তৃণমূলে ভাঙন বাড়ছে, পঞ্চায়েতে ভোটের আগে কংগ্রেসে যোগদান হিড়িক মালদহ-মুর্শিদাবাদে
একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিদ্রোহী নেতাদের আখড়া হয়ে উঠেছিল বিজেপি। ফলে বিজেপি যে তৃণমূলের বিকল্প হয়ে উঠবে এমনটা মনে করেনি বাংলার মানুষ। ভোট পর্ব মেটার পরই তাই দেখা গিয়েছে বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে বাড়ছে বামেরা।
একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিদ্রোহী নেতাদের আখড়া হয়ে উঠেছিল বিজেপি। ফলে বিজেপি যে তৃণমূলের বিকল্প হয়ে উঠবে এমনটা মনে করেনি বাংলার মানুষ। ভোট পর্ব মেটার পরই তাই দেখা গিয়েছে বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে বাড়ছে বামেরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বামেদের পাশাপাশি বাড়ছে কংগ্রেসও।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বহু ক্ষেত্রে শাসক দলে ভাঙন ধরছে। কংগ্রেসি গড় বলে পরিচিত জেলাগুলিতে ফের তৃণমূল ভেঙে কংগ্রেসে ফিরছেন বহু নেতা। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি মালদহে তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে কংগ্রেস বাড়ছে। শাসক শিবিরকে ধাক্কা দিয়ে কংগ্রেসে ফিরেছেন মালদহের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী।
সম্প্রতি বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি ঝাঁপিয়ে পড়েছে সংগঠনকে শক্তপোক্ত করতে। জনসংযোগের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে নেমেছেন রাজনৈতিক নেতারা। সেখানেই দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসও বাড়ছে। তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন পাঁচ শতাধিক কর্মী। যখন দুর্নীতি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল, তাই বিক্ষুব্ধরা তাঁদের পুরনো দলে ফিরে আসছেন, আর বিজেপিতে বাসা বাঁধছেন না।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দু-নম্বর ব্লকের ইসলামপুরে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় শতাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মী যোগ দেন কংগ্রেসে। দলবদলুদের মধ্যে মধ্যে রয়েছেন বুথ সভাপতি, ব্লক কমিটির সদস্যরাও। এছাড়া রয়েছেন বিভিন্ন পদাধিকারীরা। কংগ্রেসে যোগদান করে তাঁরা বলেন, দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মধ্যে কোনও নিয়ম-শৃঙ্খলা নেই। এই দলে থেকে আর মানুষের জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। সেই কারণেই তাঁরা কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
অভিযোগ, তৃণমূলের উঁচুতলা থেকে নীচতুলা দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে, বিরোধী কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁচানো হচ্ছে। এসব মানুষ বেশিদিন সহ্য করবে না, সহ্য করছেও না। সব কিছু জবাব দেবে মানুষই। শুধু মালদহে নয়, কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক পড়েছে মুর্শিদাবাদে। এমনকী কংগ্রেস বাড়ছে নদিয়ার নবদ্বীপেও। ফলে কংগ্রেসে জোয়ার আসছে বেশ কিছু জেলায়।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস এই যোগদানকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের দাবি, তাঁরা মানুষের সরকার, মানুষের জন্য সারা বছর কাজ করে, উন্নয়ন করে। সেই উন্নয়নেরই জয় হবে। উন্নয়ন দেখেই মানুষ দু-হাত তুলে ভোট দেবে তৃণমূলকে। তাই পঞ্চায়েতে জয় নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না। মানুষের ভোটে তৃণমূলের জয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
যদিও কংগ্রেসের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে মানুষ কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলিতে। যোগদানকারীরাও বলছেন, তৃণমূল দুর্নীতিতে ছেয়ে গিয়েছে। শুধু নিয়োগ নিয়ে নয় বন্যাত্রাণ নিয়েও বড় রকমের দুর্নীতি হয়েছে। তাই সন্ত্রাস আর মিথ্যা দিয়ে আর জেতা যাবে না। আবার কংগ্রেসের সুদিন ফিরবে। জেলায় জেলায় জিতবে কংগ্রেস।