেস একটিও পয়সা নেয়নি সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে।