তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে ভিতরে ভিতরে মহাজোট গড়ে উঠছে বাংলায়! বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ কংগ্রেসের
২০২১-এ ভোটে মূল লড়াই তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আরও একটা শক্তি প্রস্তুত হচ্ছে। তৃতীয় বিকল্প গড়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে মাত দিতে বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধেছে। কিন্তু এ তো জানা কথা, তাহলে নতুন কী? রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, শুধু বাম-কং নয় ভিতরে ভিতরে মহাজোট গড়ে উঠতে চলেছে তৃণমূল ও বিজেপিবিরোধী!

বাংলার মানুষ রায় দেবে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে
বাম-কংগ্রেস মনে করছে, তাদের জোট যদি সার্বিক হয়, তবে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়কে মাত দেবেন তাঁরাই। রাজ্যে সেইলকম ক্ষেত্র তৈরি হয়ে আছে। রাজ্যের মানুষ তৃণমূল ও বিজেপি উভয়ের উপরই বীতশ্রদ্ধ হয়ে রয়েছে। তাই দুই সরকারের বিরুদ্ধেই এবার বাংলার মানুষ রায় দেবেন। তাঁদেরই জয় হবে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে।

কোন যুক্তিতে বড়াই করছেন বাম-কংগ্রেসের নেতারা
কিন্তু কোন ম্যাজিকে তা সম্ভব? সাম্প্রতিককালের প্রায় প্রত্যেক নির্বাচনে দেখা গিয়েছে বাংলায় এখন লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপির। সেখানে বাম বা কংগ্রেস কেউই লড়াইয়ে নেই। আর সে অর্থে ত্রিমুখী লড়াইও দেখা যায়নি অধিকাংশ আসনে। তাহলে কোন যুক্তিতে এ কথা বড়াই করে জানাচ্ছেন বাম-কংগ্রেসের নেতারা?

একুশে বাংলার রাজনীতিতে পট পরিবর্তন হতে পারে
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, তৃণমূলে এখন ভাঙনের খাঁড়া ঝুলছে। অনেক নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক তৃণমূলে বিদ্রোহী হয়ে দেখা দিচ্ছেন। তাঁরা যে কোনওএ মুহূর্তে দল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন। একুশের নির্বাচনে বাংলার রাজনীতিতে পট পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি যা রাজ্যে পরিবর্তন হতে পারে তৃণমূল ভেঙেই!

ভাঙন-রোগেই একুশের আগে তৃণমূল ফিনিশ হতে পারে
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, ভাঙন-রোগেই একুশের আগে তৃণমূল ফিনিশ হয়ে যেতে পারে। ২০১৯ থেকে ২০২১-এর প্রেক্ষাপট কিন্তু সেই পথেই আবর্ত হচ্ছে। মুকুল রায়ই বলুন আর দিলীপ ঘোষ, কিংবা আবদুল মান্নান- সবার মুখেই একই বাণী শোনা যাচ্ছে তৃণমূল ভাঙনের। আর পরিস্থিতিও তেমনই শুভেন্দু অধিকারী থেকে বহু নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক বেঁকে বসেছে তৃণমূলে।

তৃণমূলের পথে হেঁটে কংগ্রেস স্বমহিমায় ফিরতে পারে
তৃণমূলের শতাধিক বিধায়ক দল ছাড়তে পারেন, তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে। বিজেপির মুকুল-দিলীপদের পাশাপাশি কংগ্রেসের আবদুল মান্নানও এমন দাবি করেছিলেন। তৃণমূল এককালে কংগ্রেসকে ভেঙে শক্তি বাড়িয়েছিল। এবার একই পথে হেঁটে কংগ্রেস স্বমহিমায় ফিরতে পারে বলে মতপ্রকাশ করেন মান্নানও। তিনি বলেছিলেন, আগামী জানুয়ারিতেই তৃণমূলের ১০০ বিধায়ক দল ছাড়বেন।

২০২১-এর আগে বিজেপির সঙ্গে লাইনে কংগ্রেসও
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কম তৃণমূলীকে ভাঙিয়ে আনেননি বিজেপির মুকুল-দিলীপরা। তৃণমূলের তাবড় নেতাদের ভাঙিয়ে এনে লোকসভা নির্বাচনে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। তাঁরাই সাংসদ নির্বাচিত হয়ে দিল্লি গিয়েছেন ঊনিশের লড়াইয়ে। ২০২১-এর আগেও তেমন জল্পনা তৈরি হয়েছে। এবার বিজেপির সঙ্গে লাইনে কংগ্রেসও।

যদি কোনও মঞ্চ গড়া যায়, তৃণমূল ভেঙে যাবে!
কংগ্রেস চাইছে মঞ্চ গড়ে ফায়দা তুলতে। কেননা মাস পাঁচেক আগে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে আবদুল মান্নান জানিয়েছিলেন এমনই এক বার্তা। তিনি জানিয়েছিলেন, তৃণমূলে ভাঙন অবশ্যম্ভাবী। অনেক তৃণমূল নেতাই উপযুক্ত বিরোধী অভাবে দল ছাড়তে পারছে না। তাঁদের অধিকাংশই বিজেপিতে যেতে নারাজ। তাই যদি কোনও মঞ্চ গড়া যায়, তৃণমূল ভেঙে অনেকেই মঞ্চে আসবেন।

বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের নিয়ে জোট আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে
তৃণমূল ভেঙে কংগ্রেস যদি কোনওভাবে শক্তি বাড়াতে পারে, তাহলে ২০২১-এর আগে একটা মহাজোট গড়ে উঠতে পারে। এমনিতেই বাম-কংগ্রেস জোট রয়েছে। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের নিয়ে সেই জোট যদি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে তাঁরা অক্লেশে তৃণমূল ও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। এবং তৃণমূলের এই বিরাট ভাঙনে কংগ্রেসকে আগের মতো শক্তিশালীও করে দিতে পারে।

শুভেন্দুর মতো ‘বিদ্রোহী’ নেতাকে আহ্বান জানিয়েছে কংগ্রেস
কিন্তু কংগ্রেস সে অর্থে কোনও প্রস্তুতি নেয়নি। এদিকে তৃণমূলে ভাঙনের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। শুভেন্দুর মতো ‘বিদ্রোহী' নেতাকে কংগ্রেস তো আহ্বান জানিয়েই রেখেছে। অধীর চৌধুরী নিজে শুভেন্দু অধিকারীর জন্য হাত বাড়িয়েছেন। শুভেন্দু এলে অনেক নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক ভিড়বেন। একইসঙ্গে আরও অনেকে তৃণমূলের প্রতি অসন্তুষ্ট। তাঁরাও আসবেন।

মিশন একুশে কংগ্রেস প্রাসঙ্গিক হবে তৃণমূলের বিদ্রোহীদের নিয়ে
বিজেপির মতোই কংগ্রেসের টার্গেট তৃণমূল ভেঙে নিজেদের শক্তি পুনরুদ্ধার করা। ভাঙনের ক্ষেত্র তৈরি আছে রাজ্যে। তৃণমূলের অসন্তোষ কাজে লাগিয়ে বিপুল সংখ্যক বিধায়ককে ভাঙিয়ে শক্তিশালী হতে চাইছে কংগ্রেসও। তাহলে মিশন ২০২১-এ কংগ্রেস প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারবে। আর পক্ষান্ততে তৃণমূলে বিদ্রোহীরাও সম্মানের জায়গা পাবেন।

ভোটের আগে তৎপর ইডি! নারদা কাণ্ডে নোটিশ মন্ত্রীসহ তৃণমূলের তিন 'প্রভাবশালী'কে