For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

সব পুকুরেই নোটিস, কিন্তু ছাড় তৃণমূল কর্তার তিন শতাধিক বছরের পুরনো দিঘীকে, হরিনাভিতে বিতর্ক

সবার পুকুরেই নোটিস পড়়েছে। তাতে আবার পুকুর সংস্কার না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া কথা লেখা হয়েছে। এমন পুকুর মালিকরাও নোটিস পেয়েছেন যাদের তা সংস্কারের সামর্থ্যও নেই।

Google Oneindia Bengali News

সবার পুকুরেই কম বেশি নোটিস পড়়েছে। তাতে আবার লেখা হয়েছে পুকুর সংস্কার না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। এমন পুকুর মালিকরাও নোটিস পেয়েছেন যাদের তা সংস্কার করার বিন্দুমাত্র সামর্থ্যও নেই। অথচ, ব্যতিক্রম স্থানীয় তৃণমূল নেতার পারিবারিক দিঘী। যা তিনশত বছরেরও বেশি পুরনো। এই দিঘীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক ইতিহাস। এই ঘটনা সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে।

সব পুকুরেই নোটিস, কিন্তু ছাড় তৃণমূল কর্তার তিন শতাধিক বছরের পুরনো দিঘীকে, হরিনাভিতে বিতর্ক

দীর্ঘদিন ধরেই এই দিঘী নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন উঠেছে। এমন অভিযোগও সামনে এসেছে যে ছ'বিঘার এই দিঘীকে বুজিয়ে ফেলার জন্য সক্রিয় হয়েছে একটি গোষ্ঠী। যারা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। এলাকার সব পুকুর এবং ছোট-বড় যে কোনও জলাশয়ে নোটিস-বোর্ড পড়ল কিন্তু কেন বাইরে থেকে গেল ২২ নম্বর ওয়ায়র্ডে বিশাল দিঘীটি? এই প্রশ্নের উত্তরে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার আধিকারিক যিনি এই নোটিস দেওয়ার কাজটি করেছেন সেই প্রশান্ত সিংহরায় জানান, 'দিন কয়েক আগেই নোটিস-বোর্ডগুলো পাওয়া গিয়েছে। প্রথম অবস্থায় ১০টি নোটিস-বোর্ড এসেছে। আর সেগুলি ওয়ার্ডে থাকা পুরসভার দফতরগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা পেরেছেন তারা বোর্ড লাগিয়েছেন।' কিন্তু, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে যদি বোর্ড পাঠানো হয়ে থাকে তাহলে এতবড় দিঘীতে নোটিস-বোর্ড দেওয়াটা বাদ থেকে গেল কী করে? ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলার এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রশান্ত জানান, 'শিগগিরি আরও কিছু বোর্ড আসবে, তখন ওই দিঘীতেও তা দেওয়া হবে।' দেখা যাচ্ছে পুকুর ও জলাশয় সংস্কারের জন্য এই নোটিস জারি করা হয়েছে ১৩ মে। অথচ, যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তিনি জানাচ্ছেন দিন দুই আগে থেকে নোটিসগুলো লাগানো হয়েছে। তাহলে নোটিস জারির তারিখ ১৩ মে করা হল কেন? সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার আধিকারিক প্রশান্ত সিংহরায় এই নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি জানান, নতুন করে নোটিস-বোর্ড আসছে। অথচ ১৩ তারিখে নোটিস জারির সময়ে সংস্কারের জন্য মাত্র ১ মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এমনকী নোটিস-বোর্ডেও ১৩ মে-এর উপরে তা বড় বড় করে লিখেও দেওয়া হয়েছে। তাহলে যে সব পুকুর, দিঘী বা জলাশয়ে নোটিস পড়ল না তাদের ক্ষেত্রে কি এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে? তা নিয়েও কোনও সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। কার্যত মেজাজ হারিয়ে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার ওই আধিকারিক জানিয়ে দেন, 'যখন বোর্ড আসবে তখনই লাগানো হবে।'

সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার আধিকারিক এত সহজে নোটিস কেলেঙ্কারি থেকে রেহাই পেতে চাইলেও কিন্তু গুঞ্জন থামছে না। কারণ এই ঐতিহাসিক দিঘীকে নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চরমে উঠেছে। সাড়ে তিনশ বছর আগে হরিনাভি তে এক বিশাল কীর্তনের আসর বসেছিল। যেখান সারা রাজ্য থেকে কয়েক হাজার বিশিষ্ট গুণী-ব্যক্তি সমবেত হয়েছিলেন। সে সময় আদি গঙ্গার স্রোতও হরিনাভির পাড় ঘেঁষে বেরিয়ে যেত। আদি গঙ্গার জল অবশ্য পানের অযোগ্য ছিল। তাই তখন উদ্যোগ নিয়ে এই ছ'বিঘার দিঘীটি খোঁড়া হয়।

ঐতিহাসিক দিক থেকেই নয় দিঘীর আর্কিটেক্টও তাক লাগিয়েছিল সে সময়ে। বিশেষ করে ইংরেজরা এই দিঘীর পরিকল্পনা দেখে অবাক হয়েছিল। এর উদাহরণ বিভিন্ন গ্রন্থে আজও পাওয়া যায়। এই দিঘীর মাঝখান দিয়ে চৌকাকারে রাখা হয়েছিল মাটির দেওয়াল। আদি গঙ্গার তীরে হওয়ায় হরিনাভির মাটিতে বালুর আধিক্য বেশি। এর ফলে দিঘীর মাঝে থাকা চৌকাকার দেওয়ালটি ছাঁকুনির মতো কাজ করত। এলাকার বিভিন্ন খাল-নালা থেকে আসা জল জমা হত দিঘীর পাড় থেকে ওই মাটির দেওয়ালের মাঝে। এরপর তা প্রাকৃতিক ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ জল প্রবেশ করত দিঘীর মূল অংশে। এভাবেই কয়েক'শ বছর ধরে হরিনাভির একটা বিশাল অংশের পানীয় জলের সম্যা সমাধান করে দিয়েছিল এই দিঘী। কিন্তু, প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং দিঘীর মালিকদের আর্থিক দুর্বলতা ক্রমশই এত সুন্দর একটি প্রকল্পকে বেহাল করে দেয়। বর্তমানে আগাছা আর জঙ্গলে ভারে ধুঁকছে দিঘীটি। আজও বহু পরিযায়ী পাখীর ঠিকানা এই দিঘী। শীতকালে এই পরিযায়ী পাখীদের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়।

সব পুকুরেই নোটিস, কিন্তু ছাড় তৃণমূল কর্তার তিন শতাধিক বছরের পুরনো দিঘীকে, হরিনাভিতে বিতর্ক

দিঘীর বর্তমান মালিক সঞ্জীব সরকার এলাকায় প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। তাঁর দিদি শান্তা সরকার সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার সহকারী পৌরমাতা। সঞ্জীবের সঙ্গে খুব কাছের আত্মীয়তা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। দিঘীতে নোটিস না পড়ার পিছনে কি এই রাজনৈতিক প্রতিপত্তি কোনওভাবে কাজ করেছে? ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সঞ্জীব সরকার এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না বলে জানিয়ে দেন।

এলাকার মানুষের অভিযোগ, সম্প্রতি ওই দিঘীর পাড়ে একটি কংক্রিটের নির্মাণের ছাড়পত্রও দিয়ে দিয়েছে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা। একটা হেরিটেজ স্থানে কীভাবে পুরসভা নির্মাণের অনুমতি দিল? -তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। গত কয়েক বছর ধরে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা এলাকার ঐতিহাসিক সব স্থানের সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এই দিঘীটি সংস্কারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। বিশেষ সূত্রে এমনও দাবি করা হয়েছে, যখনই কোনওভাবে দিঘী সংস্কারের কথা উঠেছে তখনই কোনও না কোনও প্রভাবে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা দিঘী থেকে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার দূরত্ব খুব বেশি হলে ১ কিলোমিটার। এত কাছে থাকে ইতিহাস সমৃদ্ধ এই দিঘীর সংস্কারের জন্য নোটিস দিতে কী করে ভুলে গেলেন পুরসভার আধিকারিক প্রশান্ত সিংহরায়? প্রশ্ন কিন্তু উঠেছে। আর সেই প্রশ্নের উত্তর এখন খুঁজে বেড়াচ্ছে হরিনাভির মানুষ।

English summary
Controversy has raised over a notice debate in Harinabhi. Locals of this area are fearing that the historic pond of this area will be lost very soon.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X