বাংলায় প্রাসঙ্গিক হতে কী কর্তব্য এখন বামেদের, উপায় বাতলে দিলেন বিহারের ‘ক্যাপ্টেন’
বামেরা যে দেশ থেকে মুছে যায়নি, তার বড় প্রমাণ বিহার। স্বল্প আসনে লড়ে ১৬টি দখল করাই শেষ কথা নয়। বিজেপিকে হারাতে বামেরাই যে উত্তম-মাধ্যম তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বাম নেতা সিপিআইএমএল লিবারেশনের সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনিই এবার বাংলার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বাম নেতাদের। নয়া সমীকরণ গড়ে তোলার বার্তা দিয়েছেন।

বামেদের প্রধান রাজনৈতিক শত্রু কে
তিনি বাম নেতাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছেন সবার আগে ঠিক করতে হবে প্রধান রাজনৈতিক শত্রু কে। বামেরা বাংলার মানুষের কাছে নিজেদের উদ্দেশ্যে পরিস্ফুট করতে পারেনি, সেটাই মস্তবড় সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল না বিজেপি, কে তাঁদের প্রধান শত্রু এই মুহূর্তে তা নিরূপণ করে মানুষের কাছে উফস্থাপন করতে হবে। সেইমতো সাজাতে হবে প্রচার কৌশল।

গণতন্ত্রের প্রধান শত্রুর নাম যখন বিজেপি
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, এই মুহূর্তে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত তৃণমূলের আগে বিজেপির বিরোধিতা। বিজেপির হাত থেকে বাংলা তথা দেশকে রক্ষা করতে ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়তে হবে। আর বামপন্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। এই মুহূর্তে গণতন্ত্রের প্রধান শত্রুর নাম বিজেপি। বাংলা-সহ গোটা গেশে ভয়ঙ্কর এই সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবিলা করতে হবে।

বামপন্থীদের মাটির কাছাকাছি ফিরে যেতে হবে
সিপিআইএমএল লিবারেশেনর সম্পাদকের কথায়, বামপন্থীদের আবার মাটির কাছাকাছি ফিরে যেতে হবে। সংগঠনকে আরও পোক্ত করতে হবে সেজন্য। বামপন্থাকে শক্তিশালী না করতে পারলে বিজেপিকে ঠেকানো যাবে না। নতুন নতুন মুখ তুলে আনতে হবে। যেমনটা আমরা বিহারে করতে পেরেছি, সেটা বাংলাতেও করতে হবে।

তৃণমূল আর বিজেপিকে একই গোত্রে ফেললে হবে না
বিজেপিকে ঠেকাতে কি তৃণমূলের নেতৃত্বে জোট গড়া উচিত, সেই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বাম নেতাদের একটা ভুল হচ্ছে বাংলায়। সেই ভুলটা হল তৃণমূল আর বিজেপিকে তাঁরা একই গোত্রে ফেলে দিচ্ছে। কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপটে কি দুই পার্টিকে এক গোত্রে ফেলা যায়? ফেলা যায় না, আগে বিজেপির মোকাবিলা করতে না পারলে বামপন্থাই বিনষ্ট হয়ে যাবে।

তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক বিজেপির বিরোধিতায়
দীপঙ্করবাবু বলেন, বাংলার বিজেপি বিরোধী শক্তিদের এবার দেওয়াল লিখন পড়তে হবে সঠিক করে। আমি এখনও জোট করার কথা বলছি না। কিন্তু বাম নেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই তৃণমূলকে বিজেপির সঙ্গে একাসনে রেখে আক্রমণের পরিবর্তনে বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।

মমতার বিজেপি সংসর্গের ছুৎমার্গ ঝেড়ে ফেলতে হবে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বিজেপি বিরোধিতায় একের বিরুদ্ধে একের সওয়াল করেছেন। সেটা বামেদের পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব। কারণ আমরা নীতিগতভাবে তৃণমূলের বিরোধী। আবার এটাও ঠিক যে আমরা কংগ্রেসেরও বিরোধী। কিন্তু বিজেপিকে ঠেকানোই যখন উদ্দেশ্য, তখন মমতা কবে বিজেপির সঙ্গে জোট করেছেন, তা নিয়ে ছুৎমার্গ করা উচিত নয়।

বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা করছে কে! তাঁকেই সমর্থন
তাঁর কথায়, মানুষ আগে দেখবেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা করছে কে! তাঁকেই সমর্থন করবে বিজেপি বিরোধী গণতন্ত্রপ্রেমী ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি বিরোধিতা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হবে। বামেদের বিজেপি বিরোধিতা এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে যে, তা তৃণমূলের বিরোধিতার থেকেও শক্তিশালী হয়।

বিজেপিতে কেন আস্থা রাখছে মানুষ! বিহার ভোটের জয় উদযাপনে জানালেন মোদী