'পেন ডাউন'-এ রাজ্যের কয়েক শ'কর্মচারি, মমতা জানেন তো
আইনি সহায়তা দেন এঁরা। কিন্তু এঁদের মাস মাইনে শুনলে চোখ কপালে উঠবে। এঁদের অধিকাংশেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা কম করেও স্নাতক। সরকার এক নির্দেশিকা দিলেও তাতে এরা বর্ধিত মাইনে পাওয়া থেকে বঞ্চিত।
নিয়োগ আছে। মাইনে আছে। কিন্তু সেই মাইনের কোনও বৃদ্ধি নেই। তার উপরে মাইনে ১০,০০০ টাকারও নিচে। যার জেরে মাগ্গি-গণ্ডার বাজারে বিপাকে রাজ্য সরকারের কয়েক শ'কর্মচারী। সাবডিভিশানাল লিগাল সার্ভিস কমিটির অধীনে থাকা এই কর্মীরা ৬ দফা দাবিতে শেষমেশ 'পেন-ডাউন' কর্মসূচিতে নেমেছে। বুধবার এই কর্মসূচি তিন দিনে পড়েছে। 'পেন-ডাউন' কর্মসূচিতে যাওয়া কর্মচারীদের অভিযোগ, তাঁদের অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগের চেষ্টা করছে না সাবডিভিশানাল লিগাল সার্ভিস কমিটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট লিগাল সার্ভিস অথরিটি।
সাধারণ মানুষকে সরকারি আইনি সহায়তা দিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট লিগাল সার্ভিস অথরিটি-র অধীনে স্টেট লিগাল সার্ভিস কমিটি-র আওতায় এই সব চুক্তিভিক্তিক এই সব কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিনামূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে আইনি সহায়তা সহজ করতে যৌথভাবে উদ্যোগী হয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্য। পরিকাঠামো গড়ার দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রের কাঁধে। আর কর্মী নিয়োগ এবং তাদের মাইনের বিষয়টি দেখে রাজ্য সরকার।
২০১৪ সালের মধ্যে স্টেট লিগাল অথরিটি কমিটি-অধীনে ডিস্ট্রিক্ট লিগাল সার্ভিস অথরিটি এবং সাবডিভিশানাল লিগাল সার্ভিস কমিটি-র অধীনে অন্তত ৩০০ লোককে চুক্তিতে নিয়োগ করা হয়। মূলত গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি ক্যাটিগরিতে এঁদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল। মাইনে দেওয়া হয় সাত হাজার টাকা করে।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকার নয়া নির্দেশিকা বের করে সমস্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের মাইনে এবং ছুটিতে বেশকিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে। জেলা ও মহকুমায় আইনি সহায়তা দেওয়া এই কর্মীদের অভিযোগ, ওই নির্দেশিকা মেনে তাঁদের ছুটি-র বিষয়টি পরিবর্তন করা হলেও নতুন স্কেলে তাঁরা মাইনে পাচ্ছেন না। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আইনি সহায়ক হিসাবে কাজ করা এই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের গ্রুপ-ডি-তে মাসে মাইনে হওয়ার কথা ছিল ১০,০০০ টাকা, আর গ্রুপ সি-তে মাসে মাইনে হওয়ার কথা ছিল ১১,৫০০ টাকা।
বহু আবেদন-নিবেদনেও নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী মাইনে না পাওয়ায় ২১ তারিখ থেকে 'পেন ডাউন' কর্মসূচি শুরু করে ডিএলসিএ এবং এসএলএসসি-র কর্মীরা। এর ফলে জেলা সদরে রোজ বসা লোক আদালতের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। জেলার লোকআদালত পরিচালনা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনকী, দুস্থ সাধারণ মানুষরা প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে আইনি সহায়কদের যৌথ সংগঠন 'ওয়েস্ট বেঙ্গল লিগাল সার্ভিসেস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েসন ' অনির্দিষ্টকালের 'পেন ডাউন' বা 'কর্মবিরতি'-র হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট লিগাল সার্ভিস অথরিটি।