১০০ কোটি দিয়ে তৃণমূলের সাংসদ হয়েছিলেন কেডি সিং! বিস্ফোরক সিপিএম নেতা সেলিম আর কী বললেন
ইডির হেফাজতে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কেডি সিং (kd singh) । সেই কেডি সিংকে নিয়েই এবার রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসক বিজেপিকে নিশানা করলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহঃ সেলিম (md salim)। কলকাতা থেকে
ইডির হেফাজতে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কেডি সিং (kd singh) । সেই কেডি সিংকে নিয়েই এবার রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসক বিজেপিকে নিশানা করলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহঃ সেলিম (md salim)। কলকাতা থেকে দিল্লি লুটেররাজ কায়েম করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন সেলিম।
২১ কে পাখির চোখ করে বাংলায় আসছেন মোদী! বাংলার ভোটে নেতাজিই যখন হাতিয়ার
টাকার বিনিময়ে রাজ্যসভার সাংসদ
এদিন সিপিএম নেতা মহঃ সেলিম অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেস টাকার বিনিময়ে কেডি সিংকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল। রাজ্যসভার সাংসদ হতে কেডি সিং প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন সেলিম। রাজ্যসভায় কেডি সিং-এর নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একটা কলঙ্কিত অধ্যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলার মানুষ কেডি সিং-এর কাছ থেকে কোনও উপকার পায়নি বলেও দাবি করেছেন মহঃ সেলিম। টাকার হাত বদলের বিষয়টি অধুনা মুকুল রায় থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন বলেও ইঙ্গিত করেন তিনি। তৃণমূলের সাংসদ পরিচয়ে টাকা লুটের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যাতে তার পাশে দাঁড়ায় সেই চেষ্টা করে গিয়েছিলেন কেডি, অভিযোগ সেলিমের। রাজ্যে অ্যালকেমিস্ট প্রতারণা করলেও তৃণমূল সরকারের দৌলতেই কোনও এফআইআর নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তৃণমূলের তরফে কেডি সিংকে উত্তর ভারতে দলের বিস্তারের কাজেও লাগানো হয়েছিল। সেই সূত্রে ছাপানো গেঞ্জিতে কেডি সিং-এর পাশাপাশা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল বলে দাবি করেছেন মহঃ সেলিম। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম কুণাল ঘোষকে মিডিলম্যান বলেও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, চিটফান্ড, অ্যালকেমিস্ট নিয়ে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করলেও কোনও অদৃশ্য কারণে সেই খবর সম্প্রচার করেনি কোনও মিডিয়াই।
কেন্দ্রীয় বাজেটের লাঞ্চ স্পনসর করেছিল অ্যালকেমিস্ট
এদিন সেলিম বলেন, স্বর্গীয় অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন একবার বাজেটের দিন লাঞ্চ স্পনসর করেছিল কেডি সিং-এর সংস্থা অ্যালকেমিস্ট। যা নিয়ে তিনি অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখেছিলেন বলেও জানিয়েছেন। কেডি সিং-এর সংস্থাকে নিয়ে তিনি সেবি, ইডি, সিবিআই এবং মিনিস্ট্রি অফ কোম্পানি অ্যাফেসার্সেও চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই সময় অফিসারদের বদলি করা ছাড়া কোনও কাজ করা হয়নি। এক্ষেত্রে মোদী সরকারের পদক্ষেপ ছিল বর্তমান তৃণমূল সরকারের মতো। রাজনৈতিক স্বার্থে তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আর্থিক দুর্নীতিতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই বলে দাবি করেন তিনি।
সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেডি সিং
কেডি সিং-এর ব্যাপারে সব থেকে বেশি সরব ছিলেন তৎকালীন সিপিএম সাংসদ মহঃ সেলিম। সেই সময় কেডি সিং-এর তরফে তাঁর কাছে সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন সেলিম। এব্যাপারে এক তৃণমূল সাংসদ তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেলিম বলেন, কেডি সিং তাঁকে বলেছিলেন, তিনি (সেলিম) একটা করে চিঠি লেখেন আর তাঁকে (কেডি সিং) একটা করে টাকার প্যাকেট পৌঁছে দিতে হয়।
ইডির হেফাজতে কেডি সিং
১৩ জানুয়ারি ইডি গ্রেফতার করে কেডি সিংকে। ২০১৯ সাল থেকে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। অ্যালকেমিস্ট গ্রুপ এবং হাউসিং সোসাইটির মাধ্যমে তিনি আর্থিক প্রতারণ করেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১২ সাল পর্যটন্ত তিনি অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। অ্যালকেমিস্ট গ্রুপ চিটফান্ডের নামে প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। ২০১৯-এর জানুয়ারিতে তাঁর ২৩৯ কোটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
কেডি সিং-এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই
২০১৪ সালের এপ্রিলে তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছিলেন কেডি সিং। গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি তৃণমূলের তরফে সাংসদ ছিলেন। ইডির গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বর্তমানে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দমদদমের সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, কেডি সিং-এর সঙ্গে বর্তমানে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।