৪০ শতাংশ আসনেই তরুণ ব্রিগেড! বামেদের ‘প্রেস্টিজ ফাইটে’ মুখ হতে পারেন ঐশী, দীপ্সিতারা
৪০ শতাংশ আসনেই তরুণ ব্রিগেড! বামেদের ‘প্রেস্টিজ ফাইটে’ মুখ হতে পারেন ঐশী, দীপ্সিতারা
বেজে গিয়েছে নির্বাচনী দামামা। এদিকে দিন যত এগোচ্ছে ততই নির্বাচনী উত্তাপে তপ্ত হচ্ছে বাংলার মাটি। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এদিকে বিজেপি-তৃণমূল রেষারেষির মাঝে ইতিমধ্যেই নিজেদের ঘর গোছাতে মরিয়া বামেরাও। কংগ্রেস-আব্বাসের দলের সঙ্গে জোটের সমঝোতাও একেবারে শেষের পথে। তবে সূত্রে খবর, এবারের ভোটে তরুণ মুখেদের সামনে রেখেই নির্বাচনী লড়াইয়ে ঝাঁপাতে চলেছে সিপিআইএম।
৪০ থেকে ৫০ শতাংশ আসনে তরুণ মুখ ?
এদিকে আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, এবারের ভোটে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ আসনে জায়গা পেতে চলেছেন নবীন প্রজন্মের নেতা-নেত্রীরা। যাতে রয়েছেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই-র প্রথমসারির একাধিক মুখ। এছাড়াও গোটা রাজ্য থেকেই উঠে আসা নবীন প্রজন্মের একাধিক বাম নেতাকে এবারের নির্বাচনে মুখ করা হতে পারে বলে খবর। তাদের কাঁধে ভর করেই এবারের নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছে বঙ্গ সিপিআইএম।
প্রেস্টিজ ফাইটে জোরদার লড়াইয়ের প্রস্তুতি বামেদের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পালা বদলের নির্বাচন বা সহজ কথায় ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ছিল ৩৩.৪০ শতাংশ। কিন্তু পরবর্তীতে সময় যত এগিয়েছে ততই ধস নেমেছে বাম ভোট ব্যাঙ্কে। ২০১৬ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়েও বামেদের দখলে আসে মাত্র ২৬.৬ শতাংশ ভোট। এমনকী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তা আরও তলানিতে নেমে যায়। সেই সময় বামেদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ৭ শতাংশ।
‘ভুল শোধরাতেই’ মাঠে নামছে তরুণ ব্রিগেড ?
এদিকে সংসদীয় রাজনীতির ময়দানে ভোট ব্যাঙ্কের এই বেহাল অবস্থার জন্য বাম নেতৃত্বকেই কার্যত দীর্ঘদিন থেকে কাঠগড়ায় তুলে আসছিলেন তৃণমূল স্তরের কর্মীরা। যা নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছিল দলের অন্দরেই। বার্ধক্যের ভারে ধুঁকতে থাকা প্রবীণ নেতারা গদি কামড়ে পড়ে থাকার কারণেই বঙ্গ সিপিআইএম-র এই করুণ অবস্থা বলেও মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এমতাবস্থায় অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বা আরও সহজ করে বললে 'ভুল শোধরাতেই' এবার ঐশী ঘোষ, দীপ্সিতা ধরের মতো তরুণ প্রজন্মের নেতা-নেত্রীদের হাতে ভোটের হাল তুলে দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
কী বলছেন সূর্যকান্ত, সুজনরা ?
এমনকী নবীন ব্রিগেডকে মাঠে নামানোর ব্যাপারে কার্যত সবুজ সংকেতই দিয়েছেন সিপিআইএম-র রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। নতুন কাঁধে দায়িত্ব তুলে দিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন সুজনেরাও। এদিকে দলীয় সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে অনেক বিধায়কই দল ছেড়েছেন। এমনকী তৃণমূলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেই আবার যোগ দিয়েছেন পদ্ম শিবিরেও। আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর, ওই ফাঁকা আসনগুলিতেই ব্যাট করতে নামতে পারে তরুণ ব্রিগেড।
কোন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন দীপ্সিতা, ঐশী ?
সূত্রের খবর, দলের অন্দরে সংগ্রামী মুখ বলে পরিচিত দীপ্সিতা ধর দাঁড়াতে পারেন হাওড়ার কোনও একটি আসন থেকেই। এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি বামেদের নবান্ন অভিযানেও কার্যত সামনের সারিতেই দেখা গিয়েছিল দীপ্সিতাকে। যা ভোটে দাঁড় করানোর আগে বামেদের চেনা ছক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে জেএনইউউ-র লড়াকু নেত্রী ঐশী দাঁড়াতে পারেন দুর্গাপুর থেকে, খবর এমনটাই।
একনজরে ঐশীর বেড়ে ওঠা
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ঐশীর বাড়িও আবার দুর্গাপুরে। ঐশীর বাবা দেবাশিস ঘোষও অতীতে রাজ্যে একাধিক বাম আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। এদিকে ২০১৬ সালে জেএনইউ-এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন ঐশী। জেএনইউতে ভর্তি পর থেকেই কেন্দ্রের একাধিক জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে দেখা যায় এসএফআই-র এই প্রথমসারির নেত্রীকে। পরবর্তীতে জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের সভানেত্রী পদেও নির্বাচিত হন তিনি।
প্রার্থী হতে পারেন সৌরভ পালোধি, শ্রীলেখা ?
অন্যদিকে সূত্রের খবর, ঐশী, দীপ্সিতা ছাড়াও আসন্ন নির্বাচনে আরও একাধিক তরুণ তুর্কিকে দাঁড় করিয়ে বড়সড় চমক দিতে পারে সিপিআইএম। কারণ এবারের নির্বাচন বাম-কংগ্রেসের কাছে আদপে 'প্রেস্টিজ ফাইট' বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সূত্রের খবর, এবারের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সিপিআইএম প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। একইসঙ্গে প্রার্থী করা হতে পারে মীরাক্কেল খ্যাত তারকা সৌরভ পালোধিকেও।
বাংলার ভোটের আগেই অন্ধ্রপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোট কেন নজর কাড়ছে! কোন ফ্যাক্টরে লাইমলাইটে